নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রামের জেএমসেন হলের পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টা ও ব্যানার-পোস্টার ছেঁড়াসহ পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় যুব অধিকার পরিষদের সাতজনের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শুক্রবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত শুনানি শেষে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন এ কথা জানান।
তিনি বলেন, এর আগে আসামিদের সাত দিনের রিমান্ডে আনার আবেদন করেছিলাম আদালতে। আদালত শুনানি শেষে সাতজনের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গ্রেফতার বাকি তিনজনের বয়স ১৯ বছরের কমে হওয়ায় রিমান্ড চাওয়া হয়নি।
এর আগে জেএম সেন হল পূজা মণ্ডপে হামলার ঘটনায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের নেতৃত্বাধীন যুব অধিকার পরিষদের তিন নেতাসহ দশজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলছেন, যুব অধিকার পরিষদের চট্টগ্রামের ওই নেতাদের ‘পরিকল্পনাতেই’ ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীর দিনে পূজা মণ্ডপে হামলা হয়েছিল।
জানা গেছে, গোপন বৈঠকে পরিকল্পনা ও হামলার ছক করে জেএমসেন হল পূজা মণ্ডপে হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। হামলায় নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের নেতাদের গ্রেফতারে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে নগর ও জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, যুব অধিকার পরিষদ নগরের আহ্বায়ক মো. নাসির, সদস্য সচিব প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান, নগর ছাত্র অধিকার আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক মো. ইমন, বায়েজিদ বোস্তামী থানা আহ্বায়ক মো. রাসেল, সংগঠনের কর্মী হাবিবুল্লাহ মিজান, ইয়ার মোহাম্মদ, মো. গিয়াস উদ্দিন, মো. মিজান, ইয়াসিন আরাফাত ও বাকলিয়ার বৌ বাজার কুমিল্লা হোটেলের ম্যানেজার ইমরান হোসেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ছাত্রশিবির থেকে যুব অধিকার পরিষদে যুক্ত হন হামলায় নেতৃত্বদানকারীরা। আগে ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তারা। হামলার আগের দিন গোপন বৈঠকে পরিকল্পনা ও হামলার ছক করে জেএম সেন হল পূজা মণ্ডপে হামলা করা হয়েছে। কুমিল্লায় মণ্ডপের ঘটনার পর বৈঠকে বসেন যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা। এতে বিজয়া দশমীর দিন জুমার নামাজের পর আন্দরকিল্লাহ শাহী জামে মসজিদ ও রিয়াজ উদ্দিন বাজার থেকে দুইটি মিছিল বের করার সিদ্ধান্ত নেন। তাদের পরিকল্পিত হামলায় সাধারণ মুসল্লি, টেরিবাজার ও রিয়াজ উদ্দিন বাজার দোকান কর্মচারীদের উসকানি দিয়ে যুক্ত করে নেন।
শুধু তাই নয় তাদের পরিল্পনায় ছিল বিএনপি ক্যাডার মোহাম্মদ হানিফও। তিনি জেএম সেন হল হামলা চেষ্টা মামলার দ্বিতীয় আসামি। পূর্বে তার বিরুদ্ধে রয়েছে বেশ কিছু মামলা। শুক্রবার বিজয়া দশমীতে পরিকল্পনা মাফিক কাজ করে গেছে।
কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন জানান, ‘সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ, গ্রেফতার আসামিদের ১৬৪ ধারার জবানবন্দি যুবছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ ১০ জনকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়েছে। হামলার নেপথ্যে পরিকল্পনাকারী, উসকানিদাতা ও নেতৃত্বদাতা হিসেবে তাদের নাম উঠে এসেছে। শুধু বিএনপি জামায়াত নয়, সরকার বিরোধী বিভিন্ন চক্রকে কাজে লাগিয়েছেন তারা। তাদের মূল পরিকল্পনা ছিল সাধারণ মুসল্লীদের উত্তেজিত করে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা।
উল্লেখ্য, ১৬ অক্টোবর জুমার নামাজের পর জেএমসেন হল পূজামণ্ডপে হামলা চেষ্টা করা হয়। এতে পুলিশ বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় ৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরো অর্ধসহস্রাধিক।