নিজস্ব প্রতিবেদক »
নিরাপত্তা ইস্যুকে প্রাধান্য দিয়ে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর পরিদর্শন করলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে মাতারবাড়ি পৌঁছার পর বিকাল ৫টা পর্যন্ত মাতারবাড়ি এলাকায় নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দর, কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, এলএনজি টার্মিনাল এবং সড়ক ও জনপথের প্রকল্পগুলো দেখেন এবং খোঁজখবর নেন। তবে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মাতারবাড়ি যাওয়ার কথা থাকলেও প্রতিমন্ত্রীর শ্বশুরের মৃত্যুর কারণে তিনি যেতে পারেননি।
দিনভর তিনি কি দেখলেন এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে সেখানে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১২ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের টিম নিয়ে মাতারবাড়ি পরিদর্শনে গেলেও সেখানে যাওয়া প্রতিনিধিদলের অধিকাংশই ছিলেন নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট শীর্ষ ব্যক্তিরা। যেহেতু মাতারবাড়ি ঘিরে গভীর সমুদ্র বন্দর, পেট্রোবাংলার এলএনজি টার্মিনাল, কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। তাই এসব প্রকল্পে নিরাপত্তা ইস্যুকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিনিধিদের নিয়ে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর ও কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প ঘুরে দেখেন। পরবর্তীতে কয়লা বিদ্যুতের সাইট অফিসে মাতারবাড়ি এলাকায় চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন প্রত্যক্ষ করেন। এসময় মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মীর জাহিদ হাসান। তিনি প্রকল্পের বিভিন্ন দিক উপস্থাপন করেন। এছাড়া কয়লা বিদ্যুতের বিভিন্ন দিক উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, এলএনজি টার্মিনাল বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন ইস্টার্ন রিফাইনারির শরীফ হাসান এবং সড়ক ও জনপথের ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক ফজলে রাব্বি।
এসব প্রকল্পের পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনের সময়ও মন্ত্রী এবং উপস্থিত নেতৃবৃন্দ নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। এছাড়া উন্মুক্ত আলোচনার পর প্রতিনিধিদলের সাথে বিভিন্ন সংস্থা প্রধানগণ একান্তে বৈঠকও করেন বলে জানা গেছে।
এদিকে মন্ত্রীর পরিদর্শনের সময় স্থানীয় অধিবাসীরা ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে তাদের দাবি উপস্থাপন করেন। এবিষয়ে স্থানীয় মাতারবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটিতে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের নাম অর্ন্তভুক্তির দাবি জানান। এসময় মন্ত্রী পরিষদ সচিব আশ্বস্ত করেন এবং আগামীকাল ( বুধবার) তদন্ত কমিটির সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে তদন্তে যাবেন বলে জানান।
জানা যায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে পরিদর্শনে গিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সহকারী নৌ প্রধান, ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক, এনএসআইয়ের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহানসহ বন্দর কর্তৃপক্ষের উর্ধতন কর্মকর্তাগন, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ, কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, পেট্রোবাংলা এবং সড়ক ও জনপথের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।