নিজস্ব প্রতিবেদক »
স্পট: নিউমার্কেট চত্বর
পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট চত্বরে সকাল ১০টায় অবস্থান নেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এ সময় আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেন সরকারি দলীয় যুব ও ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
রোববার (৫ জুলাই) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে নিউমার্কেট সিটি কলেজ এলাকায় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে পুরো এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। এরপর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরাও মিছিল নিয়ে নিউমার্কেট এলাকায় এলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
পাশাপাশি পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে নিউমার্কেট থেকে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীরা। পুলিশি অ্যাকশনে পিছু হটে আমতলের দিকে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। এর কিছুক্ষণ পর আবার নিউমার্কেটের দিকে এগিয়ে গেলে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছুড়ে। সাজোঁয়া যান নিয়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সকাল ১০টা থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। যদিও একই স্থানে আওয়ামী লীগ, তাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
চট্টগ্রামে বিক্ষোভকারী, ছাত্রলীগ–যুবলীগ ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ২৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) দিনের প্রথম ভাগে আনা হয়। সাড়ে ১১টার দিকে চমেক হাসপাতালে আহতরা আসতে থাকেন। তাঁদের বেশির ভাগই গুলিবিদ্ধ।
এর মধ্যে তিনজনের নাম পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন আলাউদ্দিন (২৬), সোহরাব (২২) ও মো. ফারুক (২৫)। এই তিনজনের কেউ ছাত্র নন বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীরা চট্টগ্রাম নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থান নেন।
স্পট: ওয়াসা মোড়
চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট এলাকায় পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ওয়াসা মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ। আজ রোববার বেলা ১টার দিকে আন্দোলনকারীরা ওয়াসা মোড়ে অবস্থান নিতে শুরু করেন।
শিক্ষার্থীসহ আন্দোলনকারীরা ওয়াসা মোড়ে অবস্থান নেওয়ার পর থেকেই নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।
ওয়াসা মোড়ে সিটি করপোরেশনের একটি আবর্জনা পরিবহনের গাড়ির কাচ ভেঙে দেয় আন্দোলনকারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ওয়াসা মোড়ে অবস্থানকালে বেলা দুইটার দিকে পাশের পল্টন রোডে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ২০ থেকে ২৫ জন যুবকের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় দুজন আহত হন।
পল্টন রোড থেকে আবারও মোড়ে ফেরার সময় ওয়াসা ভবনে ইটপাটকেল ছোড়েন আন্দোলনকারীরা। পরে আবারও তাঁরা ওয়াসা মোড়ে অবস্থান নেন। ওয়াসা মোড়ের অদূরে ইস্পাহানি মোড় ও কাজীর দেউড়ি মোড়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নিতে দেখা গেছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদের।
তবে বিক্ষোভকারী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের অবস্থানের মাঝামাঝি স্থানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আন্দোলনকারীরা ওয়াসা মোড় থেকে মিছিল নিয়ে সিডিএ অ্যাভিনিউ হয়ে বহদ্দারহাটের দিকে রওনা হয়।
স্পট: বহদ্দারহাট
আন্দোলনকারীদের মিছিলটি বহদ্দারহাট মোড়ে এসে ভাঙচুর চালায়। এরপরই শুরু হয় সংঘর্ষ। এ সময় বেশ কিছু গুলির শব্দ শোনা যায়।
বহদ্দারহাটে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবনের পাশে আগে থেকেই পুলিশের অবস্থান ছিল। মিছিলের একটি অংশ মেয়রের বাসার দিকে এগিয়ে যায়। এ সময় আশেপাশের দোকানগুলোতে ইটপাটকেল ছুড়ে ভাঙচুর করা হয়।
পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এ সময় বহদ্দারহাট পুকুরপাড় ও ওয়াপদা কলোনি মুখে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়েছিলেন। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা পুলিশ ও নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেন। কিছু সময়ের জন্য আবার বহদ্দারহাট মোড়ে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার পর আন্দোলনকারীরা চলে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।