মনিরুল ইসলাম হিরু
গলা থেকে গামছা খুলে ঘর্মাক্ত মুখম-ল মুছতে লাগলেন রহিম মিয়া। দুপুর গড়িয়ে এখন বিকেলের শুরু। ফজরের আজান শুনে ঘুম থেকে ওঠে নামাজ পড়ে দিনের কাজ শুরু হয়ে, সারাটি দিন ব্যস্ততায় কিভাবে সময় কেটে যায় খেয়ালই থাকেনা রহিম মিয়ার। আসরের নামাজের পরে, দিনের এই সময়টাতে কিছুটা বিশ্রাম করার সুযোগ পায়। সারাটি দিনে এই সময়টাতেই বউ আর মেয়েটার কথা মনের মাঝে উঁকি মারে। তার বউ চানবানু কেমন আছে? মেয়ে জোছনা কেমন আছে? তারা কি করছে এখন? মেয়েটা না জানি কত বড় হয়েছে? মেয়েটা ঠিক মতো লেখাপড়া করছে কিনা? মরুর বুকে ছোট্ট একটা ঝুপড়িঘরের খেঁজুর পাতার দেয়ালে হেলান দিয়ে এইসব ভাবতে থাকে রহিম মিয়া।
খাসিয়াপাড়া গ্রামের দরিদ্র পিতার সন্তান রহিম মিয়া। মা-বাবা, তিন বোন আর রহিম মিয়া এই মিলে সংসার। রহিম মিয়া পরিবারে বড় সন্তান। পরিবারের সহায়-সম্বল বলতে ছোট্ট একটি ভিটে আর ভিটে সংলগ্ন একটু করে ফসলি জমি। ফসলি জমিটিও বছরের বড় একটা সময় ধরে অনাবাদি থাকে। ছয়জনের এই সংসারে অভাব-অনটন নিত্যসঙ্গী, আধপেটা খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়। বাবা-মা আর বোনদের ক্ষুধার যন্ত্রণা হিম মিয়াকে বড় কষ্ট দেয়। নিজের অন্তরে কিছু একটা করার তাগাদা অনুভব করে। গ্রামের মানুষের কাছে জানতে পারে পাশের গ্রাম অভয় পাড়ায় রুস্তম ফরাজী নামে এক দালাল বাস করে। রুস্তম ফরাজী টাকার বিনিময়ে আরব দেশে লোক পাঠায়। রহিম মিয়া ভেবে দেখে তার আরব দেশে যাওয়া উচিত, এতে করে তার পরিবার যদি সুখের মুখ দেখে? একদিন সকাল বেলা রহিম মিয়া অভয়পাড়া গ্রামে খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে যায় রুস্তম ফরাজীকে। রুস্তমের সাথে আরব দেশে যাওয়ার ব্যাপারে কথা বলে।
– রুস্তম ভাই, আমি আরব দেশে যেতে চাই।
রুস্তম রহিম মিয়ার মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখে নিয়ে বলে, যাইতে চাও যাই বা হেইডা কোন ব্যাপার না। কিন্তু মেলা টেকা লাগবো মিয়া, খরচ দিতে পারবা তো?
– কত টেকা লাগবো রুস্তম ভাই?
– এই ধরো লাখ তিনেক তো লাগবোই।
-তিনলাখ তো মেলা টেকা? কম লওন যায় না ভাই?
