চমেক হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস
নিজস্ব প্রতিবেদক
ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর ২০১৭ সাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্বল্পমূল্যে কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তবে সম্প্রতি ফি বাড়িয়ে দেওয়ায় রোগীরা আন্দোলনে নেমে পড়েন। রোগীদের বাধার মুখে পড়ে আগের দামই রাখতে হয় প্রতিষ্ঠানকে। একই সাথে চমেকের নিজস্ব কিডনি ওয়ার্ডের সক্ষমতা বাড়ায় আগে যেখানে চার মেশিন দিয়ে ডায়ালাইসিস সেবা দেয়া হতো বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ মেশিনে। যেখানে প্রতিদিন তিন শিফটে ৫০ জন রোগীকে ডায়ালাইসিস সেবা দেওয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালের কিডনি ওয়ার্ডের প্রধান ডা. নুরুল হুদা বলেন, নতুন ১০টি মেশিন চালু করা হয় ২২ জানুয়ারি। এ নিয়ে কিডনি ওয়ার্ডের তত্ত্বাবধানে ১৭টি মেশিনে ডায়ালাইসিস সেবা চালু হয়। এর আগে ওয়ার্ডে চারটি মেশিন সচল ছিল। পরে করোনা ইউনিটে স্থাপন করা তিনটি মেশিনে সাধারণ রোগীদের জন্য সেবা চালু করা হয়। এখন নতুন দশটিসহ সব মিলিয়ে ১৭টি মেশিনে প্রতিদিন তিন শিফটে ৫০ জন রোগীকে ডায়ালাইসিস সেবা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, স্যান্ডরে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদেরও আমাদের কিডনি ওয়ার্ডে আনা হচ্ছে। প্রথম দিকে ৩০ জনের মতো রোগীকে কিডনি ওয়ার্ডে তালিকাভুক্ত করা হয়। তালিকাভুক্ত রোগীদের মধ্য থেকে তুলনামূলক বেশি গরীব ও অসহায় রোগী বাছাই করে কিডনি ওয়ার্ডে তালিকাভুক্তির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তাদের সেখানে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। পরে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।
মেশিন বাড়লেও লোকবল বাড়ানো হয়নি কেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যা লোকবল আছে তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সামনে বাড়ানো হবে।
এদিকে স্যান্ডরের ডায়ালাইসিস ফি বাড়ার প্রতিবাদ করা রোগীরা হাসপাতালের সেবা নিতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে তারা স্বজনদের চিকিৎসা করাচ্ছেন। এমনকি চিকিৎসাবসেবার জন্য পরিবারের সম্পত্তিও বিক্রি করছেন কেউ কেউ। তাদেরই একজন সুজন। তিনি সুপ্রভাতকে বলেন, আমরা হাসপাতালে স্যান্ডরের সেবা আর নিচ্ছি না। সেবা নিতে গেলে বিভিন্ন জনের কাছে পাঠায়। রোগ তো আর অপেক্ষা করে না। রোগী আমাদের, তাদের কষ্টগুলোতো আমাদেরই ভোগ করতে হচ্ছে। বিনা ভোগান্তিতেই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারছি। এত টাকা নেই আমাদের। বাধ্য হয়েই গ্রামের বাড়ির কিছু সম্পত্তি বিক্রি করে চিকিৎসার খরচ চালাতে হচ্ছে।’
আরেক রোগীর স্বজন জান্নাত আক্তারের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, মোস্তাকিম ভাইকে গ্রেফতারের পর আমরাও চিকিৎসা নিতে যায়নি। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চালিয়ে নিচ্ছি। আমার বাবাকে বাঁচাতে পারেনি। তিনি ১৬ জানুয়ারি মারা গেছেন। হঠাৎ প্রেশার বেড়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই মারা যান তিনি।