নিজস্ব প্রতিবেদক
নোয়াখালীতে এক গৃহবধূ নির্যাতনসহ সারা দেশে ধর্ষণ ও নিপীড়নের ঘটনায় বিচারের দাবিতে গতকাল দিনভর নগরীতে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠন ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নগরীর জামাল খান থেকে চেরাগী পাহাড় মোড় সড়কটি বিক্ষোভকারীদের মানববন্ধন ও মিছিলে উত্তাল হয়ে উঠে।
বিক্ষোভকারীরা ধর্ষণবিরোধী প্লেকার্ড, পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভকারীরা ‘ধর্ষকদের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘মানুষ তুমি চুপ কেন?’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’ বলে সেøাগান দিতে থাকেন।
নোয়াখালীতে এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধভাবে বিবস্ত্র করে মুখম-লে লাথি মারাসহ নির্যাতনের একটি ভিডিও রোববার ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ঘটনাটি ঘটেছে এক মাস আগে। ফেসবুকে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে সারা দেশ। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনেরা ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ ধরনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় আটক আসামিদের দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি তুলেছেন তারা।
গতকাল বিকেলে চেরাগী পাহাড় মোড়ে প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও প্রেস ক্লাবের সামনে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এ ঘটনার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানান। তারা সারা দেশে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির জন্য সরকারকে দায়ী করেন।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সিলেটের এমসি কলেজ থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ পর্যন্ত বেশিরভাগ মামলায় ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা জড়িত।
চেরাগী পাহাড় মোড়ে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নারী ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সেটির বিচার হয়নি। দীর্ঘদিনের বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে এই রাষ্ট্রে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির কোনো বিচার হয় না।
প্রগতিশীল ছাত্রজোটের জেলা সমন্বয়ক ও ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অ্যানি সেন বলেন, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। ক্ষমতার অপব্যবহার করে এভাবে নারীর ওপর নির্যাতন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
সারা দেশের এমন কোনো গ্রাম নেই যেখানে কোনো ধর্ষকের বিচরণ নেই। অথচ ধর্ষকদের বিচার হয় না। তারা ছাড়া পেয়ে যান।
‘বিশ্বের এমন কোনো দেশ নেই ধর্ষণ হয় না’- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করে এই ছাত্রনেতা বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
সমাবেশে কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল বলেন, সাংস্কৃতিক চর্চার অনুপস্থিতি, রাজনীতির নামে দুর্বৃত্তদের পৃষ্ঠপোষকতা, নারীবিরোধী প্রচারণা এবং মিথ্যার প্রসার ঘটায় নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়ে গেছে।
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নেমে আসতে হবে। সরকারকে জানান দিতে হবে এভাবে আর চলতে পারে না। এই সরকারের কাছে মা-বোনেরা সুরক্ষা পাচ্ছে না।