নিজস্ব প্রতিবেদক »
দেশে বার্ন চিকিৎসা সম্প্রসারণে সমন্বয়কের দায়িত্ব পাওয়া ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ‘গোঁয়াছি বাগানে গড়ে উঠবে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের দেড়শো শয্যার বার্ন ইউনিট। সেখানে থাকা শতাধিক স্থাপনা সরিয়ে দ্রুত জায়গা খালি দেখতে চান চীনা প্রতিনিধি দল। যাতে করে তারা দ্রুত কাজ শুরু করতে পারে।’ গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টায় গোঁয়াছি বাগান পরিদর্শনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রকল্পের কাজে এসেছি। সম্পূর্ণ চীনের সহযোগিতায় প্রকল্পের কাজ শুরু এবং শেষ হবে। তারা খুব কম সময়ের জন্য বাংলাদেশে এসেছেন। তাই দ্রুত কাজ শুরু করতে চান। হাসপাতালটি হলে পোড়া রোগীরা অত্যাধুনিক চিকিৎসাসেবা পাবেন। আর ঢাকা গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হবে না। আমরা এখান থেকে আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে ৯ মার্চ মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলবো। সেই বৈঠকে রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত থাকবেন। সেখানে আমাদের চূড়ান্ত একটা চুক্তি সই হবে। পরে আরও একটি বৈদেশিক চুক্তি হবে। তারপরই কাজ শুরু হবে।
জনবল বাড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তার জন্য চিন্তার দরকার নেই। ঢাকা থেকে যারা পাশ করে বের হচ্ছে তাদের চট্টগ্রাম পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। তারা এখানে চিকিৎসা সেবা দেবেন।’
এ সময় চীনা প্রতিনিধি দলের এক সদস্য বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে। চট্টগ্রামে রয়েছে চীনাদের অনেক পোশাক কারখানা। আমরা চাই, এখানকার অগ্নিদগ্ধ রোগীরা যেন অত্যাধুনিক সেবা পায়। তার জন্য আমাদের এই প্রকল্প। এখানে থাকবে ১৫০ শয্যা, ২০টি আইসিইউ, শিশুদের জন্য ৫টি আইসিইউ, ২৫টি এইচডিইউ, অত্যাধুনিক ২টি অপারেশন থিয়েটার।’
গোঁয়াছি বাগান এলাকার স্থাপনা কবে নাগাদ সরানো হবে এ প্রসঙ্গে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘সরকারি আইন অনুযায়ী যা করার জেলা প্রসাশন- অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গুরুত্ব সহকারে দেখবেন। চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ আধুনিক বার্ন ইউনিট হওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। এটা চীন এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে আসছে। তার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করা আমাদের দায়িত্ব। তারাও দ্রুত কাজ শুরু করতে চাই। আমরা তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
জানা গেছে, গোঁয়াছি বাগানের প্রায় এক একর জমিতে গড়ে উঠবে প্রকল্পটি। প্রকল্পের বাজেট ১৮০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। সেখানে তিনটি রাস্তা বানানো হবে। যাতে সহজে রোগীদের আনা-নেওয়া করা যায়। চট্টেশ^রী রোডের দিক থেকে একটি রাস্তা হবে। সেটি হবে বার্ন হাসপাতালের প্রধান রাস্তা। চমেক হাসপাতালের পেছনে ছাত্র হোস্টেলের দিক থেকে আসবে আরও একটি রাস্তা। সর্বশেষ রাস্তাটি হবে মিজান হোস্টেলের দিক দিয়ে। সেখানে মাঝখানে পাহাড় থাকায় তা ঘুরিয়ে ওয়ার সিমেট্রি হয়ে আনা হবে। প্রকল্পটিতে ১৫০ টি শয্যা থাকবে। তার মধ্যে ২০টি আইসিইউ, শিশুদের জন্য ৫টি আইসিইউ, এইচডিইউ ২৫টি, অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার করা হবে ২টি।
চীনাদের পক্ষ থেকে একটি পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে তা পরিবর্তন করার তেমন সুযোগ নেই। তবে হাসপাতালের পক্ষ থেকে ভবনটিতে বেড এবং বাথরুম পূর্ব-পশ্চিমে রাখা অর্থাৎ বিল্ডিং কোড মানার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। যন্ত্রপাতির জন্য একটি লিস্ট দেওয়া হয়েছে। আবর্জনা সরাতে ওয়েস্ট ডিজপোজ, রান্নাঘর, লন্ড্রি, ক্যান্টিন করার কথা বলা হয়েছে।
একই সাথে গোঁয়াছিতে আলাদা একটি ট্রমা সেন্টার করার জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। যেখানে আঘাতপ্রাপ্ত, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।