ফাইনালে আর্জেন্টিনার সঙ্গী কলম্বিয়া

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »

কিন্তু এরপর যা ঘটে তা আসলে এককথায় অবিশ্বাস্য। উরুগুয়ের স্ট্রাইকার ডারউইন নুনেজ দর্শক সারিতে গিয়ে তাদের কিল-ঘুসি মারছেন এমন ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায় কেউই তাকে থামাতে পারছেন না। রোনাল্ড আরাউহোকেও দেখা যাচ্ছিল তবে তিনি মারামারি করেননি। তবে এমন ঘটনা অবতারণা হওয়ার কারণ জানিয়েছেন দলটির অধিনায়ক হোসে মারিয়া হিমেনেজ। দর্শক সারিতে তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর আক্রমণ করেছিলেন কলম্বিয়ানরা যে কারণেই নাকি এমন ঘটনা ঘটেছে।
‘সবাই দয়া করে শান্ত হন। এত জঘন্য। আমাদের পরিবারের সদস্যরা বিপদে রয়েছে। অনেকের ছোট বাচ্চাও রয়েছে। কোনো পুলিশ নেই যে আমাদের পরিবারকে দেখবে। তারা জানে না কীভাবে ব্যবহার করতে হয় মানুষের সাথে।’ এমনটাই ম্যাচ শেষে জানান অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে খেলা হিমেনেজ। কানাডাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে আর্জেন্টিনা অপেক্ষায় ছিল, তাদের সঙ্গী কে হবে? উরুগুয়ে না কলম্বিয়া? নর্থ ক্যারোলিনার চারলটে ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে গতকাল সকালে সেই প্রশ্নের নিষ্পত্তি হলো। টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলতে থাকা উরুগুয়েকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর্জেন্টিনার সঙ্গী হলো কলম্বিয়া। ম্যাচের প্রথমার্ধের শেষ দিকে দারুণ এক হেডে ফল নির্ধারনী গোলটি করেন জেফারসন লারমা। প্রথমার্ধের একেবারে অন্তিম মহূর্তে লাল কার্ড দেখেন কলম্বিয়ার ড্যানিয়েল মুনোজ। দ্বিতীয়ার্ধ পুরোটা ১০ জনের দল নিয়ে খেলে কলম্বিয়া। তবুও গোল বের করতে পারেনি উরুগুইয়ানরা। এ নিয়ে কোপা আমেরিকায় তৃতীয়বার ফাইনালে উঠলো কলম্বিয়া। আগের দুই ফাইনালের মধ্যে ২০০১ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। এছাড়া ১৯৭৫ সালে প্রথমবার ফাইনালে উঠেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। এবার ২৩ বছর বিরতি দিয়ে আবারও হামেশ রদ্রিগেজ-লুইজ দিয়াজদের হাত ধরে ফাইনালে উঠলো তারা। উরুগুয়েকে হারিয়ে টানা ২৮ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড ধরে রাখলো কলম্বিয়া। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে তারা সর্বশেষ হেরেছিল আর্জেন্টিনার কাছে। এবার ফাইনালে সেই আর্জেন্টিনার মুখোমুখি। এবার কী তাদের অপরাজেয় যাত্রা থামবে, নাকি মেসিদের হারিয়ে সেই যাত্রা আর লম্বা করবে কলম্বিয়ানরা! হামেশ রদ্রিগেজ চলতি টুর্নামেন্টে ষষ্ঠ এসিস্ট করলেন। মূলত ৩৯তম মিনিটে তার নেওয়া কর্নার কিক থেকে ভেসে আসা বলেই হেড করে গোল করেন জেফারসন লারমা। তবে ম্যাচজুড়ে ফুটবল খেলার চেয়ে শারীরিক খেলাই বেশি হয়েছে। যে কারণে রেফারিকে সাতবার হলুদ কার্ড এবং একবার লাল কার্ড বের করতে হয়েছিল। এমনকি রেফারি শেষ বাঁশি বাজানোর পর কয়েকজন খেলোয়াড়কে দেখা গেছে সমর্থকদের সামনে গিয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
১৯৭০ সালে পেলের পর হামেশ রদ্রিগেজই প্রথম লাতিন আমেরিকান ফুটবলার, যিনি কোনো একটি বড় টুর্নামেন্টে ৬টি গোলের অ্যাসিস্ট করলেন। কলম্বিয়া ১-০ গোলে এগিয়ে গেলেও এই লিড ধরে রাখা তাদের পক্ষে অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কারণ, ৪৫তম মিনিটেই ড্যানিয়েল মুনোজ লাল কার্ড (২টি হলুদ কার্ড) দেখে মাঠ থেকে বহিষ্কার হন। লিভারপুলের স্ট্রাইকার ডারউইন নুনেজ ১০ জনের কলম্বিয়াকে পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। এমনকি বদলি হিসেবে নেমে উরুগুয়ের সবসময়ের সর্বোচ্চ গোলদাতা (৬৮টি) লুইস সুয়ারেজও পারলেন না গোল আদায় করতে। ৭১তম মিনিটে তার একটি শট বারে লেগে ফিরে আসে। ৮৮তম মিনিটে আরও একটি দারুণ গোলের সুযোগ পেয়েছিল কলম্বিয়ার ম্যাতিয়াস উরিব। কিন্তু ফাঁকা নেট পেয়েও বাইরে মেরে দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৩৯তম মিনিটে দেওয়া গোলই জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে দিলো এবং ২০০১ সালের পর কলম্বিয়াকে ফাইনালে তুলে দিলো। খবর জাগোনিউজ’র