চায়ের দোকানে ব্রাশফায়ার
নিজস্ব প্রতিবেদক,রাঙামাটি
রাঙামাটির পর্যটন উপত্যকা সাজেকভ্যালিতে সশস্ত্র হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন দুই ব্যক্তি, যাদের নিজেদের কর্মী বলে স্বীকার করেছে পাহাড়ের আঞ্চলিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর প্রসীত খীসার নেতৃত্বাধীন অংশ।
স্থানীয় সূত্র ও আইনশৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সূত্র জানায়, রোববার দুপুর ১২ টার দিকে সাজেক এর মাচালং এলাকার ব্রিজপাড়ায় একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন কয়েকজন ইউপিডিএফ কর্মী ও সমর্থক। এ সময় একদল সশস্ত্র যুবক দোকানটির দিকে এলোপাথাড়ি ব্রাশ ফায়ার করতে থাকলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ইউপিডিএফ’র কর্মী আশীষ চাকমা আশুক্য (৪৫) এবং দীপায়ন চাকমা (৩৮)। আশীষের বাড়ি বাঘাইছড়ির রূপকারি ইউনিয়নে এবং দীপায়নের বাড়ি সাজেক ইউনিয়নেই বলে জানাচ্ছে স্থানীয় সূত্রগুলো।
ইউপিডিএফ এর মুখপাত্র অংগ্য মারমা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকদের’ অভিযুক্ত করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে হত্যা খুন গুমের রাজনীতির মধ্য দিয়ে যারা পাহাড়ের মুক্তিকামী মানুষের আকাক্সক্ষাকে গলা টিপে হত্যা করতে চায় তারাই নেপথ্যে এইসব ঘটনার সাথে জড়িত।
ইউপিডিএফ’র বাঘাইছড়ি উপজেলা সংগঠক আর্জেন্ট চাকমা এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) কে দায়ী করে দোষীদের গ্রেফতারপূর্বক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
তবে জনসংহতি সমিতির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক ত্রিদিব চাকমা এই ঘটনার সাথে তার দলের জড়িত থাকার সম্ভাবনা বা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সাজেক ও মাচালং এলাকায় আমাদের কোন সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নেই,এটা সবাই জানে। এই ঘটনায় আমাদের অভিযুক্ত করাটা অনুচিত,এই অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে আমরা যারা মারা গেছেন, তারা ইউপিডিএফ’র সাথে সংশ্লিষ্ট বলেই জেনেছি আর হামলাকারীদের রাজনৈতিক পরিচয় এখনো সুস্পষ্টভাবে না জানলেও তারাও পাহাড়ের একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসীগোষ্ঠী বলেই জেনেছি। লাশ উদ্ধারের পর পোস্টমর্টেম হবে,মামলা হবে।’
এদিকে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর রাঙামাটি জেলা সংগঠক সচল চাকমা এক বিবৃতিতে জেলার সাজেক ইউনিয়নের মাচালঙে জেএসএস সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক গুলি করে দুই ইউপিডিএফ সদস্যকে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি, ‘এই হত্যার ঘটনাকে কাপুরুষোচিত ও ন্যাক্কারজনক আখ্যায়িত করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ে ইউপিডিএফের চলমান আন্দোলন বানচাল করে দেয়ার লক্ষ্যে শাসকগোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে সন্তু গ্রুপসহ ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে প্রতিনিয়ত ইউপিডএফ নেতা-কর্মীদের হত্যা করছে।’