সংবাদ সম্মেলনে রানা দাশগুপ্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে বিপ্লবীদের স্মৃতি রক্ষার্থে দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত ও নেলি সেনগুপ্তের ঐতিহাসিক ভবনটিকে (শিশুপার্ক স্কুল) জাদুঘর করা হোক।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে রহমতগঞ্জ এলাকায় ‘ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত ও নেলি সেনগুপ্তের ঐতিহাসিক ভবন ভাঙার প্রতিবাদে’ সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, যখন চট্টগ্রাম আদালত ভবন ভাঙার চক্রান্ত হয়েছিল তখন চট্টগ্রামের সচেতন নাগরিকদের নিয়ে আমরা সে চক্রান্তকে প্রতিরোধ করেছি। সিআরবি, পুরাতন রেল স্টেশনকে ভাঙারও চক্রান্ত হয়েছিল। সে সময় বিরোধিতা করেছি এবং তা যৌক্তিক ছিল বলে এসব ভবন ও স্থাপনা রক্ষা পেয়েছে। এই ভবনটিও রক্ষা এবং সংরক্ষণে এগিয়ে আসার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান। তিনি বলেন, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত ও নেলি সেনগুপ্তের ঐতিহাসিক ভবনটি নিয়ে যে সমস্ত দলিল সৃজন করা হয়েছে তা দেশের ঐতিহ্য কৃষ্টি রক্ষার স্বার্থে বাতিল ঘোষণা, চট্টগ্রাম জেলা যুগ্ম জজ প্রথম আদালত থেকে প্রদত্ত আদেশ এবং উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন ও ভূমি অফিসকে না জানিয়ে সরকারি অর্পিত সম্পত্তি দখল করতে পুলিশি তৎপরতার যথাযথ তদন্ত, অর্পিত সম্পত্তিটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে হস্তান্তর করে ঐতিহাসিক ভবনটি অক্ষত রেখে বহুতল ভবন তৈরি করে ব্রিটিশ আন্দোলন স্মৃতি জাদুঘর ও গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলা এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে পরিচালনা করার দাবি জানাচ্ছি ।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ২৪ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘বিশেষ শৈল্পিক কিংবা ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ বা তাৎপর্যমণ্ডিত স্মৃতি নিদর্শন বস্তু বা স্থানসমূহকে বিকৃতি, বিনাশ বা অপসারণ হতে রক্ষা করিবার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’ এ ভবনটিও ঐতিহাসিক ও স্মৃতিমণ্ডিত যা সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষা দেওয়া আছে। ভবনটি রক্ষায় প্রয়োজন হলেই আমরা মামলার দিকে যাব। তিনি আরো বলেন, এটির সব দিক দিয়ে সুরক্ষা দেওয়া রাষ্ট্র ও নাগরিকদের কর্তব্য। এটি রক্ষায় রাষ্ট্র যে উদাসীনতা প্রদর্শন করেছে সচেতন নাগরিক হিসেবে তা রক্ষার জন্য আমরা আমাদের কর্তব্য পালন করছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী পরিমল চন্দ দে, অশোক সাহা, শৈবাল দাশ সুমনসহ চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের সদস্যবৃন্দ।
উল্লেখ্য, গত সোমবার নগরের কোতোয়ালী থানার রহমতগঞ্জের বাংলা কলেজ এলাকার যাত্রামোহন সেনগুপ্তের ঐতিহাসিক বাড়িটি (বর্তমান শিশুপার্ক স্কুল) আদালতের আদেশের কথা বলে এম ফরিদ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি ও তার লোকেরা ভাঙতে গেলে অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তের প্রতিরোধে ভবনটি ভাঙা থেকে রক্ষা পায়। পরে জনগণের প্রতিরোধের মুখে জেলা প্রশাসন এসে বাড়িটি সিলগালা করে দেয়।