নিজস্ব প্রতিবেদক <
প্রবর্তক সংঘের ভূমিতে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা করতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের নেতৃবৃন্দ।
১৪ মার্চ বিকালে মন্দিরের প্রধান নিরাপত্তা অফিস ভাঙচুর ও হুমকির প্রতিবাদে গতকাল সোমবার বিকাল ৩টায় নগরীর ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠে এ কথা বলেন ইসকন বিভাগীয় সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী।
তিনি বলেন, ‘২০০৩ সালে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘকে (ইসকন) শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরটি দৈনন্দিন সেবাপূজা, উন্নয়ন ও পরিচালনার দায়িত্ব প্রদান করেন। প্রায় ১০০ কোটি টাকার মত অনুদান সংগ্রহ করে প্রবর্তকের ভূমিতে তা খরচ করে সনাতন ধর্মের কল্যাণে একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় এই বৃহৎ মন্দিরটি উদ্বোধনের ২ মাস আগে প্রবর্তক সংঘের কর্মকর্তাদের আচরণে ভিন্নতা লক্ষ্য করি। হঠাৎ করে তারা মন্দিরের দৈনন্দিন সেবা পূজা পরিচালনায় হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে। বিষয়গুলো নিয়ে ১২ মার্চ শুক্রবার তাদের আলোচনা প্রস্তাব দিলে তারা আলোচনা না বসে গত ১৪ মার্চ বিকাল সাড়ে ৩টায় অতর্কিতভাবে তিনকড়ি চক্রবর্তী বিভিন্ন সরঞ্জামসহ ২০-২৫ জন বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে মন্দিরের প্রধান নিরাপত্তা অফিস ভাঙচুর করেন এবং মন্দিরের ২ নম্বর প্রবেশ গেট তুলে ফেলে দেয়। তাকে বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি তাতে কর্ণপাত না করে মন্দিরের সাধুদের অকথ্য গালিগালাজ করে উচ্ছেদ এবং মামলার হুমকি দেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে গতকাল বিকালে তিনকড়ি চক্রবর্তীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের জায়গায় কাজ করতে গেছি উল্টো তারাই আমাদের কাজে বাঁধা দিয়েছে। যাদের আশ্রয় দিয়েছি সেই আশ্রয়দাতার উপর তারা হামলা করেছে। কাজ করার আগে তাদের বহুবার মিটিংয়ে বসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা বসেননি।’
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, ‘প্রবর্তক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা মতিলাল রায় কর্তৃক সনাতন ধর্ম প্রচারের জন্য প্রতিষ্ঠিত এ সংঘের সাথে ইসকনের মৌলিক উদ্দেশ্যের কোনো পার্থক্য নেই। সনাতন ধর্মের প্রচার ও প্রসার করাই হল এ সংঘের মূল উদ্দেশ্য। অথচ প্রবর্তক সংঘ সাধু-সন্ন্যাসীদের পরিচালনার বাইরে রেখে একতরফাভাবে এ সংঘ পরিচালনা করে আসছে। ইতোমধ্যে প্রবর্তক সংঘ পবিত্র ভূমির অমর্যাদা করে হিন্দুদের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে বহু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে এ ভূমির বিভিন্ন অংশের মালিকানা ছেড়ে দিয়েছে। বিগত ১৭ বছরে সনাতনীদের অর্থব্যয়ে ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণে তারা সহযোগিতা করে আজকে কেন ইসকনকে উচ্ছেদ করতে চাচ্ছে? আমাদের আশঙ্কা বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাছে কোটি কোটি টাকা মূল্যে হস্তান্তর করে দেয়া ভূমির মত এ মন্দির ও সংলগ্ন এলাকাও বরাদ্দ দিয়ে দিতে পারে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সর্বদা পরিষ্কার। দ্বিধাহীন কণ্ঠে সমগ্র সনাতনী সমাজকে আশ্বস্ত চাই সাধু সন্ন্যাসীরা সনাতন ধর্ম ও জাতির কাছে দায়বদ্ধ। ইসকন এ পবিত্র ভূমির প্রতি ইঞ্চি জায়গা সনাতনীদের কল্যাণে ব্যবহার করছে। এ ভূমিতে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান করতে দেয়া হবে না। আমাদের সংস্কৃতি আমরা জীবনের বিনিময়ে রক্ষা করব।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শ্রীপাদ লীলারাজ গৌরদাস ব্রহ্মচারী, শ্রীপাদ দারুব্রহ্ম জগন্নাথ দাস ব্রহ্মচারী, দিব্যনিমাই দাস ব্রহ্মচারী, স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের শ্রী শচীনন্দন গোস্বামী, মুকুন্দভক্তি দাস ব্রহ্মচারী, অপূর্ব মনোহর দাস ব্রহ্মচারী, রূপেশ্বর গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী প্রমুখ।
এ মুহূর্তের সংবাদ