নিজস্ব প্রতিবেদক »
নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত লাখো মানুষের ঢল দেখে অভিভূত হন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘গোটা চট্টগ্রাম আজ মিছিলের নগর। মহাসমুদ্র। কর্ণফুলীর সব ঢেউ আজ পলোগ্রাউন্ডে। বঙ্গোপসাগরের সব ঢেউ আজ পলোগ্রাউন্ডে।’
রোববার দুপুর ৩টার দিকে পলোগ্রাউন্ড মাঠে কয়েক লাখ মানুষের সামনে জনসমাগম ও ভিড় দেখে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির নেতাদের পলোগ্রাউন্ডের জনসমাগম দেখে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির আট সমাবেশের চেয়ে বেশি লোক হয়েছে আজকে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডের সভায়। জনসমুদ্র তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ফখরুল দেখে যান। আমীর খসরু, নোমান সাহেব দেখে যান।’
আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সারা চট্টগ্রাম জুড়ে মিছিল আর মিছিল। ফখরুল খেলা হবে, হবে খেলা।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘বীর চট্টগ্রাম প্রস্তুত। খেলা হবে।’ সমবেত মানুষ চিৎকার করে ওবায়দুল কাদেরকে সমর্থন জানান।
এ সময় তিনি আরও বলেন, যদি তত্ত্বাবধায়কের ভূত মাথায় থাকে, মাথা থেকে নামিয়ে ফেলুন। হবে না। হবে না। হবে না।’
গণতন্ত্র বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফখরুল বলেছে সরকারের ঘুম নষ্ট হয়েছে। না, সরকারের ঘুম নষ্ট হয়নি। সরকার রাত জাগছে মানুষকে বাঁচানোর জন্য, গরিবকে বাঁচানোর জন্য। শেখ হাসিনা সারারাত জেগে থাকেন বাংলার মানুষকে বাঁচানোর জন্য। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। বাংলাদেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। বাংলাদেশে গত ৪৭ বছরে ইতিহাসের সবচেয়ে সৎ রাজনীতিকের নাম শেখ হাসিনা। ৪৭ বছরে জনপ্রিয় নেতা হচ্ছেন শেখ হাসিনা, সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসকের নাম শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর পর সবচেয়ে সাহসী ঠিকানা শেখ হাসিনা, সফল কূটনীতিকের নাম শেখ হাসিনা।’
টাকার বস্তা নিয়ে বিএনপি সমাবেশ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পরিবহন নেতারা বলেছেন কোনো ধর্মঘট করবে না। এরপরও এক সপ্তাহ আগে থেকে কাঁথা, বালিশ, কম্বল, লোটা, মশার কয়েল ও তাঁবু টাঙিয়ে তারা শুয়ে আছেন। এই শীতের রাতে এখন টাকার ঢাকা। দুবাইয়ে টাকা, বিদেশের টাকা, লন্ডনের টাকা ফখরুলের কাছে আসে। টাকার বস্তা নিয়ে তিনি সমাবেশ করতে যান। রাজশাহীর সমাবেশ দেখেছি, সেখানে কত লোক হয়েছে? তরঙ্গ না ঢেউ। যা হবে বড় জোড় ১০ হাজার মানুষ হবে। এটা হলো বিএনপি।’
নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জনসভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাসহ সংগঠনটির চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার ঊর্ধ্বতন নেতারা অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনটির চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন ও দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান এ জনসভা সঞ্চালনা করেন।
বিএনপি ১০ ডিসেম্বরের বিএনপির সমাবেশ আয়োজন প্রসঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক বলেন, ‘বিএনপি ১০ ডিসেম্বর সামনে রেখে যে তর্জন গর্জন দিচ্ছেন। সোজা বলে দিতে চাই, কোনো শান্তি বিঘœ হলে তার পরিণতি ভালো হবে না। সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল কিন্তু বাঁকা করা হবে।’
সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের নেত্রী, বাংলার নেত্রী শেখ হাসিনা ১০ বছর পর চট্টগ্রামে এসেছেন। আমরা আজ আনন্দে উচ্ছ্বসিত। গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের জন্য অনেক কাজ করেছেন। এই ঋণ কখনো শোধ করতে পারব না।’
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বের কারণে চট্টগ্রাম আজ বদলে গেছে। গত ১৪ বছরে লাখ কোটি টাকার বেশি চট্টগ্রামে উন্নয়ন হয়েছে। আজ খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না। আজ খালি গায়ে মানুষ দেখা যায় না। এটা ওপর থেকে উড়ে আসেনি। এটা শেখ হাসিনার জাদুর কারণে হয়েছে। ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। ১০ তারিখ এই ঢাকার বুকে তারা আত্মসমর্পণ করবে।’