সুপ্রভাত ডেস্ক »
আশা করি, যারা বাংলাদেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করছে এবং যারা নির্বাচনকে প্রতিহত করার অপচেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘এনএএন টিভি’ নামে অনলাইন নিউজ পোর্টালের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যারা সময়ে সময়ে জাতিকে বুদ্ধি দেয় তারা এখন কোথায়? কাউকে ঘুষি মারলেও তারা বিবৃতি দেয়। বরিশালে একজনকে ঘুষি মেরেছে তাতেও বিবৃতি দিয়েছে, গুলশানে একজনকে ধাওয়া করেছে তাতেও বিবৃতি দিয়েছে। তারা এখন কোথায়? এখন যে মানুষ পুড়িয়ে মারছে, ওনারা কোথায় হারিয়ে গেলেন? জনগণ তাদের খুঁজছে। ওনাদের বুদ্ধি কি এখন লোপ পেয়েছে? নাকি তারা বুদ্ধি করে চুপ করে আছেন। ২৮ অক্টোবর সাংবাদিকদের পেটানোর ঘটনায় ওনারা কোনও বিবৃতি দেননি। শুধু বাংলাদেশে না, কিছু কিছু আন্তর্জাতিক বিবৃতিজীবীও আছে। এখন ওনারা কোথায়?’
তিনি বলেন, ‘গাজায় পাখি শিকার করার মতো মানুষ শিকার করা হচ্ছে। হায়েনার হিংস্রতাকে ম্লান করে দিয়ে ইসরাইলি বাহিনী যেভাবে মানুষ হত্যা করছে, সেটার বিরুদ্ধে অ্যামেনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল এখন কোথায়, এটা আমরা জানতে চাই। একটু আগে দেখলাম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেসব ইসরায়েলি ফিলিস্তিনিদের জায়গার ওপর অবৈধভাবে বসতি স্থাপন করছে, তাদের বিরুদ্ধে ভিসা স্যাংশন দিয়েছে আশা করবো, যারা বাংলাদেশে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করছে এবং যারা নির্বাচনকে প্রতিহত করার অপচেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধেও তারা (যুক্তরাষ্ট্র) ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেবে।’ খবর বাংলাট্রিবিউন।
বিএনপির সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যা করা হচ্ছে চোরাগোপ্তা হামলা, পেট্রোল বোমা মারা, মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা, এগুলো কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে না। ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ এই ঘটনাগুলোকে বর্ণনা করার জন্য যথেষ্ট নয়। গত ২৮ তারিখ যেভাবে পিটিয়ে পুলিশকে হত্যা করা হয়েছে, বর্বরভাবে সাংবাদিককে পেটানো হয়েছে। সাপ পেটানোর সময় মানুষ এ রকম করে কিনা সন্দেহ আছে। তারা সেই কাজটি করেছে। গণমাধ্যমের সবাই যদি এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন, তাহলে এ কাজ তারা করতে পারবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে যত ধরনের হানাহানি সৃষ্টি হয়েছে, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে সবগুলোর পেছনে ভুয়া অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দায়ী। নাসিরনগর, রামু, কুমিল্লা, বরিশালের ঘটনায় ভুয়া অনলাউন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দায়ী। এসব ব্যাপারে আমাদের এক্সট্রা কেয়ারফুল হতে হবে। না হলে এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটবে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এসব আমরা মোকাবিলা করেছি এবং যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিল, তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’
তারেক রহমানকে উদ্দেশ করে সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেন, ‘ওর মায়ের জন্য দরদ নাই ও দেশের প্রতি কী দরদ দেখাবে? ওরা দেশটাকে ধ্বংস করতে চায়। আগামী ৯-১০ বছর পরে আমরা যদি বেঁচে থাকি, তাহলে দেখবো বঙ্গবন্ধুর প্রজন্ম যারা আছে, তারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হবে, ব্রিটেনেরও প্রধানমন্ত্রী হবে। এটা আমার বিশ্বাস। এই যোগ্যতা ও দক্ষতা তাদের আছে। তাহলে এই যোগ্যতা কি তারেক রহমানের নাই? অবশ্যই তার যোগ্যতা আছে।’
ইতিহাসে দুটি জিনিস থাকে, একটা হচ্ছে- নায়ক আরেকটা হচ্ছে খলনায়ক। নায়ক হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর প্রজন্ম, আর খলনায়ক হচ্ছে তারেক রহমান। সে খলনায়ক হিসেবে পারফেক্ট ব্যক্তি। সে কেন খলনায়ক? কারণ, সে ক্ষমতায় থেকে ২১ আগস্টের ঘটনা ঘটিয়েছে। জাহাজ ভরে অস্ত্র আনিয়েছে। উলফাদের ট্রেনিং দেওয়াইছে, আইএস এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে তালেবানদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করিয়েছে। ৫০০ মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। সে এখনও শেখ হাসিনাকে মারার চেষ্টা করে যাচ্ছে। একারণেই সে হচ্ছে পারফেক্ট খলনায়ক।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারেক রহমানের ভবিষ্যৎ হবে এরশাদ সিকদার, কিংবা ভারতের ছোটা শাকিলের মতো। ওদের নামের সঙ্গে তার নাম থাকবে। দাউদ ইব্রাহিম পর্যন্ত যেতে পারবে না। ও নিচেই থাকবে। ও ছোটা শাকিলদের মতোই থাকবে এবং অবশ্যই একদিন খলনায়ক থেকে মহাখলনায়ক হবে।’
এনএএন টিভির সম্পাদক ও প্রকাশক সাবিহা মুবাশশিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশের ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান শ্যামল, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড আব ট্রাস্টির ট্রেজারার তানভির হায়দার ভূইয়া প্রমুখ।