বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের ত্রুটি মেরামত ও গড় বিল সমাধান করুন : সুজন

 

সঞ্চালন লাইনের ত্রুটি মেরামত, গড় বিল সমাধান এবং গ্রাহক ভোগান্তি নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

তিনি আজ ১৪ জুলাই (মঙ্গলবার) বেলা সাড়ে ১২টায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামছুল আলমকে ফোন করে এ আহ্বান জানান।

এ সময় সুজন বলেন, বিদ্যুৎ হচ্ছে সভ্যতার লাইফ লাইন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একক নেতৃত্বে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় জনগণের দৌড়গোড়ায় বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি গ্রাহকের ভুতুড়ে বিল সমন্বয় নিয়ে ত্বড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

অনেক বাধা-বিপত্তির বিরুদ্ধে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাহসী নেতৃত্বে বিদ্যুৎ উৎপাদন এগিয়ে যাচ্ছে। সে ধারা অব্যাহত রেখে জনগণকে কাক্সিক্ষত সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের সকল স্তরের কর্মকতা এবং কর্মচারীদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, হঠাৎ নগরজুড়ে লোডশেডিং, ট্রীপ এবং শাটডাউনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। যে কারণে জনগণের দুর্ভোগ বেড়েছে। তাছাড়া সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি, গড় বিল এবং লো ভোল্টেজের কারণেও গ্রাহকগণ কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছে। ঘনঘন বিদ্যুতের যাওয়া আসায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এর ফলে গ্রাহকের মূল্যবান জিনিসপত্রও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তবে গ্রাহকের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ নিউমুরিং বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের বিরুদ্ধে। এ অফিসের আওতাধীন গ্রাহকগণ সীমাহীন ভোগান্তিতে রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, একটুখানি বৃষ্টি পড়ার সাথে সাথেই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বিদ্যুতের দেখা পাচ্ছে না গ্রাহকরা। এছাড়া নতুন মিটার সংযোগ, মিটার নষ্ট হলে মিটার প্রাপ্তিতে ভোগান্তি, গ্রাহকদের অযথা হয়রানি এবং গ্রাহকদের সাথে দুর্ব্যবহার এ অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া হালিশহর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের ব্যাপক অনিয়মেও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ গ্রাহকরা। এখানকার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিমাসে ভুতুড়ে রিডিং দিয়ে গ্রাহকদের হয়রানি করছে। বিভিন্নস্থানে মিটার ছাড়াই অবৈধ সংযোগ দিয়ে বাড়তি টাকা আদায় করছে। আর সঞ্চালন লাইনের ট্রীপের কারণেও গ্রাহক ভোগান্তিতে রয়েছে। এসব বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করলে প্রতিকার না করে উল্টো গ্রাহককে নানাভাবে হয়রানি করছে। এর ফলে যে কোনো সময় জনবিস্ফোরণ হতে পারে বলেও আশংকা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি দ্রুততার সাথে এসব সমস্যা সমাধান করে গ্রাহক ভোগান্তি শুন্যের কোটায় নিয়ে আসার জন্য প্রধান প্রকৌশলীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন। তা নাহলে গ্রাহকের অভিযোগ প্রতিকারে বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

বিউবোর প্রধান প্রকৌশলী মো. শামছুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ আমরা সবাই হচ্ছি জনগণের সেবক। সে লক্ষ্যে আমাদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর একক পদক্ষেপের কারণে সারা দেশজুড়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। যার কারণে একদিকে যেমন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে এবং অন্যদিকে জনগণও নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছে। বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের আগে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইনগুলো ছিলো অনেক পুরানো। সাবস্টেশন ছিল অপ্রতুল। প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে গ্রাহক ভোগান্তি হতো। বর্তমানে বিদ্যুৎ অফিসের সে রকম কোনো সমস্যা নেই। তবে লাইনের ট্রীপের কারণে কিছু কিছু বিতরণ বিভাগের গ্রাহকগণ দুর্ভোগে আছেন। আমরা প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিতরণ বিভাগে লাইনের মেরামত এবং ত্রুটি নিরসনে কাজ করছি।

তিনি অভিযোগগুলো নিয়ে স্ব-স্ব বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীদের সাথে আলোচনা করে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। এছাড়া কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি গ্রাহকদের অযথা হয়রানি করে তার বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।

গ্রাহকদের যে কোনো সমস্যায় সরাসরি তার দপ্তরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান তিনি। বিজ্ঞপ্তি