নিজস্ব প্রতিবেদক »
সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তির দেখা মিলছে। তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে বেড়ে যাওয়া চালের বাজার রয়েছে স্থিতিতে। বলা যায় সপ্তাহের ব্যবধানে ডাল মাছ, মাংস, আদা, রসুনের দামসহ প্রায়সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে তেমন কোন পরিবর্তন আসেনি।
গতকাল শুক্রবার নগরীর রেয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে পটল, ঢেঁড়স, কাকরোল বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি। যা গত দুই সপ্তাহ ধরে বিক্রি হয়েছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে। এক মাস আগের ১৫০ টাকার বেগুন ও করলাও মিলছে অর্ধেকের কম দামে। ১০০ টাকার বরবটি পাওয়া যাচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। আর কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে। তবে আলুর দর স্থিতিতে রয়েছে। কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়।
গত সপ্তাহে বেড়ে যাওয়া পচনশীল মসলাজাত পণ্য আদা, পেঁয়াজ ও রসুনের দর রয়েছে স্থিতিতে। বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ ও অন্য পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর আদা ও রসুন বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়।
অন্যদিকে, ইলিশের সরবরাহ বাড়ায় বাজারে অন্য মাছের চাহিদা কমেছে। কিন্তু সকল ধরনের মাছের দামে কোন পরিবর্তন আসেনি। বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫৫০ টাকায়। আবার ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ টাকায়। আর ১২০ থেকে ১৪০ টাকার লইট্যা মাছ বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। ১৫০ থেকে ১৭০ টাকার পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া বাজারে বিক্রি করছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা। আর মাইট্যা ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, পোয়া ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুই-কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর আর পাবদা বিক্রি হয়েছে মানভেদে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি। এছাড়া মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিতল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
মাছ ব্যবসায়ী কমল দাস বলেন, আবহাওয়া খারাপের আগে কিছু ট্রলারে মাছ ধরা পড়েছে। যার কারণে আড়তে ইলিশ মাছের সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। তবে খরচ বাড়ায় দাম কমেনি।
দামের হেরফের নেই মুরগি ও মাংসের বাজারে। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৭০ থেকে ১৭৫ ও সোনালি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দরে। গরু ও মহিষের মাংস বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। আর ছাগলের মাংস বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১৫০ টাকায়।
কিন্তু ডিম ও চালের বাজারের চিত্র ভিন্ন। গত ১ মাসে ডিমের ডজনে বেড়েছে ৫ টাকা। এখন প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা।
এদিকে গত তিন সপ্তাহ ধরে বাড়তে থাকা চালের বাজারে কোন পরিবর্তন আসেনি। বাজারে এখনো মোটা ও সরু চালের দামও কেজিপ্রতি ২ থেকে ৪ টাকা বাড়তি। নাজির ও মিনিকেট মানের সরু চাল বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। আর পাইজাম ও লতা মানের মাঝারি চাল বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। আর স্বর্না ও ইরি মানের চালের দাম কোন পরিবর্তন আসেনি। এই চাল বিক্রি হয়েছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়।
এ বিষয়ে চাল ব্যবসায়ী মো. জামাল হোসেন বলেন, চালের দাম এক মাস ধরে বাড়ছে। প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। মিলাররা ধান সংকটের অজুহাত দিচ্ছেন। উৎপাদন এলাকার মিল পর্যায়ে ধান-চালের মজুতের পরিমাণ তদারকি করলে আসল চিত্র বের হবে। সরকারের উচিত এখনই তদারকি বাড়ানো।
অপরদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি দাম কমতিতে। পেঁয়াজ, মাছ মাংসের দাম বাড়তির মধ্যে স্থিতিতে দেখা গেলেও গত এক মাস ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে প্রায়সব মুদিপণ্যের বাজার। বাজারে ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৪৭ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।