পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজে আধুনিক রিফ্লেকটিভ গ্লাস উৎপাদন শুরু
বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে গ্লাস উৎপাদন শিল্পে। দেশে এ প্রথম উৎপাদন শুরু হয়েছে আধুনিক রিফ্লেকটিভ গ্লাসের। যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হবে বিদেশেও। বিশ্বখ্যাত ’স্পাটারিং কোটিং টেকনোলজি’ ব্যবহার করে পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড এই রিফ্লেকটিভ গ্লাস উৎপাদন শুরু করেছে। সাধারনত উন্নতবিশ্বে এই আধুনিক ও উন্নত টেকনোলোজি ব্যবহার করে গ্লাস উৎপাদন করা হয়। এটিকে প্রতিফলিত গ্লাসও বলা হয়। এই গ্লাস লাগানোর ফলে বিল্ডিংকে আয়নার মত দেখায় ও বিল্ডিং এর সৌন্দর্য অনেকাংশ বেশি বৃদ্ধি পায়। ভবনের ওজনও কমে যায়।
জানা যায়, এই গ্লাস মুলত ব্যবহার করা হয় ঘরকে রোদের তীব্রতা থেকে রক্ষা করে পর্যাপ্ত আলোর জন্য। অর্থাৎ রোদের প্রখরতা প্রতিহত করে ঘরে পর্যাপ্ত আলো প্রবেশ করবে এবং সুর্যের বিকিরণ হ্রাস করবে। এটি উত্তাপ ও শীততাপ নিয়ন্ত্রনের ব্যয় হ্রাস করে, এ কারনে এটি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। যে সমস্ত দেশে গ্রীস্মকালে সুর্যের প্রখরতা বেশি ও প্রচন্ড গরম পরে অর্থাৎ তাপমাত্রা বেশী, সে সমস্ত দেশে এই রিফ্লেকটিভ গ্লাস ব্যবহার করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে বাংলাদেশের তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ মুহুর্তে দেশে এই গ্লাসের চাহিদা রয়েছে প্রচুর।
দেশে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের পথিকৃৎ সদ্য একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী ও শিল্পপতি পিএইচপি ফ্যামিলির কর্ণধার সূফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। সূফি মিজানের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস নির্মাণ কর্মযজ্ঞে নেতৃত্ব দেন তাঁর যোগ্য উত্তরসুরি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আমির হোসেন।
এ ব্যাপক কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোহাম্মদ আমির হোসেন বলেন, ২০০৫ সালে দেশের মাটিতে প্রথম উৎপাদন হয় ফ্লোট গ্লাস, যার গর্বিত অংশিদার পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এর আগে ভাল মানের গ্লাস পেতে হলে আমদানি নির্ভরতা ছাড়া কোন উপায় ছিলনা। পিএইচপি ফ্লোট গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ দেশে প্রথম বিশ্বমানের ফ্লোটিং পদ্ধতিতে গ্লাস উপাদন করে বাজারজাত শুরু করে এবং এর ফলশ্রুতিতে বিদেশ থেকে গ্লাস আমদানি করার হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়।তিনি আরো বলেন, এই ফ্যাক্টরির উৎপাদন কার্যক্রম ৩৬৫ দিন চলমান থাকে। এখানে ১ সেকেন্ডের জন্যও ফ্যাক্টরি বন্ধ রাখার কোন সুযোগ নেই। ‘দেয়ার ইজ নো টুমরো’ অর্থাৎ এখানে যে কোন সমস্যাই হোক তা তাৎক্ষণিকভাবেই সমাধান করতে হবে, দুই ঘন্টা পরে করব বা আগামীকাল করব এ কথা বলার কোন অবকাশ নেই।
আমির হোসেন এর দক্ষ ব্যবস্থাপনায় দৈনিক ২০০৫ সাল থেকে ১৫০ মেট্রিক টন ফ্লোট গ্লাস উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে টানা ১২ বছর ১০ মাস ২ দিনের অব্যাহত অপারেশন্স পরিচালিত হয় এবং পরবর্তিতে নতুন চুল্লিতে ২০১৯ সালে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে দৈনিক ১৫০ মেট্রিক টন থেকে ৩০০ মেট্রিক টন ফ্লোট গ্লাস উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়ে সফলভাবে এখন আরও উন্নত মানের কাঁচ দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহ করছে। এতে করে প্রতি মাসে ৫০ কোটি টাকারও বেশী আমদানীর বিকল্প উৎপাদন সুবিধা পাচ্ছে আমাদের দেশ।
পিএইচপি সূত্র জানায়, বিগত প্রায় ১৫ মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে সাধারণ ফ্লোট গ্লাস এর পাশাপাশি সম্প্রতি রিফ্লেকটিভ গ্লাস উৎপাদন শুরু করলো এই প্রতিষ্ঠান। পি.এইচ.পি এই ‘স্পাটারিং কোটিং টেকনোলজি’তে মোট ১০টি কালার রিফ্লেকটিভ গ্লাস উৎপাদন করা হচ্ছে। যেমনঃ ডার্ক-ব্লু, ওশান-ব্লু, ডার্ক-গ্রীণ, ডার্ক-গ্রে, গোল্ডেন, পার্পল, পিংক, ব্রোঞ্জ ও সিলভার রিফ্লেকটিভ গ্লাস উৎপাদন করছে। এই ‘স্পাটারিং কোটিং টেকনোলজি’কে সহযোগিতা করার জন্য খুবই অত্যাধুনিক ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট সংযোজন করা হয়েছে।
এছাড়াও আগামীতে একটি নতুন ধরনের কোটিং গ্লাস পিএইচপি উৎপাদন করবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আমির হোসেন,যেটাকে প্রাইভেসি গ্লাস নাম করণ করা হবে।