মো. মহসীন »
দেশে বিরাজমান প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও সামগ্রিক উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকা- যথারীতি চালু থাকায় দেশ অর্থনৈতিক গতিশীলতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামে কতিপয় মহাপ্রকল্পের উন্নয়ন দেশের অর্থনৈতিক ধারায় ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন আনায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি লাভ করেছে। বিশ্বে মহামারি প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশের এই অর্জন দেশ-বিদেশে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে, বৈশ্বিক প্রতিকূলতার মধ্যে চট্টগ্রামের কিছু কিছু প্রকল্পে ব্যাপক উন্নয়নধারা আজও অব্যাহত রয়েছে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল আর মিরশ্বরাই বঙ্গবন্ধু ইকোনমিক জোনে বিবিধ উন্নয়ন কর্মকা-ের অগ্রগতি বেশ লক্ষণীয়। এদিকে চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের আকাক্সিক্ষত স্বপ্নের কক্সবাজার রেললাইন স্থাপনের ক্ষেত্রে সামগ্রিক কর্মকা- জোরালো গতিতে এগিয়ে চলছে, একসময় মানুষ যোগাযোগ ব্যাবস্থার এত দ্রুত উন্নয়ন ভাবতেও পারেনি।
সত্যিকার অর্থে একসময়ে দুর্নীতির বেড়াজাল উন্নয়ন কর্মকা-কে বেশি ব্যাহত করেছিলো। কিন্তু বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অতি সজাগ দূরদর্শিতার কারণে সার্বিক উন্নয়নমুখী চিত্র ক্রমে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ তার আভ্যন্তরীণ সামগ্রিক অবস্থায় যথেষ্ট সংস্কার সাধিত হয়ে স্বচ্ছতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। কক্সবাজার রেলপথ এখন আর স্বপ্ন নয়, প্রত্যাশার এক সফল বাস্তবায়ন। স্বপ্নপূরণের পথে রেললাইন স্থাপনের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। দোহাজারি-কক্সবাজার-ঘুমধুম রেললাইন স্থাপনের কাজের অগ্রগতি অনেকাংশেই প্রায় দৃশ্যমান । এরই মধ্যে পুরোপুরি শেষ হয়েছে কক্সবাজার অংশে দুই কিলোমিটার রেলট্রেক বসানোর কাজ। চকরিয়া থেকে ঈদগাহ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন অংশে রেললাইনের পাটাতন বসে যাওয়ায় সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের সুফল দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ইতিমধ্যে কাজের অগ্রগতি দেখে যা আঁচ করা যাচ্ছে, তা হলো নিশ্চিত আগামী ২০২২ সালে কক্সবাজারে রেলে করে মানুষ যাতায়াত করতে পারবে। এছাড়াও আইকনিক স্টেশন, ছোট-বড় সেতু, কালভার্ট, লেভেল ক্রসিং ও হাইওয়ে ক্রসিংয়ের কাজও পুরোদমে চলমান রয়েছে । বিবিধ প্রতিকূলতার মাঝেও ২০২২ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। প্রায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালে শুরু হয়েছিলো দোহাজারি থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের কাজ। রেললাইন প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের বক্তব্য মতে বলা যায় যে,চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইনের কাজ ৭০% পর্যন্ত শেষ হয়েছে। বাকি কাজও ঠিক যথা সময়ে শেষ হয়ে যাবে।
কক্সবাজার রেললাইন চালু হলে দেশের অর্থনীতির গতিশীলতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির পথও সুগম হবে। কক্সবাজার রেলপথ ট্রান্স-এশিয়ান রেলপথের ও অংশ, তাই আন্তঃ দেশীয় যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই রেলপথ ভূমিকা রাখবে। কক্সবাজার অঞ্চলে পর্যটনের বিকাশ, মহেশখালিতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ, তথা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে গতির সঞ্চার হবে। দেশের সব জেলা রেল নেটওয়ার্কে আসলে জাতীয় প্রবৃদ্ধি বাড়বে, পদ্মা সেতুতে রেলপথ স্থাপন আর একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
লেখক : প্রাবন্ধিক