নাফনদীর ওপারে ভাসছে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা!

রাখাইনে রোহিঙ্গারা গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিনিধি, টেকনাফ »

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নাফনদীর ওপারে ভাসছে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকা। সীমান্তের বসবাসরত লোকজনের ধারণা, নৌকায় অপেক্ষমান রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের মংডু শহরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়েছে। বিতাড়িত মিয়ামারের মংডু এলাকায় রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশের জন্য চেষ্টা করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি ও যুদ্ধের তীব্রতা বাড়ায় বিপদে পড়েছেন সেখানকার রোহিঙ্গারা। এর মধ্যে নাফনদীর ওপারে মংডু শহর প্রবেশের খালের মোহনায় রোহিঙ্গা বোঝাই কয়েকটি নৌকা ভাসতে দেখেছেন এপারের লোকজন।

নাফনদীর সীমান্তের লোকজনের ধারণা, মঙ্গলবার বিকালের পর থেকে দেখা যাওয়া ওই রোহিঙ্গারা মংডু শহরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। তারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাতে পারেন বলেও আশঙ্কা করছেন সীমান্ত এলাকার জনপ্রতিনিধিরা।

এদিকে দুদিন বন্ধ থাকার পর ২৫ জুন মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল ৯ টা পর্যন্ত পুনরায় গোলাগুলির বিকট শব্দ শুনতে পাচ্ছেন টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দারা।

টেকনাফ পৌরসভার জালিয়া পাড়া এলাকার নাফনদীর সীমান্তে বসবাসরত লোকজন বলছেন, এ রকম বিকট শব্দ আর কখনও শোনেননি তারা। সারারাত ধরে কেউ ঘুমাতে পারেননি। মুহুর্মুহু কেঁপে উঠছে বাড়িঘর।

টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এবং সাবরাংয়ের পূর্বে নাফ নদীর ওপারে মংডু শহর। ওই মংডু শহরের নাফ নদী দিয়ে প্রবেশের পথে রয়েছে খায়েনখালী খাল।

ওই খালের মোহনায় মঙ্গলবার বিকালের পর থেকে ২৬ জুন সন্ধ্যা পর্যন্ত রোহিঙ্গা বোঝাই কয়েকটি নৌকা দেখা গেছে বলে জানান সীমান্তের লোকজন। তাদের ধারণা, নৌকায় অপেক্ষামান রোহিঙ্গারা মংডু শহরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে বিতাড়িত হয়েছে।

এ ব্যাপারে সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, গত দুই দিন বন্ধ থাকার পর ২৫ জুন রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত আবারও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা  গেছে। নাফনদীর ওপারে নৌকায় রোহিঙ্গাদেরও দেখা গেছে, এমনটা বলা হচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত এলাকার লোকজনকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।”

টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, নাফনদীর সীমান্তের ওপারে মংডু শহরের খায়েনখালী খালটি নাফনদীর মোহনায়। ওপারে মর্টার শেল, গ্রেনেড, বোমা বিস্ফোরণের শব্দের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের অবস্থান শোনা যাচ্ছে। তবে নাফনদী অতিক্রম করে মিয়ানমারের লোকজনের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে সতর্ক অবস্থায় আছে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড। গোয়েন্দা নজরদারি, টহলও বাড়ানো হয়েছে।”

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, “মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে আবারও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশের সীমান্তে নাফনদীর পয়েন্ট এলাকায় বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।”

রাখাইনে রোহিঙ্গারা গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে। ছবি-সংগৃহীত