নিজস্ব প্রতিবেদক »
বহু জল্পনা-কল্পনার পর নগরের আউটার রিং রোডের পশ্চিমে প্রতীকী মূল্যে ৫০০ দশমিক ৭ একর সরকারি খাস জমি বরাদ্দ পেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। অগ্রাধিকারভিত্তিক এ প্রকল্পের জন্য প্রতীকী মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে তিন কোটি তিন টাকা। এ জায়গা বরাদ্দ পাওয়ায় বে-টার্মিনালে একই সঙ্গে ৩৫ থেকে ৫০টি জাহাজ ভিড়তে পারবে বলে জানান বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, দক্ষিণ কাট্টলী মৌজার ৬২ দশমিক ২২৫২ একর, উত্তর হালিশহর মৌজার ৩৩৯ দশমিক ২৬৭৫ একর এবং হালিশহর মৌজায় ৯৯ দশমিক ২১৩৬ একর খাস জমি রয়েছে। এই তিনটি মৌজায় ৫০০ দশমিক ৭০ একর জমির বিপরীতে পৃথক তিন চালানে এক কোটি এক টাকা করে তিন কোটি ৩ টাকা পরিশোধ করতে হবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে (চবক)। সরকার নির্ধারিত ফি জমা দেওয়ার জন্য গতকাল (বৃহস্পতিবার) চবককে চিঠি দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। চিঠিতে পৃথক তিনটি চালানে নির্ধারিত ফি বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) পান্না আকতার বলেন, ‘বে-টার্মিনালের জন্য ৫০০ একর সরকারি খাস জমি প্রতীকী মূল্যে দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত দেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে তিন মৌজায় এসব জমির জন্য নির্ধারিত এক কোটি এক টাকা করে তিন কোটি তিন টাকা পৃথক তিন চালানে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
একই প্রসঙ্গে কথা হলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-ব্যবস্থাপক (এস্টেট) মুহাম্মদ শিহাব উদ্দিন বলেন, ‘বে-টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য প্রতীকী মূল্যে ৫০০ একর জমি জেলা প্রশাসন থেকে দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্ত পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে সরকার নির্ধারিত মূল্য জমা দেওয়া জন্য জেলা প্রশাসন থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে এসব মূল্য চালান মূলে বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেওয়া হবে বলে।’
এ বিষয়ে চবকের বে-টার্মিনাল প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘এ প্রকল্পটি হলে চট্টগ্রাম বন্দর একটা মাইলফলক স্থাপন করবে। এটিতে সবসময় ১২ মিটার ড্রাফট (পানির ভেতরে থাকা জাহাজের অংশ) এবং যে কোনো দৈর্ঘ্যরে জাহাজ এখানে ভেড়ানো যাবে। জোয়ারের সময় আরও দুই-তিন মিটার ড্রাফট বাড়তে পারে। একই সঙ্গে ৩৫ থেকে ৫০টি জাহাজ ভিড়তে পারবে। এতে বর্তমান পোর্টে যেসব জটিলতা রয়েছে, তা প্রায় নিরসন হয়ে যাবে। ফলে চট্টগ্রাম বন্দরের জট কমবে, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ব্যয় কমবে, গতি বাড়বে।’
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে নগরের পতেঙ্গা ও হালিশহর সমুদ্র উপকূলভাগে বিস্তীর্ণ ভূমি এবং সাগরঘেঁষে বে-টার্মিনাল নির্মাণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১৬ সাল থেকে ভূমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। এরমধ্যে প্রকল্পের প্রায় জায়গা ভরাট করে ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রকল্পটির উদ্বোধন করেছিলেন।