দেড় হাজার একর জমির আমন চাষাবাদ অনিশ্চিত

মিরসরাইয়ে জলাবদ্ধতার কারণে ডুবে আছে ফসলি জমি-সুপ্রভাত

মিরসরাইয়ে দুই ছরার মুখে বাঁধ ও স্থাপনা তৈরি

 

রাজু কুমার দে, মিরসরাই::

মিরসরাইয়ে ছরার মুখে বাঁধ ও স্থাপনা নির্মাণ করায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতার কারণে প্রায় দেড় হাজার একর জমিতে আমন চাষাবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। খইয়াছড়া ইউনিয়নের দুইটি ছড়া মুখে বাঁধ ও স্থাপনা তৈরি করায় এমন অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। চাষাবাদ অনিশ্চিয়তার কারণে আমন বীজতলা তৈরির সময় চললেও খইয়াছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম পোলমোগরা, দুয়ারম্ন, মায়ানী, মসজিদিয়া এলাকায় কৃষকরা বীজতলা তৈরি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দে রয়েছে। ছড়ার মুখ বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে খইয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নন্বর ওয়ার্ডের সদস্য আহম্মদ আলী চৌধুরী মোসলিম গত রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

ইউপি সদস্য আহম্মেদ আলী চৌধুরী জানান, পশ্চিম পোলমোগরা এলাকার পশ্চিম বিল নামে পরিচিত বিলে প্রায় এক হাজার একর তিন ফসলি কৃষি জমি রয়েছে। বর্ষায় ওই বিলের পানিগুলো বড়তাকিয়া-আবুতোরাব সড়কের পাশের মাতাইয়া ছড়া হয়ে সাহেরখালী খাল দিয়ে নিষ্কাশন হতো। কিন’ পশ্চিম পোলমোরগা বিল সংলগ্ন মাতাইয়া ছড়ার মুখে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না রেখে আনোয়ার হোসেন মাস্টার বাড়ি তৈরি ও পুকুর খনন করায় এখন আর বিলের পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে বিলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় শতশত কৃষক চাষাবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছে। গত দুই তিন বছর ওই বিলের প্রায় এক হাজার একর জমি অনাবাদি পড়ে আছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয় ভাবে অনেক চেষ্টা করা হলেও কোন উপকার হয়নি। তাই এখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রম্নহুল আমিন বরাবরে লিখিত ভাবে একটি অভিযোগ দিয়েছি।

স্থানীয় কৃষক সৈয়দ আহম্মদ, সাহাব মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে বিলে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন হওয়ার নিশ্চয়তা না পাওয়ায় কৃষকরা আমন বীজতলা তৈরি করছে না। বিলের মধ্যে জলাবদ্ধতা, ঘাস আর জোঁকে ভরে উঠেছে। এবারও চাষাবাদ করা হবে বলে মনে হয়না। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে আসন্ন আমন চাষাবাদের সুবিধা করে দিতে তারা প্রশাসনের হসত্মড়্গেপ কামনা করেন।

এদিকে ছরার মুখে স্থাপনা নির্মাণ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করায় কৃষকদের মাঝে ড়্গোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বয়োবৃদ্ধ সাবেক মেম্বার জসীম উদ্দিন, তাজুল ইসলাম, নুরনবীসহ একাধিক কৃষক জানান, যুগযুগ ধরে তারা দেখে আসছেন পশ্চিম পোলমোগরা বিলের পানি স্থানীয় কাশেমের বাড়ির সামনে দিয়ে বড়তাকিয়া-আবুতোরাব সড়কের পাশে মাতাইয়া ছড়া দিয়ে সাহেরখালী খালে নিষ্কাশন হতে। এখন ওইসব জায়গা দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে নতুন বাড়ি তৈরি করে কৃষকদের বিপাকে ফেলে দিয়েছে।

অন্যদিকে একই ইউনিয়নের মসজিদিয়া চৌধুরীপাড়া এলাকায় বারমাসি ছড়া মুখ ভরাট করে ভিটা তৈরি করায় প্রায় পাঁচ’শ একর জমির আমন চাষাবাদ নিয়ে কৃষকের মধ্যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় রবিউল হোসেন, নুরনবী, নেপাল, গুরামিয়া জানান, চৌধুরীপাড়া এলাকায় বারমাসি ছড়ার মুখে কয়েক বছর আগে ভিটা তৈরি করায় জলাবদ্ধতায় আমন রোপা নষ্ট হয়ে যায়। এরপরও কৃষক চাষাবাদ চালিয়ে আসছে। কিন’ এবছর ওই ভিটা আরো উচুঁ করার বর্ষার পানি নিষ্কাশন হওয়া নিয়ে কৃষকদের মধ্যে চিন’া দেখা দিয়েছে। ছড়া মুখে থাকা বাঁধ অপসারণ করা না হলে আমন রোপা পঁচে নষ্ট হয়ে যায় আশংকা করছে চাষিরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রম্নহুল আমিন জানান, পোলমোগরা বিলে চাষাবাদ বিঘ্ন হওয়ার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। কোথাও ছড়ার মুখে বাঁধ দিয়ে চাষাবাদের বিঘ্ন করা যাবে না। এবিষয়ে শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।