সুপ্রভাত ডেস্ক »
দেশের বৃহত্তম শিল্পাঞ্চল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে মাল্টিমোডাল সংযোগসহ লজিস্টিক সুবিধা বাড়ানোর জন্য ১.১২৭ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।
শিল্পাঞ্চলটিতে লজিস্টিক সুবিধা স্থাপনে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশা প্রণয়নেও বিশ্বব্যাংক সহায়তা করবে বলে বেজা সূত্রে জানা গেছে।
বেজার লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে লজিস্টিক উন্নয়নের এ কার্যক্রম সম্পন্ন করা। এই উন্নয়ন কাজ শেষ হলে চট্টগ্রামের মিরসরাই-সীতাকুণ্ড ও ফেনীর সোনাগাজীতে অবস্থিত শিল্পাঞ্চলটি সম্পূর্ণরূপে চালু হবে।
প্রকল্পটির লক্ষ্য শিল্পনগরটিকে একটি জলবায়ু-সহনশীল স্মার্ট শিল্পাঞ্চলে রূপান্তরিত করা। একইসঙ্গে এটিতে থাকবে অবকাঠামো ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির সুবিধা। এসবের মধ্যে রয়েছে বিস্তৃত সড়ক সংযোগ, জেটিসহ একটি লজিস্টিক হাব, ইউটিলিটি অবকাঠামো এবং একটি ইন্টেলিজেন্ট পরিবহন ব্যবস্থা।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শিল্পনগরটিতে তিনটি জেটি নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। একটি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ নির্মাণ করবে, অন্য দুটি বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে নির্মাণ করা হবে।
এর জন্য আমরা আলাদাভাবে কিছু জায়গা সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। যেখানে জেটির পাশাপাশি কনটেইনার টার্মিনাল থাকবে। রেলপথ, সড়ক ও সমুদ্রপথ নিয়ে মাল্টিমোডাল সংযোগ সুবিধা থাকবে এখানে।
মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটি প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করবে। শিল্পনগরীর লজিস্টিক হাব নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক অর্থায়নে সম্মতি জানিয়েছে।
বেজার কর্মকর্তারা বলেন, মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটির মাধ্যমে শিল্পাঞ্চলটিতে স্থাপিত জেটিগুলো চট্টগ্রাম বন্দরসহ অন্যান্য বন্দরের সঙ্গে সমুদ্রপথে যোগাযোগের সুবিধা তৈরি করবে। এছাড়া রেল ও সড়ক সংযোগ শিল্পাঞ্চলটিকে ঢাকা–চট্টগ্রাম রেলপথ ও মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত করবে।
প্রাথমিক সম্ভাব্যতা সমীক্ষা অনুসারে, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ১.০২৫ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা হবে।
আগামী বছরের মধ্যে সমীক্ষাসহ প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করার পর লজিস্টিকে বিনিয়োগ কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্য রয়েছে বেজার।
প্রকল্পটি গ্রহণের অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
প্রায় ১৩৩ বর্গকিলোমিটার এলাকার সমান ৩৩ হাজার ৪০৭ একর জমির ওপর বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। বেজা ইতোমধ্যে ১৬ হাজার ৭২৯ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে এবং ভূমি উন্নয়নের কাজ চলছে।
বেজা এখন পর্যন্ত শিল্পাঞ্চলটিতে ১৫২টি ইউনিটে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বিনিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। সব মিলিয়ে জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে পাঁচ হাজার ২৫১ একরের বেশি। কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যেই ১.২৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
অনুমোদন প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত বিনিয়োগ ১৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এর মাধ্যমে সাত লাখ ৭৫ হাজার ২২৮ জনের কর্মসংস্থানের প্রত্যাশা করছে প্রতিষ্ঠানগুলো।