-মস্করা করো মিয়া? তোমারে কি মিয়া যেনতেন জাগায় পাডামু, তুমি যাইবা আরব দেশে। আরব দেশে যাইয়া খালি টেকা কামাইবা। আরব দেশের বাতাসে টেকা উড়ে, টেকা।
-হেইডা না হয় ঠিক আছে, কিন্তু টেকা একটু কম লন মিয়াভাই।
-মিয়া, আরব দেশে গিয়া যখন টেকা কামাইবা তখন কি আর এই রুস্তম ফরাজীরে চিনবা? তখন তো খালি টেকার গন্ধ শুকবা। ঠিক আছে যাও। তুমি মিয়া আমার পাশের গ্রামের পোলা তুমি আমারে আড়াই লাখ টেকা দিবা। আমি তোমারে আরব দেশে পাঠাই দিমু।
রুস্তুম ফরাজীর সাথে কি কি কথা হলো রহিম তার বাব-মায়ের কাছে সব খুলে বলে। রহিম মিয়ার বাব-মা সব শুনে বললো ভালোই হয় তুমি আরব দেশে গেলে। কিন্তু ভিসার এতগুলো টাকা কোথায় পাবেন তারা? সব ভেবেচিন্তে রহিম মিয়াকে নিয়ে তার বাবা চৌধুরী বাড়ির বড় চৌধুরীর কাছে গেলেন। তাদের বিপদে-আপদে সবসময় তারা বড় চৌধুরীর সহযোগিতা পেয়ে এসেছে। বড় চৌধুরীকে সব খুলে বললে, তিনি চিন্তিত মুখে কিছুক্ষণ ভেবে বলেন
-রহিমের বাপ, আপনার পোলায় আরব দেশে যাইব তাতে কোন সমস্যা নাই। কিন্তু এত টাকা আপনে কৈ পাইবেন?
-চৌধুরী সাব, হের লাইগাই তো আপনের কাছে আইছি। আপনি একটা ব্যবস্থা করেন। আপনি ছাড়া তো আমাগো মাথার ওপরে কেউ নাই।
-তা না হয় বুঝলাম। কিন্তু আমার কাছে তো এত টেকা নাই। আমি আপনেরে বেশিত্তে বেশি হইলে ১০/১৫ হাজার টেকা দিতে পারুম।
-চৌধুরী সাব, ১০/১৫ হাজার টেকায় কি অইবো? আপনি আমগো মা-বাপ, আপনি একটা কিছু ব্যবস্থা করেন।
চৌধুরী সাব চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বুজে আবারো ভাবনায় পড়লেন। কিছুক্ষণ পর চৌধুরী সাব চোখ খুলে বললেন, রহিমের বাপ, শুনেন আপনে আমার কাছে আইছেন আমি আপনেরে নিরাশ করুম না। তবে আমার কিছু শর্ত আছে।
-কি শর্ত কন চৌধুরী সাব? আমরা আপনার সব শর্ত মানুম।
-আমি আপনাদের পুরা আড়াই লাখ টেকা দিমু, তয় আপনার ফসলি জমি আর ভিটার দলিল আপনেরা আমারে দিবেন।
-রহিমের বাবা আর রহিম একে অপরের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়। তাদের চোখ যেন একে অপরকে বলছে, এখন আমাদের করণীয় কি?
