বিসিএসআইআর’র কর্মশালা
মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে বিসিএসআইআরের গবেষণা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। টেকসই আবিস্কার, মুজিববর্ষের অঙ্গীকার এই প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে গতকাল বুধবার বিসিএসআইআরের সম্নেলনে কক্ষে এ কর্মশালা সম্পন্ন হয়। বিসিএসআইআরের পরিচালক ড. মোহাম্মদ মোস্তফার সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখ। বিসিএসআইআরের সদস্য মোহাম্মদ শওকত আলী, সচিব শাহ আবদুল তারিকসহ স্থানীয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, শিল্প উদ্যোক্তা, শিক্ষাবিদ ও মধু গবেষক উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখ বলেন, দেশের উন্নতির জন্য বিজ্ঞানচর্চার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। দেশ ও জাতির উন্নতির প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে বিজ্ঞান চর্চা। সৃষ্টির আদি থেকে অদ্যবদি বিশ্বের যত আবিষ্কার তার সবই বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলে সম্ভব হয়েছে। এই বুদ্ধিভিত্তিক চর্চাকে সবার মধ্যে বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে।
সেমিনারে বিভিন্ন গবেষণা নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিসিএসআইআরের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাওসার আহম্মেদ। এ সময় মঈনুল আনোয়ার আল্ওয়ান মধু নিয়ে উপস্থিত অংশীজনদের অবহিত করেন। তিনি বলেন, শীতের সময়ে খাঁটি মধু জমে যায়। মধু জমে যাওয়ার কারণ হচ্ছে মধুতে থাকা খনিজ উপাদান। এছাড়াও মধু জমতে বিদ্যমান আদ্রতা উৎস এবং একই সাথে মধুতে গ্লুকোজের পরিমানের উপর নির্ভর করে। যে সকল মধুতে গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি সে মধু শীতের সময় জমে যায়। মৌ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন জানান, মধু একটি প্রাকৃতিক খাদ্য। পৃথিবীতে যত মধু রয়েছে তার প্রায়ই জমে যাওয়ার প্রবনতা রয়েছে। তবে কোনো মধু খুব তাড়াতাড়ি জমে আবার কোনো কোনো মধু জমতে সময় লাগে। মধু জমা নির্ভর করে এতে বিদ্যমান আদ্রতা, তাপমাত্রা ও উৎসের উপর। মধু গবেষক অধ্যাপক আহসানুল হক স্বপন বলেন, মধুতে ফ্রুকটোজ, গ্লুকোজ, সুক্রোজ এবং ম্যালটোজ এ চার ধরনের সুগার থাকে। সরিষার মধুতে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের অনুপাত সমান থাকে বলে জমে যায়। সুন্দরবনের মধুর চেয়ে সরিষার মধুতে বেশি গ্লুকোজ থাকে।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশরাফুল হক বলেন, মধুতে দ্রব্য হিসেবে গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ এবং দ্রাবক হিসেবে থাকে পানি। মধু ১৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় আসলে শীতের সময় জমে যায়।
মধু গবেষক মিজানুর রহমান জানান মধুর মূল উপাদান কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা। মধুতে কার্বোহাইড্রেট থাকে ৭০ ভাগ, ২০ ভাগের মতো পানি এবং ১০ ভাগ অন্যান্য উপাদান। সাধারণ মধুতে গ্লুকোজের ফ্রুকটোজের পরিমাণ বেশি থাকে। সরিষা ফুলের মধুতে গ্লুকোজের উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি পাওয়া যায়।
উপস্থিত অংশীজনের অভিমত করোনাকালীন মধু সাধারণ মানুষ সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে।
এ সময় বাংলাদেশের আনারস কাঁঠাল এবং আঁখের রস বৈজ্ঞানিকভাবে ফ্রিজ-আপ করার প্রস্তাব করা হলে বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখ সম্মতি জানান।
সেমিনারে আরো জানানো হয়, গাওয়া ঘি বিসিএসআইআরের ল্যাবে পরীক্ষা করে বাজারে বিক্রির অনুমোদন দেওয়া উচিত। গাওয়া ঘি’র নামে মানহীন পণ্য বাজারে পাওয়া যায় বলে মন্তব্য করেন উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ। বিজ্ঞপ্তি