লোডশেডিংয়ের কারণে নগরীতে বেড়েছে পানির সংকট। বিদ্যুতের লোডশেডিং বাড়ায় উৎপাদন কমে পানির সংকটে পড়েছেন নগরীর অন্তত ৩৫ এলাকার মানুষ। এইসব এলাকায় অন্তত ১২ লাখ মানুষ পানির সংকটে পড়েছেন।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গত মঙ্গলবার (৬ জুন) আটবার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করেছে। এভাবে লোডশেডিংয়ের কারণে দিনে চার থেকে পাঁচ কোটি লিটার পানি উৎপাদন কমে গেছে। প্রতিটি পরিশোধনাগার ও বুস্টার স্টেশনে (পানি জমা রাখার স্থান) জেনারেটর থাকার পরও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হচ্ছে। তার ওপর শেওলার কারণে প্রায় দুই কোটি লিটার পানি উৎপাদন কম হচ্ছে এক মাস ধরে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র জানায় চট্টগ্রামে প্রতিদিন গড়ে দেড় হাজার মেগাওয়াট এর চাহিদা থাকলেও জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় গড়ে এক হাজার ১৫০ মেগাওয়াট। ঘাটতি থেকে যাচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন শ মেগাওয়াট । লোডশেডিংয়ের এই প্রভাব পড়েছে ওয়াসার পানি উৎপাদন ও সরবরাহের উপর।
কর্ণফুলী ও হালদা নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে নগরকে চারটি অঞ্চলে (মড) ভাগ করে পানি সরবরাহ করে ওয়াসা। বর্তমানে সংস্থাটির তিনটি পানি শোধনাগার রয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে তিনটি শোধনাগার থেকে আসে ৪৬ কোটি লিটার। এছাড়া বৈদ্যুতিক পাম্পের সাহায্যে ৪৯ টি গভীর নলকূপ থেকে পানি তোলা হয় ৪ কোটি লিটার। কিন্তু উৎপাদনের ৩০ ভাগ অর্থাৎ ১২ কোটি লিটার পানি গ্রাহকের কাছে পৌঁছায় না। সিস্টেম লসের নামে নষ্ট হয়ে যায়।
উৎপাদন চিত্র অনুযায়ী গত বুধবার (৭ জুন) মোট উৎপাদন হয়েছে ৪২ কোটি ৩৯ লাখ লিটার। ঘাটতি প্রায় ৭ কোটি ৬১ লাখ লিটার।
নগরের পানির চাহিদা ৫৫ থেকে ৬০ কোটি লিটার। সিস্টেম লস এর জন্য ৩০ ভাগ পানি বাদ দিয়ে প্রায় ৩০ কোটি লিটার পানি গ্রাহকের কাছে পৌঁছাচ্ছে। অর্থাৎ চাহিদা অনুযায়ী বিশ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী যে ২৫টি এলাকায় আগে পানির সংকট ছিল তার সাথে আরো অন্তত নতুন করে দশটি এলাকা যুক্ত হয়েছে। এ ধরনের সমস্যা মোকাবেলায় ওয়াসার বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা রাখা উচিত।
ওয়াসার এক বা দুই মেগাওয়াটের নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকা উচিত। এছাড়া বিদ্যুৎ বিতরণে জরুরি পানি সরবরাহ সেবা, চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রাখা দরকার।
নগরে পানির সংকট
ওয়াসার নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র থাকা দরকার