নগরের ভাঙা সড়ক মেরামত হবে কবে

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জুলাই মাসে করা তালিকা অনুযায়ী, নগরের ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৬টি ওয়ার্ডে ১ লক্ষ ২১ হাজার ৮১৪ বর্গমটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এ বর্ষায়। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের প্রস্থ ১০ ফুট ধরলে ক্ষতির পরিমাণ হবে প্রায় ৪২ কিলোমিটার। পুরো শহরকে ৬টি অঞ্চলে ভাগ করে প্রস্তুতকৃত ওই তালিকা অনুযায়ী, ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী, ৩ নং পাঁচলাইশ, ৩৬ নং গোসাইলডাঙ্গা, ২৬ নং উত্তর হালিশহর এবং ৩৭ নং মধ্য হালিশহর; এই পাঁচ ওয়ার্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক নেই। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ২ নম্বর অঞ্চলের অধীন ৫ নং মোহরা ওয়ার্ডে। যার পরিমাণ ২৫ হাজার ৯৭৪ বর্গমিটার। এছাড়া ৪ নং অঞ্চলের অধীন দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে সবচেয়ে কম ৪১ দশমিক ৮২ বর্গমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্ষাকাল শেষ হলেও এখন পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারে হাত দেয়নি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

এসব সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বিটুমিন, ইট, বালি ওঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট–বড় গর্ত। এতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এরমধ্যে বিমানবন্দর সড়ক, মুরাদপুর–অক্সিজেন সড়ক, জামাল খান থেকে আসকারদীঘি, ওয়াসা, নিমতলা, বারিকবিল্ডিং, আগ্রাবাদসহ বিভিন্ন জায়গায় সড়ক বেহাল । সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের যে অংশে র‌্যাম্প নামাচ্ছে সেখানকার অবস্থা আরও খারাপ। এছাড়া হালিশহরসহ কিছু জায়গায় ওয়াসার খোঁড়াখুড়ির কারণে বেহাল হচ্ছে সড়ক।
সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অ্যাসফল্ট প্ল্যান্ট থেকে তৈরি মিক্সার (ইট, বালি, বিটুমিনের মিশ্রণ) দিয়ে বর্ষায় ক্ষতি হওয়া সড়কের ছোট ছোট গর্ত ভরাট করে থাকে। সংস্থাটির ভাষায় এটি প্যাঁচওয়ার্ক। গত ২৭ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে এ প্যাঁচওয়ার্ক। সর্বশেষ ২ সেপ্টেম্বর প্যাঁচওয়ার্ক করেছিল সংস্থাটি। অবশ্য প্যাঁচওয়ার্ক না করলেও মাঝেমেধ্যে সড়কের বিভিন্ন গর্তে ইটের খোয়া দিয়ে সাময়িক ভোগান্তি লাঘবের চেষ্টা করে সংস্থাটি।
সরকার পতনের পর ইস্টার্ন রিফাইনারির প্ল্যান্ট বন্ধ থাকায় মিক্সার তৈরির উপকরণ বিটুমিন সংগ্রহ করতে পারেনি বলে দাবি করেছে চসিক। ফলে কাজ বন্ধ ছিল। মাঝখানে উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদার থেকে বিটুমিন ধার করে কয়েকদিন প্যাঁচওয়ার্ক করে। অবশ্য ইস্টার্ন রিফাইনারির প্ল্যান্ট চালুর পর গত কয়েকদিন আগে ৪০ টন বিটুমিন সংগ্রহ করা হয়। এ অবস্থায় আগামী রোববার থেকে বৃষ্টি না হলে আবারো প্যাঁচওয়ার্কের মাধ্যমে সড়ক সংস্কার করার পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েচে চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহারের অভিযোগ অনেক পুরোনো। তার ওপর যে পরিমাণ বিটুমিন ব্যবহার করা দরকার সে পরিমাণ করা হয় না। ফলে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সড়কগুলোর ঢালাই উঠে গিয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সিটি করপোরেশনের অনিয়মের মধ্যে এটি অন্যতম। কাজেই এসব বিষয়ে এখন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সময় হয়েছে। সড়ক নির্মাণের পর কয়বছর সংস্কারে হাত দিতে হবে না তা ঠিকাদারদের চুক্তিতে উল্লেখ করা বাঞ্ছনীয় করা দরকার।