বাসস :
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি নিজেই গণতন্ত্রের জন্য বাধা।’
তিনি আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবাললয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সম্পাদক পরিষদের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের একথা বলেন।
বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য ‘গণতন্ত্র পুণরুদ্ধারই বিএনপির চ্যালেঞ্জ’ এ সম্পর্কে সাংবাদিকরা তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘বিএনপি’র আভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র কতটুকু আছে, সেটি বড় প্রশ্ন। এ দলের (বিএনপির) কেন্দ্রীয় কমিটির আকার যদি দেখেন, তাহলে দেখবেন এই কমিটির বৈঠক করার জন্য-তো হল ভাড়া নিতে হবে। আমি মনে করি, বিএনপির আভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
ড. হাছান বলেন, ‘একইসাথে বলবো, যুদ্ধাপরাধীদের যে দল দলগতভাবে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, সেই দল হচ্ছে বিএনপির প্রধান সহযোগী এবং যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গিগোষ্ঠীকে বিএনপি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে, আর তারা যদি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলে, তাহলে তো তাদের এ পথ থেকে সরে আসতে হবে।’
নিবন্ধনে অগ্রাধিকার পাবে দৈনিক পত্রিকার অনলাইন ভার্সন : তথ্যমন্ত্রী সম্পাদক পরিষদের সাথে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের বলেন, অনলাইন নিউজপোর্টাল নিবন্ধনের ক্ষেত্রে দৈনিক পত্রিকাগুলোর অনলাইন অগ্রাধিকার পাবে।
আজকের বৈঠকটিকে সম্পাদক পরিষদের সাথে নিয়মিত বৈঠকের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘আমরা সবসময়ই সংবাদপত্র ও সার্বিকভাবে গণমাধ্যমের বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করি। আজকেও তাই হয়েছে। করোনাকালে সংবাদপত্র তাদের কর্মযজ্ঞ অব্যাহত রাখায় আমি তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। সেই সাথে সাংবাদিকদের জন্যও এই করোনাকালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।’
বৈঠকে দৈনিক পত্রিকাগুলোর অনলাইন ভার্সন নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দৈনিক পত্রিকার অনলাইন ভার্সনগুলোকে যাতে সহসাই রেজিস্ট্রেশন দেয়া হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। কারণ, পত্রিকার ডিক্লারেশনের সময় এগুলোর তদন্ত হয়েছে। আমরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে পত্রিকাগুলোর অনলাইন ভার্সন রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করবো।’
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পত্র-পত্রিকার বকেয়া বিলের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কয়েক শ’ কোটি টাকার বিল বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তরে আটকে আছে। সেটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে, যাতে বিলগুলো তাড়াতাড়ি বিভিন্ন দপ্তরগুলো ছাড়করে। তিনি মনে করেন এ বিলগুলো সহসা দিযে দেয়া প্রয়োজন। এখন করোনাকালে পত্রপত্রিকায় নানা সংকট আছে। যেহেতু দিতেই হবে, সুতরাং এখন দিলে সেটি কাজে বেশি লাগবে।
তথ্যমন্ত্রী জানান, ইতোপূর্বে সব মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরে পত্রপত্রিকার বিল ছাড় করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তাগিদপত্র দেয়া হয়েছিল এবং সেটির আলোকে তথ্য মন্ত্রণালয়ও একটি তাগিদপত্র দিয়েছিল, কিছু বিল ছাড়ও হয়েছিল। কিন্তু বকেয়ার তুলনায় ছাড়ের পরিমাণ নগণ্য হওয়ায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষথেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তরকে আবার একটি তাগিদপত্র দেয়া হবে বলেও ড. হাছান মাহমুদ উল্লেখ করেন।
তথ্যসচিব কামরুন নাহার এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায়, দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ডেইলি সানের সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, দৈনিক সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি এবং দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনীরুজ্জামান অংশ নেন।
বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম এসময় সাংবাদিকদের বলেন, গণমাধ্যমের অগ্রযাত্রার জন্য রাষ্ট্রীয় সহযোগিতার বিকল্প নেই। বিশেষ করে করোনা মহামারির এসময়ে বিশেষ সহযোগিতা প্রয়োজন। আজকের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দৈনিক পত্রিকাগুলোর অনলাইন ভার্সন দ্রুত নিবন্ধনের আওতায় আনা এবং সংবাদপত্রগুলোর বকেয়া বিল পরিশোধের বিষয়ে আমরা তথ্যমন্ত্রীর সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছি।’