কেজি প্রতি ১০৮ টাকায় ডিও কাটছে পাইকাররা
শুভ্রজিৎ বড়ুয়া »
খুচরা পর্যায়ে চিনির দাম প্রতি কেজি ৩ টাকা কমিয়ে খোলা ১০৪ টাকা এবং প্যাকেটজাত ১০৯ টাকায় দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। কিন্তু ক্রেতাদের চিনি কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে। এ নিয়ে খুচরা পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে। এরপরও কমেনি দাম। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বাড়তি দামে চিনি কিনতে হচ্ছে।
গতকাল নগরের বিভিন্নস্থানে চিনির মূল্য যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায়, খুচরা দোকানে খোলা চিনি কেজিপ্রতি ১১২ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১১৩ টাকা বিক্রি হলেও মুদি দোকানে তা মিলছে না। কিছু অভিজাত এলাকায় প্যাকেটজাত চিনি মিললেও দাম ১২৫ থেকে ১৬০ টাকায়। খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার চিনির দাম নির্ধারণ করে দিলেও বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো সে অনুযায়ী দাম রাখছে না। পাইকারি পর্যায়ে ১০৮ টাকায় ডিও (ডেলিভারি অর্ডার) কাটতে হচ্ছে।
নগরের কাজির দেউড়ি বাজার এলাকার দোকানি মো. রাজ্জাক বলেন, ‘খাতুনগঞ্জ থেকে প্রতিবস্তা চিনি ৫ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে এক কেজি চিনির দাম ১০৯ টাকা। এরমধ্যে লোডিং খরচ কোম্পানি দিলেও আনলোডিং খরচ আমাদের। এভাবে যদি চিনি বিক্রি করি তাহলে আপনারাই বলেন, কত টাকায় আমরা বিক্রি করতে পারি।
নগরের কর্নেলহাট বাজারের দোকানি অনুব্রত দে বলেন, ‘নতুন রেটে কোম্পানি ডিও কাটছে না। আমাদের পাইকারিতে বিক্রি করতে হচ্ছে ১০৯ টাকায় আর খুচরায় বিক্রি করতে হচ্ছে ১১০ টাকায়। আমরা ছাড়া পাড়া-মহল্লার দোকানিরা বিক্রি করছে ১১২ থেকে ১১৩ টাকায়। সরকারি দামে বিক্রি করার জন্য কোম্পানিগুলোকে মনিটরিংয়ে রাখতে হবে। না হয়, আমাদের জরিমানা করুক আর যাই করুক কম দামে বিক্রি করা সম্ভব হবে না।’
এ প্রসঙ্গে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘সরকার চিনির দাম নির্ধারণ করে দিলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা তা মানছেন না। এ চিত্র নতুন কিছু নয়। এজন্য প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।’
এ নিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘বাজার দর স্বাভাবিক রাখতে আমরা প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করছি। তবে কোম্পানি পর্যায়ে দাম বেশি রাখার ব্যাপারে আমাদের জানা ছিল না। আমরা বিষয়টি দেখছি।’
আজ (সোমবার) কোম্পানি ও পাইকারি পর্যায়ে অভিযান পরিচালনার আশ্বাস দিয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘চিনির ডিও বেশি মূল্যে কাটার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি আগামীকালই (সোমবার) মোবাইল কোর্ট চালাবো। সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে, সেই দাম বিক্রেতা ও ভোক্তার লাভের কথা চিন্তা করেই করা হয়েছে। এর বাইরে কারও যাওয়ার সুযোগ নেই।’