সুপ্রভাত ডেস্ক :
ভারত নিজেদের বলে দাবি করছে, এমন বিতর্কিত ভূখণ্ড কালাপানি আর লিপুলেখকে নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেপালের সরকার।
নেপালের মন্ত্রিসভার একটি বৈঠকের পর সরকারের মুখপাত্র ও অর্থমন্ত্রী ইউভরাজ খাটিওয়াদা জানিয়েছেন যে অনতিবিলম্বে নতুন এই মানচিত্র কার্যকর হবে।
খাটিওয়াদা বলেন, নতুন এই মানচিত্র স্কুল-কলেজের বইপত্রে, সরকারি প্রতীকে এবং অফিস-আদালতের সব কাগজপত্রে এখন থেকেই ব্যবহার করা হবে।
তিনি জানিয়েছেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা সমবায় এবং দারিদ্র বিমোচন বিষয়ক মন্ত্রী পদ্মা আরিয়াল নতুন এই মানচিত্রের প্রস্তাব করেন এবং মন্ত্রিসভা এ ব্যাপারে তাদের সম্মতি দিয়েছে।
বিবিসি’র নেপালী সার্ভিস জানাচ্ছে, ভারতের দিক থেকে নেয়া সাম্প্রতিক তিনটি পদক্ষেপ নেপাল সরকারের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
গত বছর ভারত নতুন একটি রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করে যেখানে এই বিতর্কিত ভূমি দু’টি তাদের অংশে অন্তর্ভুক্ত হিসেবে দেখানো হয়।
গত ৮ই মার্চ ভারতীয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডের পিথাউরাগড়-লিপুলেখের মধ্যে একটি লিংক রোডের উদ্বোধন করেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
পরবর্তীতে ভারতের চীফ অব আর্মি স্টাফ মনোজ নারাভানে মন্তব্য করেছিলেন যে ওই লিংক রোডের ব্যাপারে নেপাল সরকারের আপত্তি এসেছে ‘অন্য কারো নির্দেশে’।
যখন রাজনাথ সিং ওই সড়কের উদ্বোধন করেন, তখন নেপাল কাঠমান্ডুতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তাদের আপত্তির বিষয়টি উল্লেখ করে একটি কূটনৈতিক নোট দেয়।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে বলেছে, তারা নিজেদের ভূখণ্ডেই সড়কটি নির্মাণ করছে।
নেপাল ও ভারতের মধ্যে ১৬ হাজার কিলোমিটারের বেশি খোলা সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।
বিরোধের কেন্দ্রে থাকা ভূখণ্ডগুলোর মধ্যে কালাপানি, লিপুলেখ এবং সুস্তা অন্যতম।
বেশ অনেকদিন ধরে এসব ইস্যুতে আলোচনা করে যাচ্ছে নেপাল এবং ভারত। প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনায় দেশ দুটো সম্মত হয়েছে যে সীমান্তের এসব সমস্যা সচিবদের বৈঠকে সমাধান করা হবে – যদিও সে রকম কোন বৈঠক এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়নি।
বর্তমান বিতর্ক হচ্ছে কালাপানি, লিপুলেখ এবং লিম্পিয়াধাউরা নিয়ে। নেপালের উত্তর-পশ্চিম অংশে এগুলো অবস্থিত – যার দক্ষিণে ভারতের কুমায়ুন এবং উত্তরে চীনের তিব্বত।
এই ভূখণ্ডটি ভারত, নেপাল ও চীন – তিন দেশের একটি সংযোগস্থল, যাকে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।