পদ্মা সেতুর ৩০ হাজার কোটি টাকা কোথায়?

বিক্ষোভ সমাবেশে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

‘পদ্মা সেতুতে বাড়তি ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। ১০ হাজার কোটি টাকার সেতু ৪০ হাজার কোটি টাকা। বাকি ৩০ হাজার কোটি টাকা কোথায়? আমরা জানি কোথায় গেছে। এগুলো সব বের হবে।’
গতকাল শুক্রবার বিকালে নগরীর পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর হত্যার হুমকির প্রতিবাদে নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, পদ্মা ব্রিজ থেকে নাকি বেগম খালেদা জিয়াকে ফেলে দেবে। আরে টাকাটা কার? ১০ হাজার কোটি টাকার ব্রিজ ৪০ হাজার কোটি টাকায় তৈরি করা হয়েছে। বাকি ৩০ হাজার কোটি টাকা কোথায় গেছে। বড় বড় কথা বলার আগে উত্তর দিতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা জানি কোথায় গেছে। এগুলো সব বের হবে। দুবাইয়ের কোন অ্যাকাউন্টে গেছে? অ্যামেরিকার কোন অ্যাকাউন্টে গেছে? কোন অ্যাকাউন্টে মালেশিয়ায় গেছে? সব জানি। কোন অ্যাকাউন্টে কানাডায় গেছে, কয়টা বাড়ি করা হয়েছে। সব জানি। কতগুলো প্রোপাইটি কিনেছেন? সব বের হবে।
শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তাকে ভয় পায় উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে নাকি ঠুস করে ফেলে দেবে। এর অনেকগুলো কারণ হতে পারে। একটি হলো খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার চেয়ে জনপ্রিয়। যিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এরশাদের পতন ঘটিয়েছেন। কিন্তু আপনি সেই এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। খালেদা জিয়া যখন সড়কে বের হবে, তখন লাখ লাখ মানুষ সমবেত হবে। সেটিকে আপনি ভয় পান। কারণ আপনি যখন সমাবেশ করতে যান, তখন পয়সা দিয়ে লোক আনলেও থাকতে চায় না।

ঋণের টাকায় পদ্মা সেতু করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পদ্মা ব্রিজের কথা বলছেন, আমরা কোনো ঋণ নেই নাই বলছেন; এই যে প্রতিবছর টাকা পরিশোধ করছেন, এটি কিসের টাকা পরিশোধ করছেন। প্রতিদিন পকেট থেকে টাকা বের করে পদ্মা ব্রিজ বানিয়েছেন। সব ঋণের টাকা। মিথ্যা কথা বলছেন জনগণের সঙ্গে। বিশ্বব্যাংক তাদের দুর্নীতির কারণে পদ্মা ব্রিজের প্রকল্প বাতিল করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। মামলা হওয়ার পরও বিচার করেনি সরকার।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, আওয়ামী লীগের চরিত্রই হচ্ছে জোর করে ক্ষমতায় থাকা। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও তারা জোর করে, সন্ত্রাস দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে বেগম খালেদা জিয়াকে টুস করে পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ শেখ হাসিনাকে টুস করে ক্ষমতা থেকে ফেলে দেবে। আজকের সমাবেশে আসার সময় আমাদের নেতাকর্মীদের আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। এখন থেকে যেখানে হামলা করবে সেখানে পাল্টা আঘাত করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দেওয়ার যে হুমকি দেওয়া হয়েছে তা রীতিমতো হত্যার হুমকি। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে শেখ হাসিনা যে ভাষায় কথা বলেছেন তা গোটা জাতির জন্য লজ্জাজনক। দেশবাসী তার কথায় বিস্মিত। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য যাবতীয় শিষ্টাচারকে অতিক্রম করেছে।

সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে।
নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের জনগণ একাধিকবার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি আপোসহীন।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, বিএনপি জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়। আর আওয়ামী লীগ জনগণের ভোট ডাকাতি ক্ষমতায় এসেছে।

নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটনের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন।

নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, নগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মিয়া ভোলা, অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ইউনুছ চৌধুরী, নুরুল আমিন, জসিম উদ্দীন শিকদার, নূর মোহাম্মদ, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, অ্যাডভোকেট আবু তাহের, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জামাল হোসেন, নগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহোদ, উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান জসিম, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, শ্রমিকদলের শেখ নুরুল্লাহ বাহার, মহিলাদলের মনোয়ারা বেগম মনি, জেলী চৌধুরী, নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিনসহ নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি