চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, যৌক্তিক আন্দোলন রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। অযৌক্তিক ইস্যুতে আন্দোলনের নামে অরাজকতা ও নাশকতা এবং জান-মালের ক্ষতি সাধন করে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করা হলে কাউকে ন্যুনতম ছাড় দেয়া হবে না। অতীতে বিএনপি-জামাত অগ্নি সন্ত্রাস চালিয়েছে। সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। তারা যদি আবার একই পথ বেছে নেয় আওয়ামী লীগ বসে থাকবে না। জনগণকে সাথে নিয়ে পাল্টা আঘাত হানবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আনিকা কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা বিরোধী জামাত ও যুদ্ধাপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও পুনবার্সন করেছে। একই পথে চলেছেন এরশাদ ও খালেদা জিয়া। এরা স্বপ্ন দেখেছিলেন এদেশ আবার পাকিস্তান হবে। এরা দেশপ্রেম বিবর্জিত ঘৃণ্য অপশক্তি। এরা বিষধর সাপ, যখন-তখন ফণা তুলে ছোবল দিতে পারে। তাই আগে-ভাগে এদের বিনাশ করতে হবে এবং এই কাজটিই দেশপ্রেমিক শক্তিকে করতেই হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস বাঙালি জাতিসত্তা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ভাষা ও স্বাধীন রাষ্ট্র চিন্তার বিকাশের ইতিহাসের সাথে নিবিড় ভাবে যুক্ত। তাই বাঙালি, বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ এক ও অভিন্ন। এই সত্যটি যারা অস্বীকার করে তারা পরজীবী পরগাছা। বাংলার উর্বর মাটিতে এই পরগাছারাই সকল অপকর্ম, হত্যা, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের মূল হোতা।
তিনি দেশ-বিদেশের মানবাধিকার সংগঠনের উদ্দেশ্যে বলেন, এসব সংগঠন ও কথিত সুশীল সমাজ কথায় কথায় বাংলাদেশে মানবাধিকার গেল বলে মায়াকান্না করেন। তারা কি জানেন না ২০০১ সালে নির্বাচনের পর বিএনপি-জামাত জোট সরকারের তা-ব ও বর্বরতার কথা? তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আবার যেন ২০০১ সালের পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা যাকেই নৌকা প্রতীক দেবেন তাঁকে বিজয়ী করা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।
আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি ঢালাওভাবে মিথ্যাচার করে চলেছে এমনকি উদ্দেশ্যমূলকভাবে গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। সরকার সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন হবে সাংবিধানিক উপায়ে সেভাবেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমরা চাইবো সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হউক। কিন্তু কাউকে জোর করে নির্বাচনে টেনে আনা সম্ভব নয়। কে আসুক না আসুক বড় কথা নয়, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হবে। ইউক্রেন-রুশ যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক মন্দা ও জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে তাতে সারা বিশ্বের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। বাংলাদেশেও সাধারণ মানুষরা কষ্ট পাচ্ছে। তবে এই সংকট সাময়িক। মানুষের এই দুঃখ কষ্ট লাঘবে আমাদের তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং প্রত্যেকের সাথে সুখ দুঃখের ভাগিদার হতে হবে। এভাবেই দলের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়ানো সম্ভব।
চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুল হক রঞ্জুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বাচ্চু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, জোবাইরা নার্গিস খান, শহীদুল আলম, জাফর আলম চৌধুরী, চকবাজার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাব উদ্দীন আহমেদ।
এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সেলিম রহমান, ইমরান বিপ্লব, রফিকুল ইসলাম, নাফিজ ইমতিয়াজ সানজু, নিজাম উদ্দীন, এরশাদ রনি।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সুনীল কুমার সরকার, উপদেষ্টা সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবু তাহের, নির্বাহী সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, আবদুল লতিফ টিপু, হাজী বেলাল আহমদ, মোর্শেদা আক্তার চৌধুরী, থানা আওয়ামী লীগের আনছারুল হক, রেজাউল করিম কায়সার প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি