নিজস্ব প্রতিবেদক »
সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীকে গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার রাতে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের এ সংসদ সদস্যকে নগরীর খুলশী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাবের একটি দল। এরপরে তাকে নোয়াখালী নিয়ে যাওয়া হলে গতকাল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সাজ্জাদ হোসেন তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তথ্যটি নিশ্চিত করে নোয়াখালীর কোর্ট ইন্সপেক্টর শাহ আলম জানান, গ্রেফতারকৃত সাবেক এমপি একরামুলের বিরুদ্ধে নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা, একটি বিস্ফোরক ও অপহরণ মামলা, কবিরহাট থানায় একটি অস্ত্র মামলা ও সোনাইমুড়ী থানায় একটি হত্যা মামলাসহ মোট চারটি মামলা রয়েছে।
অপরদিকে, ঢাকার একটি থানায়ও তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
র্যাব সূত্র জানায়, নগরীর খুলশি এলাকা থেকে সাবেক এমপি একরামুল করিম চৌধুরীকে গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে ২৬ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার, দুই হাজার ১০০ সিঙ্গাপুরের মুদ্রা ও বাংলাদেশি ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
আওয়ামী লীগের এই নেতা রাজনীতিতে পারিবারিক বলয় সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নোয়াখালীর কবিরহাট ও সুবর্ণচরের বেশির ভাগ জনপ্রতিনিধি ছিলেন একরামুল করিম চৌধুরীর স্বজন। তার স্ত্রী কামরুন নাহার শিউলি ছিলেন কবিরহাট উপজেলার চেয়ারম্যান। ছেলে আতাহার ইসরাক শাবাব চৌধুরী সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হন সবশেষ উপজেলা নির্বাচনে। ভাগনে জহিরুল হক রায়হান ১৫ বছর ছিলেন পৌর মেয়র। আর ভাই হাজি মোহাম্মদ ইলিয়াস ছিলেন সুন্দলপুরের ইউপি চেয়ারম্যান। আরেক ভাই হাজি মোহাম্মদ ইব্রাহিম কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তার বেয়াই ঢাকার সাবেক আলোচিত সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম।
তাছাড়া প্রভাবশালী ও আলোচিত এ নেতা এক সময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠজন হলেও পরবর্তীকালে তার সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দেয়। ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই মির্জা কাদেরের সঙ্গে বিভিন্ন সময় তার বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে। এছাড়া এলাকায় ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অপকর্মের কারণে বারবার আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
একরামুল করিম চৌধুরী ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।