দীঘিনালায় হিংসার আগুনে ক্ষতি চার কোটি টাকার ওপরে

বেসরকারিভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা গেলেও সরকারিভাবে নিরুপণ চূড়ান্ত হয়নি

১৯ সেপ্টেম্বর দীঘিনালা উপজেলায় সংঘর্ষের পর ঘরবাড়ি ও দোকানে আগুন দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি »

গত বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালা লারমা স্কয়ারে হানাহানি ও অগ্নি সংযোগের ঘটনায় শতাধিক দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে বেশিরভাগ দোকান পুড়ে গেছে। বাদবাকীগুলো ভাংচুর এবং লুটপাটের শিকার হয়েছে। এই ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী সমিতি এবং সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সরকারিভাবে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

বেসরকারিভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চার কোটি টাকার ওপরে। এই ঘটনায় ১০২টি দোকান পুড়ে গেছে বলে এম এন লারমা স্কয়ার ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এইসব দোকানের মধ্যে পাহাড়ি-বাঙালি উভয় সম্প্রদায়ের রয়েছে।

স্থানীয় সাংবাদিক ও ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য আকতার হোসেন জানান, তার মালিকানাধীন বিসমিল্লাহ বীজ ভান্ডার পুরোটাই পুড়েছে। তার ব্যাংক ও এনজিও লোন মিলে পনের লক্ষ টাকার বেশি দেনা রয়েছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ী সমীর চাকমা জানান, শতাধিক দোকানের পাশাপাশি তিনটি অটো রিক্শা, ১৬টি মোটর সাইকেলও আগুনে পোড়ানো হয়েছে।

এম এন লারমা স্কয়ার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিপন চাকমা জানান, আগুনে ৭টি পাহাড়ি খাবারের হোটেল, হোমিও দোকান ১টি, ফার্মেসী ১টি, চাউলের দোকান ২টি, মোবাইল দোকান ১টি, বিকাশ রিচার্জ দোকান সহ ডার্চ বাংলা এজেন্ট, মুদি দোকান ২,টি, গ্যাস ও কোক্রারিজ দোকান ১ টি, লেপ তোষকের দোকান ২টি এবং বাকীগুলো চা ও কুলিং কর্নার দোকান।

বোয়ালখালী ইউপি চেয়ারম্যান চয়ন বিকাশ চাকমা জানান, ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ হলেও সরকারিভাবে হয়তো আংশিক পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হতে পারে। কিন্তু এক একটি পরিবার যারা এই ব্যবসার ওপরই নির্ভরশীল; তাঁদের তো এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা কোনদিনই সম্ভব হবে না।

এই বিষয়ে দীঘিনালার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুন উর রশিদ জানান, আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আর ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত উদ্যোগে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে তা উধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। পাহাড়ি-বাঙালি বিভাজন করা হয়নি। শতাধিক দোকান; এরমধ্যে অবকাঠামো, ক্ষুদ্র দোকানি, ভাসমান দোকানি রয়েছেন। কিছু দোকান পুড়েছে আবার কিছু ভাংচুরও রয়েছে। এটি টাকার অঙ্কে কতো হতে পারে তা বলতে আরো একটু সময় লাগবে।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান জানান, সরকারের চার মাননীয় উপদেষ্টা নিজেরাই এসে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। আমরা (প্রশাসন) যেনো নিহত-আহত এবং ক্ষতিগ্রস্ত সবার পাশে সর্বোচ্চ পুনর্বাসন এবং সহযোগিতা করি। সুতরাং এর ব্যত্যয় ঘটবে না।