-তাদের মনের অবস্থা বুঝতে পেরে চৌধুরী বললেন, রহিমের বাপ, আপনের জায়গা-জমি আমারে একেবারে দিয়া দেওন লাগবো না। আপনের জায়গা আপনারই থাকবো। শুধুমাত্র যতদিন আপনারা আমার টেকা ফিরত না দিবেন ততদিন জায়গার দলিল থাকবো আমার কাছে। আপনার জমিতে যে ফসল হইব তার তিনভাগের দুই ভাগ আমার। যখন আপনেরা টেকা ফিরত দিবেন আপনাদের দলিল আপনেরা নিয়া যাবেন।
-রহিম কিছু বলার আগেই তার বাবা বলেন, চৌধুরী সাব, আপনার শর্ত আমরা মাইনা লইছি। আপনেরে আমি আমার জমির দলিল দিয়া যামু নে।
-ঠিক আছে। তাইলে এই কথাই রইলো। আপনেরা আরব দেশে যাওনের সব ব্যবস্থা করেন।
চৌধুরী সাহেবের কাছ থেকে ভরসা পেয়ে রহিম মিয়া রুস্তম ফরাজীর সাথে দেখা করে আরব দেশে যাওয়ার জন্য সবকিছু চূড়ান্ত করে। একদিন কাকডাকা ভোরে উনিশ বছরের টগবগে যুবক রহিম মিয়া এক বুক আশা আর চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে বাবা-মায়ের আশীর্বাদ আর ছোট-ছোট বোনগুলোকে আদর দিয়ে ঘর ছাড়ে। পরিবারে সুখ-পাখিটিকে ফিরিয়ে আনতে আরবের পথে রওনা হন রহিম মিয়া।
বিমানের চাকা যখন আবুধাবি বিমানবন্দরের রানওয়ে স্পর্শ করে রহিম মিয়ার তন্দ্রা ছুটে যায়। বিমানের জানালা দিয়ে বিমানবন্দর দেখে দুচোখ বেয়ে পানি নেমে আসে, ভাবে, যাক এবার আমার মা-বাবা ও ছোট বোনগুলো আর না খেয়ে থাকবে না। বিমানের ছোট্ট কুঠুরি থেকে রহিম মিয়া যখন বাইরে এলো তার শরীরটা যেন আগুনে পুড়ে যাচ্ছে। রোদের তাপে মনে হলো তার শরীরে কেউ যেন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
বিমানবন্দরের কাজ শেষ করে বাইরে এসে দেখে, একটা কাগজে তার নাম লিখে তাকে নেয়ার জন্য একজন আরব দেশের মানুষ এসেছে। রহিম মিয়া লোকটির কাছে গিয়ে সালাম দিয়ে তার নাম বললো। উত্তরে আরবিতে লোকটি কি বললো রহিম তার আগামাথা কিছুই বুঝল না। সে লোকটির দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকল। আরব লোকটি রহিমের অবস্থা বুঝতে পেরে ইশারায় ভাববিনিময় করল। রহিম বুঝতে পারল, এই মানুষটিই তার কফিল (চাকরিতে নিয়োগকর্তা)। লোকটির সাথে গিয়ে গাড়িতে বসল। গাড়ির এসিতে অনেকক্ষণ পরে রহিম কিছুটা শান্তি অনুভব করল। রহিম মিয়াকে নিয়ে গাড়ি ছুটে চলছে।
রহিম মিয়া গাড়ির জানালায় চোখ রেখে অবাক দৃষ্টিতে আরব দেশের পিচঢালা রাস্তা আরা উঁচু-উঁচু বিল্ডিং দেখতে লাগল। কিছু সময় চলার পরে শহরের রাস্তা ফুরিয়ে গেল। গাড়ি এবার বালির ঝড় তুলে মরুভূমির মাঝ দিয়ে চলছে। গাড়ি চলছে তো চলছেই। থামার কোন লক্ষণ নেই। পরে আবুধাবি শহর থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ শ কিলোমিটার দূরে আলকুয়া নামের ছোট্ট শহরের উম-আল-জুমুল নামক মরুভূমির মাঝে ছোট্ট একটা ঝুপড়িঘরের সামনে এসে গাড়ি থামল