সুপ্রভাত ডেস্ক
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় শেনজেন স্টাইলের ভিসার প্রস্তাব দিয়েছে থাইল্যান্ড। এই অঞ্চলে পর্যটন শিল্প চাঙ্গা করাই এই প্রস্তাবের লক্ষ্য।
থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন কম্বোডিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার ও ভিয়েতনাম সরকারের কাছে ধারণাটি তুলে ধরেছেন। দেশগুলো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে।
পরিকল্পনার লক্ষ্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাসপোর্ট-মুক্ত ভ্রমণ সুবিধার অনুরূপ একটি অঞ্চল প্রতিষ্ঠা। যা পর্যটকদের ছয়টি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ভিসা-মুক্ত ভ্রমণ সুগম করবে।
উল্লেখিত দেশগুলোর বেশিরভাগ নেতা থাই প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব বা ধারণাটিকে স্বাগত জানিয়েছেন।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় শেনজেন স্টাইলের একটি অঞ্চল প্রতিষ্ঠার চিন্তাভাবনা অবশ্য বহু বছরের। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক সংস্থা আসিয়ান ২০১১ সালে একটি এ ধরনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সদস্য-রাষ্ট্রের পৃথক ভিসা ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পার্থক্যের কারণে সেই প্রচেষ্টা স্থগিত হয়ে যায়।
এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো শেনজেন স্টাইলের পর্যটন ভিসা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে উপসাগরীয় কয়েকটি দেশ। অভিন্ন ভিসার অধীনে সদস্য সব দেশে পর্যটকদের ভ্রমণের সুবিধাদানের লক্ষ্যেই এ একক ভিসা চালুর ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল বা জিসিসিভুক্ত দেশগুলো।
যদি এই ‘শেনজেন স্টাইলে ভিসা’ চালু হয় সে ক্ষেত্রে পর্যটকরা বিশেষ ভিসার আওতায় উপসাগরীয় অঞ্চলের এই ছয় দেশ (সৌদি আরব, আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন ও ওমান) ভ্রমণ করতে পারবেন, আলাদা করে অন্য ভিসার কোনো প্রয়োজন তাদের পড়বে না।
ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিয়ে একটি একীভূত অঞ্চল তৈরি করে সবার যাতায়াত সহজ করা লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে লুক্সেমবার্গের শেনজেন শহরে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির আওতায় সৃষ্টি হয় শেনজেন অঞ্চল ও শেনজেন ভিসা।
ইউরোপের অধিকাংশ এলাকা এই শেনজেন অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। দেশগুলো হলো অস্ট্রিয়া, আইসল্যান্ড, ইতালি, এস্তোনিয়া, গ্রিস, চেক রিপাবলিক, জার্মানি, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, ফ্রান্স, ফিনল্যান্ড, বেলজিয়াম, মাল্টা, লুক্সেমবার্গ, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, স্পেন, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, হাঙ্গেরি ও ক্রোয়েশিয়া।
এই ভিসা নিয়ে ৯০ দিনের জন্য বেড়ানো বা ব্যবসা সংক্রান্ত প্রয়োজনে ইউরোপ ঘুরে আসা যায়। শেনজেন অঞ্চলের জনসংখ্যা প্রায় ৪২ কোটি। আয়তন ৪৩ লাখ ১২ হাজার ৯৯ বর্গকিলোমিটার।
প্রতিদিন প্রায় ১৭ লাখ মানুষ একটি অভ্যন্তরীণ ইউরোপীয় সীমান্ত পেরিয়ে কাজ করার জন্য অন্য দেশে যাতায়াত করে এবং কিছু অঞ্চলে এরা কর্মশক্তির এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত গঠন করে। প্রতিবছর শেনজেন এলাকায় মোট ১৩০ কোটি সীমান্ত পারাপার ঘটে থাকে।
সূত্র: ব্লুমবার্গ