চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, কিশোর অপরাধ দমন, পাহাড় কাটা রোধ, নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, রাজনৈতিক সহিংসতা প্রতিরোধসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য আইনশৃঙ্খলা অবনতির ঝুঁকি মোকাবিলায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা জোরদারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
রোববার (১০ আগস্ট) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বিভিন্ন থানায় লুণ্ঠিত অবৈধ অস্ত্র পুনরুদ্ধার, পূর্বে ইস্যুকৃত অস্ত্রের বৈধতা যাচাই, অযোগ্য ব্যক্তির লাইসেন্স বাতিল এবং সব ধরনের অস্ত্রের ওপর গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।
গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতিতে মামলা নিষ্পত্তি ব্যাহত হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদকে আরও সক্রিয় করে জনসেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও রেলপথে মাদক চোরাচালান রোধে টাস্কফোর্স অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
কিশোর অপরাধ ও কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, অনিবন্ধিত সিএনজি শনাক্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণ, চিহ্নিত স্থানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি পেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে- এ মর্মে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া উচ্ছেদ অভিযান, বালি উত্তোলন বন্ধ, পাহাড় কাটা রোধ, খুন-ডাকাতি-চাঁদাবাজি প্রতিরোধ, নারী ও শিশু নির্যাতন রোধ, রেল ও সড়কপথে মাদক পাচার প্রতিরোধ, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ এবং জানমাল রক্ষায় সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। যানজট নিরসনে ফুটপাত দখল করে দোকান স্থাপন বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।
কৃষি খাতে ব্লক সুপারভাইজারদের দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়, যাতে সার ও বীজ বিতরণ এবং কৃষি পরামর্শে সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়ে কৃষকদের ক্ষতি রোধ করা যায়। রাউজানসহ জেলার সকল ঝুকিপূর্ণ এলাকায় রাজনৈতিক অপতৎপরতা নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
জন্মাষ্টমী ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষ্যে যানজট নিরসনে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন এবং অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়। পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত অভিযান পরিচালনারও আহ্বান জানানো হয়।
সভায় জেলা ও মহানগরের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।