সুপ্রভাত ডেস্ক »
বাকস্বাধীনতা এবং স্বাধীন সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করার নিবর্তনমূলক বিশেষ আইনগুলো অবিলম্বে বাতিল করার দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।
সোমবার সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে সাম্প্রতিক গণআন্দোলনে আহত ও নিহত সাংবাদিকসহ ছাত্র, শিক্ষক, যুবক, সাধারণ নাগরিক ও পুলিশ সদস্য যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ।
বিবৃতিতে বলা হয়, আন্দোলনকে ঘিরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মামলাসহ অতীতের সকল হয়রানিমূলক মামলা বাতিল ও প্রত্যাহার করতে হবে। বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা আইন ও আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত সকল মামলা প্রত্যাহার ও বাতিল করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, গণ–আন্দোলনের সময় সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেল অফিস আক্রান্ত হয়েছে, সম্পদ ধ্বংস করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনাকে সম্পাদক পরিষদ সমর্থন করে না। একইসঙ্গে পেশাদারত্ব বাদ দিয়ে নীতিবিবর্জিত ও লেজুরবৃত্তির সাংবাদিকতা বর্জনীয় বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।
বিগত সরকার বাকস্বাধীনতা, সৃজনশীলতা এবং স্বাধীন সংবাদপত্র শিল্পের কণ্ঠরোধ করতে ও নিয়ন্ত্রিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিল। বিশেষ করে বেশ কয়েকটি নিবর্তনমূলক আইন করার উদ্যোগ নিয়েছিল। এসব আইনের মধ্যে রয়েছে—উপাত্ত সুরক্ষা আইন (খসড়া) ২০২২, ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ওটিটি রেগুলেশন ২০২১ (খসড়া), গণমাধ্যম কর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন ২০২২ (খসড়া), জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ২০১৭, দ্য প্রেস কাউন্সিল (সংশোধন) অ্যাক্ট, ২০২২ (খসড়া)।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রস্তাবিত এ বিশেষ আইনগুলো অবিলম্বে বাতিল করতে হবে এবং অতীতের মতো সংবাদপত্রে সরকারি ও বেসরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়ার ব্যাপারে বিধিনিষেধ আরোপের প্রচেষ্টা বন্ধ করতে হবে। সরকারি সংস্থা ডিএফপির সব কার্যক্রম স্বচ্ছ ও প্রকাশ্য হতে হবে। প্রেস কাউন্সিলকে পুনর্গঠন করে কার্যকর সংস্থায় পরিণত করতে হবে। সর্বোপরি স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধকতা দূর করার আহ্বান জানায় সম্পাদক পরিষদ।
গত ১০ আগস্ট সম্পাদক পরিষদের এক সভায় সাম্প্রতিক বিষয়ে আলোচনাসহ এসব আহ্বান জানানো হয় বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডেইলি স্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম। সভায় উপস্থিত ছিলেন ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, নিউএজ সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নুরুল কবীর, ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির, বণিক বার্তা সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের যুগ্ম–সম্পাদক জাফর সোবহান, নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, সমকাল সম্পাদক আলমগীর হোসেন, দেশ রূপান্তর সম্পাদক মোস্তফা মামুন, প্রতিদিনের বাংলাদেশ সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, এবং সংবাদ নির্বাহী সম্পাদক শাহরিয়ার করিম।
যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম জুমে সভায় অংশ নেন দৈনিক পূর্বকোণ সম্পাদক ড. এম রমিজউদ্দিন চৌধুরী এবং সুপ্রভাত বাংলাদেশ সম্পাদক রুশো মাহমুদ।