চট্টগ্রামের গুরুত্ব বিবেচনা করে করোনা রোগীদের জন্য ঢাকার ন্যায় একটি পূর্ণাঙ্গ কোভিড হাসপাতাল চালু করার জন্য বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
তিনি আজ ১৩ জুন (শনিবার) সংগঠনের কর্মপন্থা নির্ধারণী সভায় এ মন্তব্য করেন।
এ সময় সুজন বলেন, প্রাচ্যের রাণী খ্যাত চট্টগ্রাম দ্রুত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হচ্ছে। শত অনুনয়-বিনয়ের পরও রোগী ভর্তি করছে না বেসরকারি হাসপাতালগুলো। মুমূর্ষু রোগী নিয়ে অসহায় স্বজনরা ছুটছেন এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে। এক পর্যায়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন রোগী। অথচ তারা একটু মানবিক হলেই অনেকগুলো তাজা প্রাণ বেঁচে যেতো অনায়াসেই। তাই আর কালবিলম্ব না করে আপনারা একটু মানবিক হোন। করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে অদৃশ্য কারণে পিছনে হাঁটতে শুরু করে বেসরকারি হাসপাতালগুলো।
তিনি বলেন, আমরা হেলায় ফেলায় অনেক সময় নষ্ট করেছি, অনেক অমূল্য প্রাণও হারিয়েছি। তাই মানুষের জীবন মৃত্যুর এ সন্ধিক্ষণে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি বেসরকারি হাসপাতালকে শুধুমাত্র করোনা রোগীদের চিকিৎসায় উপযোগী করে গড়ে তোলা দরকার। সম্প্রতি চিকিৎসাসেবা না পেয়ে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রামবাসীর মনে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে। যে কোন সময় সে ক্ষোভ থেকে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হতে পারে। তাই নগরবাসীর আস্থা অর্জন করতে হলে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা চিকিৎসাসহ নিয়মিত চিকিৎসা প্রদানের কোনো বিকল্প নেই।
তিনি মা ও শিশু হাসপাতালকে পূর্ণাঙ্গ করোনা হাসপাতালে রূপান্তর করার জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতালকেও করোনা চিকিৎসার উপযোগী করে গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এছাড়া ইপিজেডসমূহে আইসোলেশন সেন্টার এবং করোনা নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম দ্রুততার সাথে শুরু করার অনুরোধ জানান।
তাছাড়া সম্প্রতি সামান্য বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় জলবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। তাই করোনার পাশাপাশি জলাবদ্ধতাকেও অধিকতর গুরুত্ব দানের আহ্বান জানান তিনি।
নগরীতে মশক নিধন কার্যক্রমও স্থিমিত হয়ে গিয়েছে বলে মত প্রকাশ করেন সুজন বলেন, বর্ষা আসতে না আসতেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। মশক নিধন কার্যক্রমকেও অধিকতর গুরুত্ব দানের জন্য চসিক মেয়রের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে করোনাকেন্দ্রিক মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। জনবসতিপূর্ণ এই দেশে করোনা ভাইরাস সক্রিয়ভাবে ছড়িয়ে পড়লে তা হবে মারাত্মক রকমের দুর্যোগ। আর এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকির ক্ষেত্রে মেডিক্যাল বর্জ্যরে অব্যবস্থাপনাই হবে সবচেয়ে বড় কারণ। হাসপাতাল, ক্লিনিক, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ইত্যাদিকে মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি সঠিকভাবে মেনে চলতে হবে।
এছাড়া করোনাকালীন সময়ে এনজিওগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। এনজিওকে আগামী তিন মাস পর্যন্ত সকল প্রকার সুদ এবং ঋণের কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।
সংগঠনের সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেনের সভাপতিত্বে এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রহমান মিয়া, নিজাম উদ্দিন, নূরুল কবির, মোরশেদ আলম, মো. শাহজাহান, হাফেজ মো. ওকারউদ্দিন, শেখ মামুনুর রশীদ, শিশির কান্তি বল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. বাবলু, জমির উদ্দিন মাসুদ, মো. ওয়াসিম, উৎপল দত্ত প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি
Uncategorized