সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সভায় মেয়র
পানি কেন জমছে কারণ খুঁজতে ৪ সদস্যের কমিটি
অতি বর্ষণের ফলে জমে থাকা পানি নামতে না পারার নেপথ্যের কারণ চিহ্নিত করে তা সমাধানের জন্য ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে এ বর্ষা মৌসুমে দীর্ঘ সময় ধরে পানি জমে থাকার ভোগান্তি থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নগর এলাকায় অতি বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীতে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর এক জরুরি মতবিনিময় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত হয়। গতকাল বিকেলে চসিকের অস্থায়ী ভবনের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সম্প্রতি অতি বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার প্রকোপ নিরসনে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক জরুরি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলীকে আহ্বায়ক এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক, চসিকের বর্জ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতিকে সদস্য করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি ২৩ জুন প্রথম সভায় মিলিত হয়ে সম্প্রতি কয়েক দিনের ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এই কর্মকাণ্ডে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জনবল, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ, চট্টগ্রাম ওয়াসা সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবে।
সভায় গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়নে সকল সেবা দানকারী সংস্থা ও নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করা হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. মিজানুর রহমান, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, জলাবদ্ধতার মেগা প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ শাহ আলী, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. রমজান আলী প্রামানিক, বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী মাহমুদুল হোসাইন খান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলম প্রমুখ।
মেয়র বলেন, সম্প্রতি অতিবর্ষণে নগরবাসীর যে ভোগান্তি হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ভোগান্তি নিরসনে আজকের এই জরুরি মতবিনিময় সভা। এই মতবিনিময় সভায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি কমিটি গঠন করেছি। এই কমিটি দ্রুতগতিতে সমস্যা চিহ্নিত করে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। আশা করি এই বর্ষা মৌসুমে আর এরকম ভোগান্তি পোহাতে হবে না।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীর সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পরস্পরের প্রতি কোনো দোষারোপ করার সুযোগ নেই। জনভোগান্তিতে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কী করা প্রয়োজন তা করাই আমাদের প্রধান কর্তব্য।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে আশু পদক্ষেপ গ্রহণে গঠিত কমিটি দ্রুততার সাথে সমস্যা চিহ্নিত করে জরুরি ভিত্তিতে স্বল্পমেয়াদী ব্যবস্থা নেয়ার মাধ্যমে জনভোগান্তি রোধ করার জন্য সকল সেবা সংস্থাকে একযোগে কাজ করতে হবে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, সম্প্রতি অতি বর্ষণের কারণে সৃষ্ট দীর্ঘ সময়ের জলাবদ্ধতায় চট্টগ্রামবাসীকে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সামনে আরো ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে রয়েছে। বে-টার্মিনাল এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গেলে চট্টগ্রাম নগরী পৃথিবীর অন্যতম একটি বন্দর নগরীতে রূপান্তরিত হবে। তাই চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণের মাধ্যমে কর্ণফুলী নদীতে মানবসৃষ্ট বর্জ্য না পড়ার ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানান। বিজ্ঞপ্তি