দেশে উৎপাদিত ও আমদানিকৃত পণ্যের মান যাচাইয়ের জন্য গড়ে তোলা হয় বাংলাদেশ স্টান্ডার্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট বা বিএসটিআই। ভোক্তাদের কাছে ভেজাল ও নকলহীন পণ্য পৌঁছে দেওয়াই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কাজ।
বিএসটিআই-এর অনুমোদন ছাড়াই চট্টগ্রামে খাদ্যপণ্য প্রস্তুত ও বাজারজাত করে আসছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনার কথা থাকলেও তেমন কোনো তদারকি নেই সংস্থাটির। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ভেজাল খাদ্যের উৎপাদন ও বেচাকেনা। এই পরিস্থিতির কারণ হলো সংস্থাটির চট্টগ্রাম অফিসে অভিযান পরিচালনার জন্য কোনো ম্যাজিস্ট্রেট নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, চট্টগ্রামের বাজার ভেজালের কারখানা হলেও ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া আমরা অসহায়। নিজেদের কোনো ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে পারছি না। অন্যদিকে অভিযানের জন্য আমাদের জেলা প্রশাসনকে শিডিউল জানাতে হয়। এরপর সেখান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অ্যাসাইন করার পর অভিযান চালাতে হয়।
এ বিষয়ে প্রচুর লেখালিখি হয়েছে। ক্রেতা ও কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর পক্ষ থেকে দাবি পেশ করা হলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
অবশেষে বিএসটিআই মহাপরিচালক এস এম ফেরদৌস আলম এই অসুবিধা দূর করার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ঢাকায় আমাদের তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট আছেন। চট্টগ্রামে কোন ম্যাজিস্ট্রেট নেই। চট্টগ্রামে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হবে। বাজার কার্যক্রম তদারকি করার ব্যবস্থা করা হবে। সার্ভিলেন্স টিমের অভিযানগুলো আরো বাড়ানো হবে।রবিবার স্থানীয় শিল্প উদ্যোক্তা ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এবং কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ কথাও বলেন, ঢাকা রাজধানী হলেও চট্টগ্রাম সবদিক থেকে অন্যতম। বন্দরের কারণে চট্টগ্রামের স্থান আলাদা। দেশের সব জায়গা থেকে সকল কাজে ঢাকায় যাওয়া হয়। আর আমদানি- রপ্তানির প্রায় পুরোটা হয় চট্টগ্রাম থেকে। এই চট্টগ্রামে বিএসটিআইয়ের পূর্ণাঙ্গ ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে।
সেবা পেতে কোন ধরনের হয়রানির শিকার হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানানোর আহ্বান জানিয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক বলেন, বিএসটিআই কর্মকর্তারা নাকে খত দিয়ে চাকরি নিয়েছেন, সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে। নাগরিক সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের হয়রানি করা চলবে না। যদি সেবা দিতে না পারেন তাহলে চাকরি ছেড়ে দেন।
ক্যাবের দাবির সঙ্গে সহমত জানিয়ে আমরাও বলতে চাই, খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি অবৈধ ও নিম্নমানের ইলেকট্রিক পণ্য, পোট্রোল পাম্প, ওজনে কারচুপি ও কসমেটিক সামগ্রীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিয়মিত বাজার তদারিক ও বিএসটিআই’র নবনির্মিত ভবনে প্রধান কার্যালয়ের ন্যায় সকল পণ্যের পরীক্ষণের সুবিধা সৃষ্টি করা হোক।