বাহারি অর্কিডে রঙিন বৃক্ষমেলা

হুমাইরা তাজরিন »

বৃক্ষমেলার শোভা বাড়ায় বাহারি ও সুগন্ধি ফুলের গাছ। ফুলের নানা রঙ, সুগন্ধি দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে। চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ আয়োজিত ১৫ দিনব্যাপী বৃক্ষমেলায় তেমনই শোভা বাড়িয়ে চলেছে বাহারি অর্কিড।

বৃক্ষমেলা ঘুরে দেখা যায়, পুরো মেলজুড়ে রঙিন ফুলের সংখ্যা কম। তাছাড়া উর্পযুপরি বৃষ্টিতে চারাগাছগুলোর নাজেহাল অবস্থা। আবার ফুলের চেয়ে যেন ফলের গাছের সংখ্যাই বেশি। কিন্তু এর মধ্য থেকেও নিজের রঙ এবং গঠন বৈচিত্র্যের বিশেষত্বে দর্শনার্থীদের মন ভোলাচ্ছে অর্কিড। ঝুলন্ত টবের মাটিতে রোপণ করা এসব রঙ বেরঙের অর্কিড সহজেই বহনযোগ্য বলে এবারের বৃক্ষমেলায় এই গাছের বিশেষ চাহিদা লক্ষ্য করা গেছে।

বাসা-বাড়ির সৌন্দর্য বর্ধনে এই অর্কিড অন্যতম পছন্দ। এসব অর্কিডের মধ্যে রয়েছে নানা রঙের নানা গড়নের ফুল। যেমন: ভ্যান্ডা, সিম্বেডিয়াম, সিলজিনি নিডাটা, ডেনড্রোবিয়াম সোনিয়া, ভেরিগেট সোনিয়া, মোকারা ক্যারোল পিংক, মোকারা ইয়োলো, মোকারা রেড। এসব অর্কিডের টবসহ গাছের দাম হাঁকা হচ্ছে ৭শ’থেকে ১৭শ’ টাকা পর্যন্ত। টব ছাড়া ছোট্ট চারাগাছের দাম হাঁকা হচ্ছে ৩শ’ ৫০ থেকে ৭শ’ ৫০ টাকা পর্যন্ত। বাংলাদেশ নার্সারিসহ কয়েকটি নার্সারিতে এই অর্কিডের বিশেষ সংগ্রহ দেখা যায়। যদিও দেশে এ বছরের তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে অতীতের রেকর্ড। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে মানুষ। বনভূমি উজার, বৃক্ষ নিধনের বিষয়ে বার বার প্রশ্ন উঠেছে। বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয় অনুভব করেছেন কম বেশি সকলে। নগরীর সিআরবির পুরোনো গাছগুলোকে কেটে ফেলার বিষয়েও সোচ্চার হয়েছেন সচেতন সমাজ। চট্টগ্রামে ২৩ লাখ বৃক্ষরোপণের পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু পক্ষকালব্যাপী আয়োজিত ফল ফুল ঔষধি গাছে সমৃদ্ধ ৭০টি স্টলের বৃক্ষমেলায় পাওয়া যায়নি নগরবাসীর আশানুরূপ সাড়া। নার্সারির বিক্রেতারা বলছেন অতিবৃষ্টি, বন্যা, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এবারের মেলায় আশানুরূপ সাড়া তারা পাননি।

অর্কিড কিনতে এসে সিদরাতুল মুনতাহা নামের একজন বলেন, ‘অর্কিড আমার খুব পছন্দের ফুল। বেলকনিতে গ্রিলের সাথে এই লতানো ফুলগুলো বেশ সুন্দর দেখায়। যখনই ফুলগুলো দেখি মনে একটা বিশেষ ভালো লাগা কাজ করে। তবে অর্কিড গাছ সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। মেলায় পেলাম। দামটা একটু বেশি হলেও শখের জিনিস কিনে নিলাম।’

নাঈম উদ্দিন নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ‘ফুলগুলো সুন্দর তবে দামটা বেশি। কয়েকটা কেনার ইচ্ছে থাকলেও নিলাম মাত্র একটা। আমি চেষ্টা করছি বাড়িতে অর্কিডের বাগান করতে। ফুলচাষিরা এই ফুলটাকে বেশি বেশি চাষ করে বাংলাদেশে সহজলভ্য করলে আমার মতো অর্কিড প্রেমীরা সহজে কিনতে পারবে।’

মোহাম্মদ সুমন নামে মেলায় নার্সারির একজন বিক্রেতা বলেন, ‘এবারের মেলায় আশানুরূপ সাড়া আমরা পাচ্ছি না। কেননা ঝড়, বৃষ্টি, বন্যার কারণে মানুষজন ঘর থেকে বের হয়নি। যতটুকু বিক্রয় হয়েছে তার মধ্যে অর্কিড ফুলগুলোর বিশেষ চাহিদা লক্ষ্য করা গেছে। অর্কিড চাষ এবং পরির্চযার বিশেষ নিয়ম অনুসরণ করতে হয় বলে এগুলোর দাম অন্যান্য ফুলের তুলনায় বেশি। এখন মেলা প্রায় শেষের দিকে। আগামী মেলাতে অর্কিডের সংগ্রহ বাড়ানোর ইচ্ছে আছে।