সুপ্রভাত স্পোর্টস ডেস্ক »
১৬ বছরে টানা ১৮ ওয়ানডে হারের পর অবশেষে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের মাঠে জয়ের দেখা পেল । তানজিম হাসান সাকিব, সৌম্য সরকার, শরিফুল ইসলামের পেসের ঝাঁজে কিউইদের মাত্র ৯৮ রানে গুটিয়ে নাজমুল হোসেন শান্তর দল ম্যাচ জিতল অনায়াসে।
ঘরের মাঠে টানা সর্বোচ্চ ১৮ ওয়ানডে জয়ের রেকর্ডটা অস্ট্রেলিয়ার। বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতলেই নিউজিল্যান্ড সে রেকর্ড স্পর্শ করবে। সিরিজ জয়ের কাজটা প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সে কাজটা আগেই সেরে ফেলেছে কিউইরা। শেষ ম্যাচে তাদের লক্ষ্য ওয়াইট ওয়াশ এবং সংখ্যাটাকে ১৭ থেকে ১৮ তে নেওয়া, অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ডে ভাগ বসানো।
শনিবার নেপিয়ারে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ছিল অনেকটা বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানোর লড়াই। আরেকবার হোয়াইটওয়াশ থেকে বাঁচার মিশন। নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কের কন্ডিশনকে কথায় বলা হয় পেস স্বর্গ। বাংলাদেশের পেসাররা তা মিটিয়েছেন নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিপক্ষের ১০ উইকেটই নিয়ে। শরীফুল-তানজিমের আগুনে বোলিংয়ে কিউইদের ইনিংস থামে ৩১.৪ ওভারে ৯৮ রানে। ২০০৭ সালের পর ঘরের মাঠে কিউইদের যেটি সর্বনিম্ন স্কোর। স্বাগতিক দলকে রীতিমতো ৯ উইকেটে উড়িয়ে দিল সফরকারীরা। নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে হারাল বাংলাদেশ।
আগে ব্যাটিং পেয়ে ৩১.৪ ওভারে মাত্র ৯৮ রানে গুটিয়ে যাওয়া নিউজিল্যান্ডের পুঁজি ১৫.১ ওভারেই তুলে নেয় লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। দলকে ম্যাচ জিতিয়ে ৪২ বলে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক শান্ত। তার আগে কাজের কাজ করে দিয়েছেন তিন পেসার।
১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সবচেয়ে সফল তানজিম সাকিব, আগের ম্যাচে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করা সৌম্য সরকার বোলিং দিয়েও নিজের ফিরে আসা করেন উজ্জ্বল। ১৮ রানে তিনি নেন ৩ উইকেট। শরিফুল বাঁহাতি পেসে ২২ রানে ধরেন তিন শিকার।
৯৮ রান তাড়ায় নেমে সতর্ক শুরু আনেন দুই ওপেনার সৌম্য আর এনামুল হক বিজয়। প্রথম চার ওভার পার করে দেওয়ার পর সৌম্যের চোখে কিছু একটা পড়ল। পানি দিয়ে তা সরানোর চেষ্টায় হলেন ব্যর্থ, ফিজিও আই ড্রপ দিলেও কাজ হলো। মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন ১৬ বলে ৪ রান করে।
এরপর অধিনায়ক শান্ত নেমে দ্রুতই বের করতে থাকলেন রান। বিজয় ছিলেন আগ্রাসী মেজাজে। মেঘ সরে নেপিয়ারে তখন রোদের দেখা। সকালের পেসের স্যুইংও গায়েব। আদর্শ কন্ডিশন দেখে মামুলি রান তাড়া অনায়াসে তুলতে লাগল বাংলাদেশ।
বাউন্ডারির ঝলকে দলকে জেতার কাছে নিয়ে ফেরেন বিজয়। ৭ চারে ৩৩ বলে ৩৭ করে তিনি ধরা দেন কিপারের গ্লাভসে। দলের রান তখন ৮৪, ওই উইকেট পতন তাই বিশেষ কোন প্রভাব তৈরি করেনি ম্যাচের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড : ৩১.৪ ওভারে ৯৮ (ইয়াং ২৬, ল্যাথাম ২১, ক্লার্কসন ১৬, অশোক ১০; তানজিম ৩/১৪, সৌম্য ৩/১৮, শরীফুল ৩/২২, মোস্তাফিজ ১/৩৬)
বাংলাদেশ : ১৫.১ ওভারে ৯৯/১ (নাজমুল ৫১*, এনামুল ৩৭, সৌম্য ৪ আহত*, লিটন ১*; ও’রুরক ১/৩৩)
ফল : বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : তানজিম হাসান।
সিরিজ : নিউজিল্যান্ড ২–১ ব্যবধানে জয়ী।