সুপ্রভাত ডেস্ক :
ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ আর উলুধ্বনিতে মুখর প্রতিমা বিসর্জনের ঘাট। ষষ্ঠী থেকে মহানবমী পেরিয়ে বিজয়া দশমী।
এদিন বছর ঘুরে আবারও আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদায় নিলেন দেবী দুর্গা। শেষ হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। খবর : বাংলানিউজ’র
গতকাল সোমবার রাজধানীর বুড়িগঙ্গার ওয়াইজঘাটের বীণাস্মৃতি স্নানঘাটে দেবী দুর্গার জয়ধ্বনি, ঢাক-ঢোল, কাঁসর ও ঘণ্টা বাজিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়। এ সময় অনেক ভক্তের চোখে জল আসে, সৃষ্টি হয় হৃদয় বিদারক দৃশ্যের। আবার অনেকেই ক্ষণটিকে সুন্দর করে কাটাতে নেচে-গেয়ে আনন্দ করেছেন।
দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন স্থানের পূজাম-প থেকে প্রতিমাগুলো একে একে আসতে শুরু করে। তবে করোনা পরিস্থিতির জন্য এ বছর হয়নি কোনো শোভাযাত্রা। শুধু বিসর্জনের জন্য যাদের প্রয়োজন, তারাই আসেন প্রতিমার সঙ্গে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে প্রতিমা বিসর্জন। এতে সহায়তা করে স্থানীয় ঘাট প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড। ফলে বিভিন্ন সাবধানতা অবলম্বন এবং সবার সহযোগিতায় কোনো ধরনের গোলযোগ ও বিশৃঙ্খলা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন।
ওয়াইজঘাট ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। বিশেষ করে করোনার জন্য এবার নিজস্ব ঘটে বিসর্জনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতিমা ঘাটে নেওয়ার পর ভক্তরা শেষবারের মতো ধূপধুনো নিয়ে আরতি শেষে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীকে নৌকায় তুলে বিসর্জন দেয় ভক্তরা।
তবে আগামী বছর আরও সুন্দর একটি উৎসব নিয়ে দেবী দুর্গা মর্ত্যে আসবেন এটাই প্রত্যাশা সবার।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জী বলেন, এ বছর করোনা পরিস্থিতির জন্য পূজা উৎসবকে আনুষ্ঠানিকভাবেই বাদ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য আহ্বান করা হয়েছে সব ম-পে। আমরা অত্যন্ত খুশি যে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা এটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। আশা করছি, আগামী বছর আমরা আরও ভালোভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজার আয়োজন করতে পারবো।
এর আগে চ-ীপাঠ, বোধন ও দেবীর অধিবাসের মধ্য দিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয় দুর্গাপূজা। এবার দেবী এসেছেন দোলায়, যাবেন গজে (হাতি) চড়ে। করোনা মহামারির কারণে সংক্রমণ এড়াতে এ বছর ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়।
এ বছর সারাদেশে ৩০ হাজার ২২৩টি ম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। গত বছর সারাদেশে দুর্গাপূজার ম-পের সংখ্যা ছিল ৩১ হাজার ৩৯৮টি। গত বছরের তুলনায় এবার এক হাজার ১৭৫টি ম-পে পূজা কম হয়েছে।