ধর্মপরায়ণ হতে চাই, ধর্মান্ধ হতে চাই না

তারেক সোলেমান সেলিমের নাগরিক শোকসভায় হানিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক»
‘আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে, আমরা এ বাংলাদেশ থেকে ধর্মান্ধ-জঙ্গি গোষ্ঠীর চিরতরে নিপাত করতে চাই। ধর্মের অপব্যাখ্যা করে অন্য সম্প্রদায়ের ধর্ম পালনে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে, যেটা কখনো বরদাস্ত করার মতো নয়। আমরা ধর্মপরায়ণ হতে চাই, ধর্মান্ধ হতে চাই না।’
গতকাল শনিবার বিকেলে কাজীর দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা তারেক সোলেমান সেলিমের স্মরণে শোকসভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এসব কথা বলেন।
দীর্ঘকাল ধরে আমাদের সব সম্প্রদায়ের মধ্যে একটা সম্প্রীতির বন্ধন ছিল, সেটি হারিয়ে গেছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলার শত বছরের ঐতিহ্য। আজকে গ্রামে যাত্রা নেই, নাটক নেই, পালাগান নেই, জারিসারি, ভাটিয়ালি, পুঁথিগান এগুলো উঠে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে সব। এখন সমাজের মধ্যে তার বদলে জায়গা করে নিয়েছে ওয়াজ মাহফিলের নামে বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ে ধর্মকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। মা-বোনদের উপর নির্যাতন করা হয়েছিল। বর্তমানেও ধর্মের অপব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার মধ্যদিয়ে পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা ক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছিলেন। এই স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। জিয়াউর রহমান যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। সম্প্রতি এ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা তারেক সোলেমান সেলিমের এ শোকসভায় আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে, আমরা এ বাংলাদেশ থেকে ধর্মান্ধ-জঙ্গি গোষ্ঠীর চিরতরে নিপাত করতে চাই।’
নেতাকর্মীরাও অনেক সময় ভুল করেন বলেছেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু। প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, এ মৌলবাদকে প্রতিহত করতে হবে। এ অসাম্প্রদায়িক দেশের নাগরিক সম্প্রীতি আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। তারেক সোলেমান সেলিম কেমন ব্যক্তি ছিলেন তা ব্যাখ্যা করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি না। কেননা তার মৃত্যুর এতোদিন পরে তার স্মরণে আয়োজিত এ শোকসভায় এতো মানুষ এখানে ভিড় করেছে। তার রাজনৈতিক জীবন সফল ছিলো বলেই তিনি পরপর চারবার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এতেই বোঝা যায়, তৃণমূল পর্যায়ে তার জনপ্রিয়তা কেমন ছিলো।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আলকরণ ওয়ার্ডের ৪ বারের নির্বাচিত সাবেক কাউন্সিলর ও প্রয়াত আওয়ামী লীগের নেতা তারেক সোলেমান সেলিমের স্মরণে নাগরিক শোকসভা কমিটির সদস্যসচিব জামশেদুল আলম চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ ছালাম, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সিডিএ চেয়ারম্যান জহুরুল আলম দোভাষ, সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুচ ছালামসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।