প্রভাত ডেস্ক »
‘স্বীকারোক্তি আদায়ে’ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে পিবিআই প্রধানসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন স্ত্রী হত্যার ঘটনায় বাদী থেকে আসামি হওয়া সাবেক এসপি বাবুল আক্তার।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. জেবুননেছা বেগমের আদালতে এ আবেদন করা হয়। বাবুল তার স্ত্রী মিতু খুনের ঘটনায় কারাগারে আটক থাকায় তার পক্ষে আইনজীবীরা আবেদনটি করেন। খবর বিডিনিউজের।
বাদীর আইনজীবী কফিল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বাদীকে তার স্ত্রী খুনের ঘটনায় পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ‘স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টায় বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের’ অভিযোগ এনে এ মামলার আর্জি জানানো হয়েছে।
ওই অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে কি না, আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর আদালত সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বর্তমান প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, পিবিআইর চট্টগ্রাম জেলার এসপি নাজমুল হাসান, চট্টগ্রাম মহানগরের এসপি নাঈমা সুলতানা, পিবিআইর তৎকালীন পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা, পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার সাবেক পরিদর্শক এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম ও পিবিআই পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবিরকে মামলায় বিবাদী করা হয়েছে।
আইনজীবী কফিল উদ্দিন বলেন, ‘বাদীর সঙ্গে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের চাকরি জীবনে দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক ছিল। স্ত্রী হত্যার ঘটনার পর তিনি নিজে বাদী হয়ে একটি মামলা করেছিলেন। এরপর পুলিশ বিভাগ থেকে বিদায় নেওয়ার সুযোগে ওই পুলিশ কর্মকর্তারা বাবুল আক্তারের স্বীকারোক্তি আদায়ে হেফাজতে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।’
অভিযোগে বলা হয়, মিতু হত্যার ঘটনায় গত বছরের ১২ মে বাবুল আক্তারের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। একই দিনে আরেকটি হত্যা মামলা করেন তার শ্বশুর। সে মামলায় বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
২০২১ সালের ১০ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত তাকে ‘আটকে রেখে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য হ্যান্ডকাফ পরিয়ে, ঘুমাতে না দিয়ে, গোসল করতে না দিয়ে অজু করার পানি না দিয়ে নির্যাতন’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে আর্জিতে।
আবেদনে বলা হয়, এক নম্বর আসামির (বনজ কুমার) ‘নির্দেশে’ বাবুলকে ‘অন্যায়ভাবে আটকে রেখে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাঞ্ছনাকর আচরণ ও নির্যাতন’ করা হয়েছে।
আইনজীবী কফিল জানান, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ১৫(১) ও ৫ (২) ধারায় এ অভিযোগ করা হয়েছে।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
হত্যাকা-ের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন সে সময় পুলিশ সুপার পদে থাকা বাবুল আক্তার।
মিতু হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে খোদ বাবুলের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে গত ১২ মে তার করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। এরপর সেদিনই বাবুলসহ ৯ জনকে আসামি করে নতুন হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ।
২৫ জানুয়ারি মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। ৬ মার্চ সেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আদালত। এখন নিজের করা মামলাতেই গ্রেফতার আছেন বাবুল।