সাধন সরকার :
উদ্ভিদ
বন্ধুরা, উদ্ভিদ সম্পর্কে বলার আগে জীব সম্পর্কে দু’একটি কথা বলা যাক। মানুষ, পশুপাখি, গাছপালা, গরু, ছাগল, পশুপাখি, কীটপতঙ্গ এমন অনেক কিছুই যা চলাফেরা করতে পারে, খাদ্য গ্রহণ করতে পারে, শ^াস-প্রশ^াস নিতে পারে, শরীরের বৃদ্ধি হয়, বংশবৃদ্ধি (নিজের মতো নতুন জীবের জন্ম) করতে পারে তাই জীব। এই জীব দু ধরনের। উদ্ভিদ ও প্রাণি। বন্ধুরা ঝোপঝাড়ের লতাপাতা, সব ধরনের ফুল গাছ, লাউ, কুমড়া, পুঁইশাক, ধান, সরিষা, মরিচ ছোট-বড় সব ধরনের গাছ-ই উদ্ভিদ। উদ্ভিদের অর্থাৎ গাছের মূল, কা-, শাখা-প্রশাখা ইত্যাদি থাকে। উদ্ভিদ তথা গাছ মূলের সাহায্যে মাটির সাথে আটকে থাকে। ইতিমধ্যে তোমরা হয়তো উদ্ভিদ সম্পর্কে বুঝতে পেরেছ। গাছ কিন্তু প্রাণিদের (মানুষ, গরু, ছাগল, পাখি ইত্যাদি) মতো এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলাচল করতে পারে না, দেখতে পায় না, শুনতে পায় না, ঘ্রাণ নিতে পারে না, আবার সরাসরি খাদ্য গ্রহণ করতেও পারে না। তবে উদ্ভিদ শিকড়ের মাধ্যমে মাটি থেকে পানি, সূর্যের আলো ও আমাদের ছেড়ে দেওয়া কার্বন ডাই-অক্সাইডের মিলিত প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি করে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তো বটেই আমাদের চারপাশে অসংখ্য উদ্ভিদ রয়েছে। বন্ধুরা, আমরা কিন্তু উদ্ভিদ থেকে খাদ্য পেয়ে থাকি। ফুল, কা- ও আকার অনুযায়ী উদ্ভিদ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। অনেক উদ্ভিদে ফুল ও ফল হয়, আবার অনেক উদ্ভিদে হয় না। যে সব উদ্ভিদে ফুল হয় তাদেরকে সপুষ্পক উদ্ভিদ বলে। যেমন: আম, কাঁঠাল, গোলাপ ও কলা গাছ ইত্যাদি। আর যে সব উদ্ভিদে ফুল হয় না তাদেরকে অপুষ্পক উদ্ভিদ বলে।
যেমন : ঢেঁকিশাক ইত্যাদি। সবচেয়ে ছোট যে উদ্ভিদ বা গাছ তাদেরকে বিরুৎ শ্রেণির গাছ বা উদ্ভিদ বলে। এদের মধ্যে রয়েছে; লাউ, কুমড়া, পুঁইশাক, ধান, সরিষা, মরিচ ইত্যাদি। এসব উদ্ভিদের শিকড় মাটির খুব গভীরে যায় না, কা- বেশ নরম হয়ে থাকে। বিরুৎ উদ্ভিদের চেয়ে বড় ধরনের উদ্ভিদ হলো গুল্ম। গুল্ম উদ্ভিদের কা-ের গোড়ার কাছ থেকে শাখা-প্রশাখা বের হয়। এদের মধ্যে রয়েছে গোলাপ, জবা, রঙ্গন ইত্যাদি মাঝারি ধরনের মতো গাছ। বড় গাছের মতো এদের কা- মোটা ও দীর্ঘ নয়। এসব গাছের শিকড় মাটির খুব গভীরে যায় না। গুল্ম উদ্ভিদের চেয়ে বড় তথা সবচেয়ে বড় উদ্ভিদকেই বৃক্ষ বলা হয়।
যেমন : মেহগনি, আম, নারিকেল গাছ ইত্যাদি। এসব গাছের শেকড় মাটির গভীরে যায়। এসব উদ্ভিদের কা- মোটা, শক্ত ও দীর্ঘ হয়। উদ্ভিদ তথা গাছ ছাড়া আমাদের বেঁচে থাকা অসম্ভব। কেননা আমাদের বেঁচে থাকার শ^াস-প্রশ^াসের জন্য যে অক্সিজেন পেয়ে থাকি তা গাছ থেকেই আসে। আমাদের জাতীয় গাছ বা বৃক্ষ হলো আম গাছ। বন্ধুরা, আমরা যত বেশি গাছ লাগাব তত বেশি সুস্থ থাকতে পারব, আমাদের পৃথিবী তত বেশি সবুজ ও সুন্দর হবে।
উত্তর গোলার্ধ
বন্ধুরা, সমগ্র বাংলাদেশকে একটি কাগজের এক পৃষ্ঠায় অঙ্কন করে একটি নির্দিষ্ট মাপে যেমন কল্পনা করে থাকি ঠিক তেমনি সমগ্র পৃথিবীকেও একটি নির্দিষ্ট গোলক বা কাগজে কল্পনা করে থাকি। এই গোলাকার পৃথিবীর দুটি মেরু আছে। উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু। এই দুই মেরুর দুই দিক হতে সমান দূরত্বে পৃথিবীর ঠিক মাঝ বরাবর স্থানে পূর্ব-পশ্চিমে বেষ্টনকারী (সোজা দাগ) কাল্পনিক রেখাকে নিরক্ষরেখা বা বিষুবরেখা বলে। এই রেখার মান শূন্য(০) ডিগ্রি। এই নিরক্ষরেখাই পৃথিবীকে সমান দুইভাগে ভাগ করেছে। নিরক্ষরেখার উপরের দিকে অর্থাৎ উত্তর দিকের অংশকে উত্তর গোলার্ধ (পৃথিবীর অর্ধেক) এবং নিচের দিকের অংশকে অর্থাৎ দক্ষিণ দিকের অংশকে দক্ষিণ গোলার্ধ(পৃথিবীর অর্ধেক) বলা হয়।
এই উত্তর গোলার্ধে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরে অবস্থিত বিন্দু উত্তর মেরু, যা ৯০ অক্ষাংশে অবস্থিত। উত্তর গোলার্ধের অন্য নাম সুমেরু মেরু।