সুপ্রভাত ডেস্ক »
বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময় জোটটির ‘আগুন সন্ত্রাসে’ একেকটি জীবনের সঙ্গে স্বপ্ন পুড়ে শেষ হয়েছে মন্তব্য করে দেশের মানুষকে সেই ‘সন্ত্রাসের’ কথা ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রোববার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৩-১৪ সালের বিএনপি জামায়াতের দেশজুড়ে আগুন সন্ত্রাসের কথা যেন কেউ ভুলে না যায়। যারা আগুনে পুড়েছে কি অবস্থা তাদের? এক একজনের জীবনে কত স্বপ্ন ছিল, কত আকাঙ্ক্ষা ছিল, সেই আকাঙ্ক্ষাগুলো একে একে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে, একে একে পুড়ে সব ধ্বংস।’ ‘আমি শুধু দেশবাসীকে এটুকুই বলব ওই দুঃসময়ের কথা যেন কেউ ভুলে না যায়।’
‘অগ্নি সন্ত্রাসের আর্তনাদ: বিএনপি-জামাতের অগ্নি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের খ-চিত্র’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন সরকারপ্রধান।
ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার খালি একটাই আহ্বান থাকবে দেশবাসীর কাছে, কেউ রাজনীতি করতে চাইলে সুষ্ঠ রাজনীতি করুক আমাদের আপত্তি নাই। কিন্তু আমার এই সাধারণ মানুষের গায়ে কেউ হাত দিলে তাদের রক্ষা নাই, তাদের রক্ষা নাই; এটা সহ্য করা যায় না, কোনো মানুষ সহ্য করতে পারে না।’
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেজন্য দেশবাসীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ তিনি বলেন, ‘এটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। আজকে বিচার- এদের নিজেদের বিচার নিজেদেরই হচ্ছে। বিচার হবেই, বিচার এটা বোধহয় আল্লাহর তরফ থেকেই হবে। বিচার হচ্ছে অনেকে শাস্তি পাচ্ছে, ভবিষ্যতেও পাবে।’
এমন ধ্বংসাত্মক কাজের যারা হুকুমদাতা তাদের পাশে মানুষ কীভাবে দাঁড়ায়, কীভাবে সমর্থন করে, সেই প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
দলমত নির্বিশেষে দেশের সব মানুষের স্বাধীনভাবে বাঁচার ও জীবিকা নির্বাহ করার অধিকার সংরক্ষণ করা সরকারের দায়িত্ব জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার সেই দায়িত্ব পালনে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘সরকার উৎখাতের নামে বিএনপি-জামায়াত তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালায় ২০০১ সালে এবং ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালে বারবার।’
ওই জোটের আন্দোলন প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, একটা গাড়িতে করে যাওয়া জীবন্ত মানুষগুলোকে কীভাবে আগুন ধরিয়ে হত্যা করা হয়। কীভাবে মানুষ এভাবে মানুষের ক্ষতি করতে পারে? এটাই নাকি আন্দোলন। এই আন্দোলন তো আমরা কখনও দেখিনি…।
‘আমরা তো কখনই স্বপ্নেও ভাবিনি পেট্রোল বোমা দিয়ে অথবা অগ্নিসংযোগ করে সাধারণ মানুষকে হত্যা করে সেটা আন্দোলন করা হবে। বিএনপি ঘোষণা দিল অবরোধ হরতাল কিন্তু কাজ হল মানুষ হত্যা করা।’
তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালেই তো প্রায় তিন হাজার ৬০০ জনকে পেট্রোল বোমা মেরে তারা আহত করেছে, ১৪-১৫ তেও করেছে।’
তিনি বিএনপি-জামায়াতের হাতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতন, বাড়ি দখল, গ্রেফতারের ঘটনা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে ২০১৩-১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের ‘আন্দোলনের’ সময় অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত ও আহতদের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী নিহতদের স্বজন ও আহতদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তাদের কথা শোনেন ও সমবেদনা জানান।
অনুষ্ঠানে সেসব স্বজন ও অগ্নিদগ্ধদের কেউ কেউ স্মৃতিচারণ করেন। ওই সময়ের হামলার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে বিচার দাবি করেন তারা।
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ওই সময়ের ‘আন্দোলন’ এবং আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত যানবাহনসহ বিভিন্ন ঘটনার ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।