নিজস্ব প্রতিনিধি, মিরসরাই »
ফুলেল শ্রদ্ধায় মিরসরাই ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্মরণ করলো শিক্ষার্থী, স্বজন, শিক্ষক, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ ‘অন্তিম’ ও আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ ‘আবেগ’ এ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এসময় নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার সকালে শ্রদ্ধা জানান গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, উপজেলা পরিষদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা আওয়ামী লীগ, আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিকলীগ, মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদ, মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা যুবলীগ, মায়ানী ইউনিয়ন ছাত্রলীগসহ সংস্থা-সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
মিরসরাই ট্র্যাজেডিতে নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে আবুতোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে শোকসভার আয়োজন করা হয়। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আবুল হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি। মায়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহমদ নিজামীর সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মর্জিনা আক্তার।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এম আলাউদ্দিন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস হোসেন আরিফ, মিরসরাই পৌরসভার মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মাস্টার, মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন মাস্টার, সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির খান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাইনুর ইসলাম রানা, মায়ানী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি নুরেরছাপা নয়ন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, ‘মিরসরাই ট্র্যাজেডি স্মরণকালের ভয়াবহ একটি দুর্ঘটনা। এইদিন পিকআপ উল্টে ৪২ জন শিক্ষার্থীসহ ৪৫ জনের মৃত্যু হয়। যারা জীবিত থাকলে পরিবার, দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতো। তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। তিনি বলেন, ট্র্যাজেডিতে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী নিহত হওয়া আবুতোরাব বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ, আসবাবপত্রসহ যে সকল সংকট আছে তা নিরসন করা হবে। নতুন একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করার জন্য তিনি মন্ত্রণালয়ে অবহিত করবেন বলে জানান।’
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১১ জুলাই মিরসরাই স্টেডিয়াম থেকে বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল ফাইনাল খেলা শেষে ফেরার সময় শিক্ষার্থীদের বহনকারী একটি পিকআপ বড়তাকিয়া-আবুতোরাব সড়কের সৈদালী এলাকায় পাশের একটি ডোবায় উল্টে যায়। যেখানে উপজেলার আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩৪ জন, আবুতোরাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ জন, আবুতোরাব ফাজিল মাদ্রাসার ২ জন, প্রফেসর কামালউদ্দিন চৌধুরী কলেজের ২ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়। এছাড়া এক অভিভাবক, ২জন ফুটবলপ্রেমী যুবকসহ ৪৫ জনের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে রচিত হয় মিরসরাই ট্র্যাজেডি।