সংবাদদাতা, আনোয়ারা »
ছুটির দিনে মিনি কক্সবাজার হিসেবে খ্যাত আনোয়ারা পারকি সমুদ্রসৈকত পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। শীত মৌসুমে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় এখানকার হোটেল, বিনোদন পার্ক ও রিসোর্টগুলো মুখরিত হয়ে উঠেছে। এতে পর্যটন ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। সপ্তাহের অন্য দিন গুলোতে পর্যটকের সংখ্যা কিছুটা কম দেখা গেলেও শুক্রবার, শনিবার হাজারো পর্যটক দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে আসেন সৈকতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করার জন্য।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সৈকত ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটন স্পটগুলোতে ভিড় জমিয়েছেন ভ্রমণপিপাসুরা। তাদের উল্লাসে মুখরিত রয়েছে দর্শনীয় স্থানগুলো। কেউ সমুদ্রের ঢেউ অবলোকন, আবার কেউ সমুদ্রের লোনা পানিতে গা ভাসিয়ে গোসল করছে। কেউ ঘোড়া দৌড়াচ্ছে, কেউ ঘুরে ঘুরে সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করছে, অনেকে বন্ধুদের সঙ্গে মেতেছে ফুটবলে, আবার কেউ ব্যস্ত সেলফিতে। সমস্ত পারকি বিচজুড়ে এ সমস্ত দৃশ্যই চোখে পড়ে।
বিচের ব্যবসায়ীরা জানান, বৃহস্পতিবার থেকে আশানুরূপভাবে পর্যটকদের আগমন বেড়েছে। এতদিন তেমন পর্যটক না আসায় অনেক কষ্টে দিন কাটিয়েছি। পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ায় আমরা স্বস্তিতে আছি।
চট্টগ্রামের ছোট পোল এলাকা থেকে ঘুরতে আসা মো. রিয়াজ নামের এক দর্শনার্থী জানান, ইতিপূর্বেও পারকি সমুদ্রসৈকতে আসা হয়েছে। তবে এবার তিনটা বাসে করে আমাদের মহল্লার ১শ ৫০জন এসেছি। এখানে গাড়ি পার্কিং এবং পিকনিক করার মতো খোলামেলা জায়গা থাকায় পর্যটকেরা আনন্দ উপভোগ করতে পারে। আর অন্যান্য জায়গা থেকে এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটা ভালো। পর্যটকদের তেমন হয়রানির শিকার হতে হয় না।
তৃষ্ণা হাসান নামের ঢাকা থেকে আগত আরেক পর্যটক বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে গতকাল এসেছি। চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে আজ পারকিতে এসেছি। আগামীকাল বান্দরবান যাবো। এখানকার পরিবেশ খুবই সুন্দর। তবে ঝাউগাছগুলো লুটিয়ে পড়ার কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অনেকটা ব্যাঘাত ঘটেছে।
জনি নামের বিচের এক ফটোগ্রাফার জানান, বিচে সবমিলিয়ে শতাধিক ফটোগ্রাফার আছে। অন্যান্য দিন একটু কম হলেও শুক্রবার, শনিবার এবং ছুটিরদিন গুলোতে ১২শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম হয়।
বিচ রক্ষণােেবক্ষণের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, পারকি সমুদ্রসৈকতের নিরাপত্তা এবং দেখ ভালের জন্য আমরা সবসময় উপস্থিত থাকি। গাড়ি পার্কিং থেকে শুরু করে বিচের আবর্জনা পরিষ্কার করাসহ সব ধরনের কাজকর্ম করার জন্য আমাদের লোক নিয়োগ রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কর্ণফুলী জোনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (এসি) আরিফ হোসাইন বলেন, আমরা বিচের শৃঙ্খলা ঠিক রাখতে সবসময় তৎপর থাকি। যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিচে বাইক নামায় তাদের জরিমানাসহ গাড়ি জব্দ করা হচ্ছে। এছাড়া পর্যটকদের যেকোনো অভিযোগ পেলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যে সমস্ত ফটোগ্রাফার এবং দোকানি পর্যটকদের হয়রানি করছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।