বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর হোক

যেকোনো অজুহাতে পণ্যের মূল্য ক্রমাগত বাড়ছে। এতে জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গত কয়েক মাসে জিনিসপত্রের দাম শুধু বেড়েছে। এ ছাড়াও শিশুখাদ্যসহ মাছ-মুরগির খাদ্য ইত্যাদির মূল্য অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়ায় প্রভাব পড়ছে উৎপাদিত পণ্যে। এটা মানতে হবে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ রকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের জীবন হয়ে উঠবে আরও দুর্বিষহ। উৎপাদক পর্যায়ে কৃষক যে পরিমাণ মূলধন নিয়ে উৎপাদন করে, এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মূল্যে ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এদিকে ব্যবসায়ীরা এর দায়ভার চাপানোর চেষ্টা করছে পরিবহন সংকটের ওপর। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলেও সেই তুলনায় বৃদ্ধি পাচ্ছে না মানুষের আয়। ফলে নিম্নআয়সম্পন্ন মানুষের জীবন কষ্টকর হয়ে উঠছে। স্বল্প বেতনের চাকরিজীবী এবং পরিবার ছেড়ে দূরে থাকা শিক্ষার্থীদের জীবনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।
এ বিষয়ে আশ্বস্ত করলেন অন্তর‍্যবর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করা এবং জিনিসপত্রের দাম কমানোয় অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। রোববার দুপুরে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে কী পদক্ষেপ নেয়া হবে জানতে চাইলে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি উৎপাদন ও সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল। উৎপাদন ভালো হলে সরবরাহ বাড়বে, দ্রব্যমূল্য কমে আসবে। ফলে এ সম্পর্কিত যত বিষয় রয়েছে, সেগুলোয় যেন সহায়ক পরিবেশ থাকে, সেই চেষ্টা করা হবে। তিনি আরও বলেন, আমদানিসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সজাগ আছি। আমাদের সহকর্মী যারা আছেন, তারা কাজ করছেন। অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি প্রথম দিনই বলেছি, সেদিন গভর্নর ছিলেন, তিনিও জানেন দ্রব্যমূল্য কেন বেড়েছে।’ আমদানিনির্ভর পণ্য নিয়ে কী ভাবছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আমদানির ওপর নির্ভরশীল, সেটা জানি। আমদানির যে মূল্যস্ফীতি, সে বিষয়ে আমরা সজাগ আছি। যতটুকু সম্ভব, আমাদের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানি করতে হবে, যেন বাজার, ভোক্তা ও সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে। আর এখন যে চাপটা রয়েছে, সেটাও যেন কমে আসে, সে চেষ্টা থাকবে।’
আমরা প্রবীন এই অর্থনীতিবিদের কথায় আস্থা রাখতে চাই। অনেকদিন ধরে বাজার অস্থির হয়ে আছে। যার যেমন ইচ্ছে তেমন করে দাম বাড়ায় পণ্যের। বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারায় বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণও সম্ভব হয় না। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে কোনো পণ্য বিক্রি হয় না। এ বিষয়ে বর্তমান সরকার কঠোর হবে বলে জনগণ প্রত্যাশা করে।