প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার অবিচল দৃঢ়চেতা বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার কারণে আজকে পরপর তিনবার আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায়। একটি শক্তিশালী ঘরের মধ্যে যদি একটি পিলারে পোকা লাগে তাহলে সেই ঘর কিন্তু নড়েবড়ে হয়ে যায়। সুতরাং আমাদের দলের মধ্যেও এমন কাউকে ঢুকানো যাবে না যারা পোকার মতো দল কেটে ফেলে।
তিনি বলেন, আজকে যে সরকার সেটা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার, সরকারের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নয়, সুতরাং দল যেন সরকারের মধ্যে ঢুকে না যাই, সেটি মাথায় রাখতে হবে। দল শক্তিশালী হলে সরকারও শক্তিশালী হবে। ক্ষমতায় থাকলে দায়িত্ববান হতে হয়, আমাদেরকেও অন্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে অনেক দায়িত্ববান হতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. আতাউর রহমান, সহসভাপতি অধ্যাপক মঈন উদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, স্বজন কুমার তালুকদার, মহিউদ্দিন রাশেদ প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, গত ৪০ বছরের পথচলায় আমরা কে কতটুকু জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকতে পেরেছি জানি না, কিন্তু ৪০ বছরের দীপ্ত পথচলায় বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে আছেন এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আছেন। তাকে বারবার হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধু কন্যা কখনো বিচলিত ও দ্বিধান্বিত হননি, বরং আরো দীপ্ত পদভারে বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন পুরণের পদযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সেই কারণে আজকে মানুষের ভোট এবং ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের পর বিএনপি, মুসলিম লীগ ও জাসদের লোকজন বলতো আওয়ামী লীগ আর কখনো ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তাদের সেই দম্ভকে চুরমার করে ১৯৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দল ক্ষমতায় আসে। আবার ২০০৮ সালে ধস নামানো বিজয়ের মাধ্যমে দেশের মানুষ পরপর তিনবার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে শেখ হাসিনাকে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, যদি দেশ পরিবর্তন করতে হয় তাহলে ক্ষমতার ধারাবাহিকতা থাকতে হয়। আমরা যদি এশিয়ার বিভিন্ন দেশের দিকে তাকায় তাহলে সেটি দেখতে পায়। ষাটের দশকে স্বাধীনতা অর্জনের পর সিঙ্গাপুরে একই দল এখনো রাষ্ট্র চালাচ্ছে। মালয়েশিয়া ষাটের দশকে স্বাধীনতা অর্জনের পর দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর একই দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, এখনো আছে। আজকে আমরা সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার বদলে যাবার গল্প শুনি। যদি জননেত্রী শেখ হাসিনা অব্যাহতভাবে দেশ পরিচালনার সুযোগ পান তাহলে এখন যেমন বাংলাদেশের বদলে যাবার গল্প পৃথিবীর শুনছে, এই গল্পের আওয়াজ আরো বেশি শুনবে।
তিনি বলেন, অব্যাহতভাবে জনগণের রায় পেতে হলে আমাদের কর্মীদের প্রতি একটি নিবেদন, ক্ষমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়। বিনয়ের কোন বিকল্প নাই। সমস্ত উন্নয়ন অর্জন ধুলিসাৎ হয়ে যায়, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে। সেজন্য আমাদের বিনয়ী হতে হবে। বিনয়ের কোন বিকল্প নাই।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন দেশের এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না, তখন স্কুলের খেলার মাঠেও ধান চাষ করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় তখন দেশে ১০ হাজার মেট্টিক টন অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদন হয়েছে। এরপরে দেশ আবার খাদ্য ঘাটতির জনপদে পরিণত হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় তখন সিঙ্গাপুর জেলেপল্লী থেকে আস্তে আস্তে মাথা উঁচু করছে, আর দক্ষিণ কোরিয়া ছিল আমাদের চেয়ে দরিদ্র জনপদ, আশির দশকের শেষ পর্যন্ত মালয়েশিয়ার শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করতে আসতো। ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে সিঙ্গাপুর কোরিয়া কিংবা মালয়েশিয়ার অনেক আগেই বাংলাদেশ হতো উন্নত দেশ। বিজ্ঞপ্তি