প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পরে। আরবি কফিলটি ইশারায় রহিম মিয়াকে নামতে বলল। প্রায় আধঘণ্টা রহিম মিয়াকে বিভিন্ন বিষয় বুঝিয়ে দিয়ে কফিল বিদায় নিল। রহিম কফিলের কথার নব্বই ভাগ কথা না বুঝলেও, এটা বুঝেছে যে, দুবাইয়ের আগুনের মতো তপ্ত এই মরুভূমির মাঝেই তার জীবন কাটাতে হবে। চারদিকে চোখ বুলিয়ে যতদূর দৃষ্টি যায় রহিম মিয়া কোন মানবের চিহ্ন দেখতে পেল না। এই মরুভূমির মাঝে কোন কারণে মরে পড়ে থাকলেও কেউ তার খোঁজ পাবে না। বাব-মা আর বোনদের চেহারা মনের মাঝে ভেসে উঠতেই ডুকরে কেঁদে ফেলে রহিম মিয়া।
কাঁদতে-কাঁদতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে খেয়াল নেই রহিম মিয়ার। ঘুম ভাঙতেই সে দেখতে পেল সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। প্রচ- ক্ষুধা লেগেছে তার। সে পুরো ঘর তন্নতন্ন করে খুঁজে আটা, আলু আর লবণ ছাড়া কিছুই পেল না। ভাগ্যকে মেনে নিয়ে আটার রুটি আর আলু সেদ্ধ করে রাতের খাবারের আয়োজন করল। এছাড়া কিই-বা আর করার আছে তার। জীবনযুদ্ধে গরিবের ভাগ্যকে মেনে নেয়া ছাড়া আর কোন যুক্তি নেই! ভাগ্যের সাথে যুদ্ধ করার শক্তি বা সাহস কোনটাই নেই গরিবের। রহিম মিয়াও তার ব্যতিক্রম নয়।
প্রতিদিন পৃথিবী আলোকিত করে সূর্য ওঠে। কিন্তু সেই আলো রহিম মিয়ার জীবনকে আলোকিত করতে পারছে না। মরুভূমির বুকে উট, দুম্বা আর ছাগল পালন করেই তার সময় কাটছে। বিশ ফুট দৈর্ঘ্য আর বিশফুট প্রস্থের খেজুরপাতার ছাউনি এবং খেজুর পাতার দেয়ালে গরম থেকে বাঁচার জন্য পাটের বস্তার আবরণ দেয়া একটি ঘর। এটিই এখন রহিম মিয়ার সংসার। আর দৃষ্টিসীমার কয়েক মাইলজুড়ে জনমানবহীন শুধু ধু ধু মরুভূমির এলাকা। এটিই এখন রহিম মিয়ার পৃথিবী। পশুপালন আর আলুসিদ্ধ ও আটার রুটি খেয়েই জীবন কেটে যাচ্ছে তার। পুষ্টিকর খাবার বলতে পালনকৃত উটের দুধপান করা। পরিবারের সুখের জন্য এই জীবনের সাথে মানিয়ে নিয়েছে নিজেকে।
ঘড়ির কাঁটা আর ক্যালেন্ডারের পাতায় পরিবর্তন আসে কিন্তু রহিম মিয়ার জীবনে আসে না। তার জীবনটা চলে যাচ্ছে সাধারণ জীবনের নিয়মে। নিজে খেয়ে না খেয়ে টাকা জমিয়ে চৌধুরী সাহেবের টাকা পরিশোধ করেছে। সঞ্চয় হিসেবে পরিবারের জন্য নতুন কিছু জমি ক্রয় করেছে। তিন বোনের বিয়ে দিয়েছে। সবাই সুখে আছে, শুধু সুখপাখিটা রহিমকেই ধরা দিচ্ছে না। বাব-মায়ের চাপে দেশে আসতে বাধ্য হয়েছে রহিম মিয়া। মায়ের কোল থেকে গিয়েছিল উনিশ বছরের টগবগে এক তরুণ। কিন্তু মায়ের কাছে ফিরে এলো পঁয়ত্রিশ বছরের এক অর্ধবৃদ্ধ রহিম মিয়া। এই রহিম মিয়াকে চিনতে সকলেরই কষ্ট হচ্ছে। রহিম মিয়ার ইচ্ছে না থাকলেও মায়ের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে কুসুমকে বিয়ে করে রহিম। সব মিলিয়ে পাঁচ মাস দেশে ছিল।
