চাল উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষস্থানে রয়েছে চীন। এরপর রয়েছে ভারত। আর তৃতীয় স্থানে বাংলাদেশ। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) থেকে প্রকাশ করা গ্লোবাল ফুড আউটলুক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে, যা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে টানা পাঁচ বছর বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছে।
গ্লোবাল ফুড আউটলুক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, চীন চাল উৎপাদনে এখনো শীর্ষে রয়েছে। গত বছর দেশটিতে উৎপাদিত হয়েছে ১৪ কোটি ২৮ লাখ টন। আগামী বছরে (২০২৩-২৪) উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ১৪ কোটি ৩৪ লাখ টন। উৎপাদন বৃদ্ধি হতে পারে দশমিক ৪ শতাংশ। এরপর রয়েছে ভারত। গত বছর দেশটির উৎপাদিত হয়েছে ১৩ কোটি ৮ লাখ টন। আগামী বছরে উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ১৩ কোটি ১০ লাখ টন। উৎপাদন বৃদ্ধি হতে পারে দশমিক ১ শতাংশ। এরপরই রয়েছে বাংলাদেশ। বিদায়ী বছরে দেশটির উৎপাদন ৩ কোটি ৮৩ লাখ টন। আগামী বছরে উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ৩ কোটি ৮৯ লাখ টন। উৎপাদন বৃদ্ধি হতে পারে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। একই সময়ে ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে উৎপাদন বাড়তে পারে ১ শতাংশ। ভিয়েতনামে যা হতে পারে দশমিক ৩ শতাংশ।
বাংলাদেশে গত এক বছরে চালের উৎপাদন মোট সাড়ে সাত লাখ টন বেড়েছে। ফলে চালের আমদানি কমেছে। ২০২০-২১ সালে যেখানে বাংলাদেশ ২৬ লাখ ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করেছে, সেখানে ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা আট লাখ টনে নেমে এসেছে। ডলার-সংকটসহ নানা অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে বাংলাদেশ এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে স্বস্তিতে আছে।
দেশে চাল ও গমের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষক ও উদ্যোক্তারা এই খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছেন। ফলে সেখানে কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে।
বাংলাদেশে ধান উৎপাদনের পাঁচটি ক্ষেত্রের মধ্যে অন্তত তিনটিতে প্রায় শতভাগ যন্ত্রনির্ভর হয়ে গেছে। এর মধ্যে জমি তৈরিতে পাওয়ার টিলারের ব্যবহার, জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য যন্ত্রচালিত ক্ষুদ্র সেচযন্ত্র এবং ধানমাড়াই যন্ত্রের ব্যবহার প্রায় শতভাগ হয়ে গেছে। এর বাইরে ধান কাটার ক্ষেত্রে কম্বাইন হারভেস্টারের ব্যবহার ২৫ শতাংশ ও নিড়ানির ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ কাজ যন্ত্র দিয়ে করা হচ্ছে, যে কারণে বাংলাদেশে ফসলের উৎপাদন দ্রুত বাড়ছে।
ধান কাটার ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ানোর ফলে এবং নতুন উদ্ভাবন করা প্রতিকূল পরিবেশসহিষ্ণু জাতগুলো জনপ্রিয় হওয়ায় চাল উৎপাদন বেড়েছে। এ ছাড়া কৃষি খাতে সরকারের ভর্তুকি অব্যাহত থাকায় উৎপাদন খরচ খুব একটা বাড়েনি।
এ মুহূর্তের সংবাদ