নিজস্ব প্রতিবেদক »
আগামীর বন্দর বে টার্মিনাল দেখলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। শুধু দেখলেন না, নিজের অজানা অনেক কিছু জেনেও নিলেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি কোনো বক্তব্য প্রদান করেননি।
আগামীতে হয়তো এই জানার মাধ্যমে বে টার্মিনালের কাজের গতি আরো এগিয়ে যাবে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টায় তিনি বে টার্মিনাল এলাকা পরিদর্শন করেন। বাইনোকুলার দিয়ে সাড়ে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ বে টার্মিনাল এবং আউটার রিং রোড প্রান্ত থেকে সাগর পর্যন্ত এলাকাও পর্যবেক্ষণ করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ হাইড্রোগ্রাফার আরিফুর রহমান ও ডেপুটি ম্যানেজার (এস্টেট) জিল্লুর রহমান এবং নির্বাহী প্রকৌশলী রাফিউল আলম বে টার্মিনাল নিয়ে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন। আর তাদের উপস্থাপনের সময় বিভিন্ন প্রশ্ন করে প্রকল্প সম্পর্কে নিজেকে সমৃদ্ধ করেন মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।
এর আগে স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান। তিনি বলেন, বে টার্মিনাল নিয়ে সরকার খুবই আন্তরিক। ইতিমধ্যে একটি টার্মিনাল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নির্মাণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী ২০২৪ সালের মধ্যে তা বাস্তবায়নে কার্যক্রম চলছে। ইতিমধ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিয়েছে। দরপত্র যাচাই বাছাই শেষে একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হবে।
এদিকে প্রকল্পের আয়তন ও বাজেট কতো? চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তহবিলে এই প্রকল্প বাবদ কি পরিমাণ অর্থ রয়েছে এ ধরনের অনেক তথ্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস জানতে চান বলে জানা গেছে। এর আগে গত মাসে বে টার্মিনাল পরিদর্শনে এসে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ২০২৪ সালে অপারেশন কার্যক্রম শুরু করবে বে টার্মিনাল। তিনটি টার্মিনালের একটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বাকি দুটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে বিদেশি প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন করবে।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সাথে বে টার্মিনাল পরিদর্শনের সময় ছিলেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুলতান আবদুল হামিদ, যুগ্ম সচিব রফিকুল ইসলাম খান, উপ-সচিব মনিরুজ্জামান মিয়া, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকলপনা) জাফর আলম, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ কাট্টলী রাসমনি ঘাট থেকে চট্টগ্রাম ইপিজেডের পেছনে সাগর পাড়ে সাড়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় গড়ে উঠবে বে টার্মিনাল। ২ হাজার ৫০০ একর ভূমিতে গড়ে উঠতে যাওয়া এই টার্মিনালের প্রথম দফায় ৬৮ একর ভূমি বরাদ্দ পাওয়ার পর দ্বিতীয় দফায় আরো ৮০৩ একর বরাদ্দ পাচ্ছে। জোয়ার-ভাটা, দিন-রাত, বাঁকা চ্যানেল কিংবা ড্রাফটের বিবেচনা কর্ণফুলী নদীর জেটিতে ভিড়লেও বে-টার্মিনালের ক্ষেত্রে সেই সীমাবদ্ধতা নেই। বর্তমানে কর্ণফুলী নদীর জেটিতে পৌঁছাতে একটি জাহাজকে ১৫ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। কিন্তু বে টার্মিনাল নির্মাণ করা হলে তা শূন্য কিলোমিটারের মধ্যেই বার্থিং করতে পারবে। বে টার্মিনাল নির্মাণ হলে যেকোনো দৈর্ঘ্য ও প্রায় ১২ মিটার ড্রাফটের জাহাজ এখানে ভিড়তে পারবে। এখানে ২৪ ঘণ্টা জাহাজ পরিচালনা করা যাবে। বিদ্যমান পোর্ট জেটিতে একসাথে ১৬টি জাহাজ বার্থিং করা গেলেও বে টার্মিনালে গড়ে প্রায় ৫০টি জাহাজ একইসাথে বার্থিং করা যাবে। এজন্য এই টার্মিনালকে আগামীর বন্দর বলা হয়ে থাকে। এটি সরকারের ফার্স্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতাধীন একটি প্রকল্প।