ফিরে আসার সময় বিমানে বসে-বসে রহিম মিয়া ভাবছে প্রিয় বউটি তার দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তার আদরের সন্তানটি যখন পৃথিবীর বুকে ভূমিষ্ঠ হবে সেই প্রিয় মুহূর্তটিতে সে পাশে থাকতে পারবে না। এটা মনে পড়তেই রহিম বুকের মাঝে কেমন যেন যন্ত্রণা অনুভব করলো। রহিম মিয়া জানে পরিবার-পরিজন ফেলে রেখে একজন প্রবাসী কি যন্ত্রণা ভোগ করে। তাই সে কোন মায়ায় জড়াতে চায়নি। কিন্তু নিজের অজান্তেই সেই মায়ায় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেল রহিম মিয়া। কার লেখা বা কোথায় পড়েছিল আজ মনে নেই, তবে বিমানে বসে আজ হঠাৎ কবিতাটি মনে পড়লো রহিম মিয়ার। মনে পড়তেই নিজের কবিতাটি আবৃত্তি করতে লাগল:
সন্ধ্যা হয়- চারদিকে শান্ত নীরবতা
খড় মুখে নিয়ে এক শালিক যেতেছে উড়ে চুপে
গোরুর গাড়িটি যায় মেঠোপথ বেয়ে ধীরে ধীরে
আঙ্গিনা ভরিয়া আছে সোনালি খড়ের ঘন স্তুপে।
পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে
পৃথিবীর সব রূপ লেগে আছে ঘাসে
পৃথিবীর সব প্রেম আমাদের দুজনার মনে
আকাশ ছড়ায়ে আছে শান্তি হয়ে আকাশে-আকাশে।
আজ সেও শালিকপাখির মতো ওড়ে যাচ্ছে অনেক দূরে। আবার কখন নিজ নীড়ে ফিরে আসবে জানে না রহিম।
জীবন সেই আগের মতো বাঁধাধরা নিয়মেই চলে যাচ্ছে। সেই ভোরে ঘুম থেকে ওঠে নামাজ দিয়ে শুরু। তারপর মরুভূমির মাটিতে পশুচরানো। সেই লবণমাখা আটার রুটি আর আলুসিদ্ধ। কখনো-কখনো খাবার হিসেবে কপালে জোটে ভাত-মাছ বা ভাত-মাংস। যে মেয়েটিকে মায়ের গর্ভে রেখে এসেছিল তার সেই মেয়েটি আজ পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। মেয়েকে একটিবারের জন্য বুকে জড়িয়ে ধরার সৌভাগ্য রহিমের হয়নি। বুকটা ব্যথায় চিনচিন করে ওঠে। মেয়েটিকে একটিবার বুকে জড়িয়ে ধরতে মন চায়। কিন্তু এই মরুময় জীবনে সেই আশাপূরণ হবার নয়। প্রযুক্তির কল্যাণে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে মাঝে মাঝে বউ ও মেয়ের সাথে ভিডিওকলে কথা হয় তার। কিন্তু এই ঘোলে কি আর দুধের স্বাদ মেটে? মাঝে মাঝে মন চায় সব ছেড়ে দিয়ে দেশে চলে যাবে। দেশে গিয়ে হালচাষ করে স্ত্রী-মেয়ে নিয়ে জীবনের বাকিটা সময় কাটিয়ে দেবে। কিন্তু হয় না, মানুষ যা চায় এক জীবনে তার সবটুক ুধরা দেয় না। প্রবাসের এই মাটিতেই তাকে পড়ে থাকতে হয়। তার শরীরের ঘামের গন্ধ তার জীবনের বেদনার কথা বলে। কিন্তু সেই বেদনার কথা বুঝতে পারার মতো মানুষ পায় না রহিম মিয়া। এভাবেই দিনের পরে রাত আসে আর রাতের পরে দিন। মরুভূমির তপ্ত বালুর মাঝে রহিম মিয়ার ঘামের গন্ধের বেদনা আর চোখের জল সব শুকিয়ে যায়।
এভাবেই চলে যায় রহিম মিয়াসহ লাখো প্রবাসীর জীবনের গল্প।